অর্ণব আইচ: কেউ বলছেন ‘প্লেবয়। কেউ বা বলছেন, দারুণ খিলাড়ি। প্রেমিকার বান্ধবীদেরই দারুণ পছন্দ ছিল সাগ্নিক চক্রবর্তীর (Sagnik Chakraborty)। অথচ গত বছর এই সাগ্নিকের পল্লবীর প্রতি প্রেম দেখে অভিভূত হয়েছিলেন বন্ধুরা।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রেমিকা পল্লবী দের (Pallavi Dey) জন্মদিন পালন করতে কলকাতার একটি বিলাসবহুল হোটেলে গিয়েছিলেন সাগ্নিক। বন্ধুরা জানাচ্ছেন, সেখানে অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই প্রেমিকাকে আই ফোন উপহার দিয়েছিলেন সাগ্নিক, যার দাম ৭০ হাজার টাকার কম নয়। উপহারের রেশ এখানেই থেমে থাকেনি। এর পরপরই ফের পার্টি অন্য একটি বিলাসবহুল হোটেলে। এবার সম্পর্কের বর্ষপূর্তির পার্টি। সুন্দর দেখতে একটি কেক কেটেছিলেন দু’জন মিলে। তাঁদের ঘিরে দাঁড়িয়েছিলেন আমন্ত্রিত বন্ধু, বান্ধবীরা। ছিলেন টেলি ইন্ড্রাস্ট্রিরও অনেকে।
কেক কাটার সঙ্গে সঙ্গেই চমক। কেকের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে ঝকঝকে হীরের আংটি। পল্লবী হাত বাড়িয়ে দেন সাগ্নিকের দিকে। এংগেজমেন্ট রিংটি সবার সামনে প্রেমিকা পল্লবীকে পরিয়ে দিয়ে তাঁকে আপন করে নেওয়ার অঙ্গীকার করেন সাগ্নিক। এভাবে দু’জনের সম্পর্কটা এগিয়ে গেলেও সম্প্রতি মাঝখানে পুরনো বান্ধবী ঐন্দ্রিলা এসে পড়েন বলে অভিযোগ তুলেছেন পল্লবীর পরিবারের লোকেরা। এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায়।
কিন্তু সাগ্নিকের জীবনের ইতিহাস বলছে, নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া আর যাই হোক সাগ্নিকের কাছে নতুন কিছু নয়। কারণ, ২০১৩ সাল থেকে সাত বছর সম্পর্ক চালানোর পর বান্ধবী সুকন্যা মান্নাকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নেন সাগ্নিক। কিন্তু রেজিস্ট্রি ফাইনাল হওয়ার আগেই প্রেমিকার বান্ধবী পল্লবীকে দেখে বিশেষ পছন্দ হয়ে যায় সাগ্নিকের। বন্ধুরা বলছেন, তখন মোটেই এক হাতে তালি বাজেনি। দিনের পর দিন যখন সন্দেহ হওয়ায় সুকন্যা জিজ্ঞাসা করেন, সাগ্নিক তাঁরই বান্ধবী পল্লবীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন কিনা। তখন বেমালুম অস্বীকার করে গিয়েছেন সাগ্নিক।
[আরও পড়ুন: ‘বলিউড তারকাদের আমার বাড়িতে পা রাখার যোগ্যতা নেই’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য কঙ্গনার]
শেষ পর্যন্ত যে সুকন্যার সন্দেহটাই সত্যি, তার প্রমাণ মিলেছে। আবার পল্লবীর সঙ্গে সেই এংগেজমেন্ট থেকে বিয়ে হওয়ার মুখে ফের জীবনে কি আসেন ঐন্দ্রিলা? সেই প্রশ্নই তুলছেন বন্ধুরা। প্রশ্ন তুলেছে পুলিশও। কারণ, ঐন্দ্রিলার বিরুদ্ধে পল্লবীর পরিবার খুন ও প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। আবার এই তথ্যও পুলিশের কাছে এসেছে যে, পল্লবীর সঙ্গে প্রথমে সম্পর্ক ছিল রেহান নামে এক যুবকের। সেই সম্পর্ক ভেঙে পল্লবী সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন। এখন সেই রেহানের সঙ্গে নতুন করে ঐন্দ্রিলার ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে, এমন তথ্য এসেছে পুলিশের কাছেও।
পুলিশ প্রশ্ন তুলেছে, পল্লবী যা খরচ করতেন, তার থেকে কম খরচ করতেন না সাগ্নিকও। বিলাসবহুল হোটেলে প্রায়ই খাওয়াদাওয়া, রিসর্টে গিয়ে থাকা থেকে শুরু করে উপহারের বন্যার টাকা আসত কী করে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে গিয়ে হতবাক হয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরাও। কারণ, তদন্ত শুরু করে তাঁরা যা ইঙ্গিত পেয়েছেন, তাতে ভুয়ো কল সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান সাগ্নিক। আর এই ভুয়ো কল সেন্টারের কারবার চালিয়ে অডি গাড়ি কেনা থেকে শুরু করে প্রচুর খরচ করতেন সাগ্নিক। এই তথ্যগুলি পুলিশ যাচাই করছে।
একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পুলিশ পেয়েছে, যেখান থেকে টাকা তুলে খরচ করতেন সাগ্নিক। এই ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি সাগ্নিকের বাবার। ওই যুবকের বাবা বিত্তবান ব্যবসায়ী। মূলত প্রোমোটিংয়ের ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত তিনি। সেই সুবাদে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ কম নয়। তাঁর টাকাই ওই অ্যাকাউন্ট থেকে যে ছেলে খরচ করত, সেই তথ্য পুলিশ জেনেছে। এ ছাড়াও সাগ্নিকের প্রত্যেকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।