সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী রাজু শ্রীবাস্তব। বুধবার দিল্লির এইমসে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন ৫৮ বছর বয়সি এই শিল্পী। গত আগস্ট মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন রাজু। দীর্ঘদিন ধরে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। তবে শেষমেশ প্রাণ রক্ষা হল না হাসির জাদুকরের। রাজু শ্রীবাস্তবের প্রয়াণে টুইটে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ”রাজু শ্রীবাস্তব হাসি দিয়ে আমাদের জীবনকে উজ্জ্বল করে তুলেছিল। এরকম হাসিখুশি মানুষ খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন। শিল্পের মধ্যে দিয়েই অমর হয়ে থাকবেন তিনি। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল।”
রাজু শ্রীবাস্তবের (Raju Srivastav) প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তাঁর কথায়, ”রাজু শ্রীবাস্তবের মৃত্যু শিল্প জগতের অপূরণীয় ক্ষতি।”
একসঙ্গেই কৌতুকশিল্পী হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন সুনীল পাল ও রাজ শ্রীবাস্তব। একসঙ্গে মঞ্চে দেখাও গিয়েছিল তাঁদের। বন্ধু রাজুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করলেন সুনীলও। তাঁর কথায় ভাল বন্ধু হারালাম।
শোকপ্রকাশ করেছেন অভিনেতা অনুপম খের, অজয় দেবগণ, মধুর ভান্ডারকর, জয়া প্রদা, শেখর সুমনের মতো ব্যক্তিত্বরা।
১৯৬৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর কানপুরে জন্ম হয় রাজু শ্রীবাস্তবের। বাবা রমেশচন্দ্র শ্রীবাস্তব ছিলেন কানপুরের প্রখ্যাত কবি। ছেলের নাম তিনি রেখেছিলেন সত্যপ্রকাশ শ্রীবাস্তব। কিন্তু রাজু নামেই সকলে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই চেনা মানুষজনের নকল করতে পারতেন। যে কোনও উপায়ে কাউকে হাসিয়ে দিতে পারতেন। কমেডিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন রাজু। তাঁর কৌতুক শিল্পের বেশ কদর ছিল কানপুুরে। অনেকেই কারণে-অকারণে ডেকে নিতেন। কানপুুরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন রাজু। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য ছিল বলিউড।
[আরও পড়ুন:অশ্লীলতা নয়, নির্মল হাস্যরসই ইউএসপি, রাজুর বিদায়ের পরও থেকে যাবেন গজোধর ভাইয়া]
বলিউডের টানেই মুম্বইয়ে পাড়ি দেন রাজু। আটের দশকের শুরুতে আরব সাগরের তীরে পৌঁছান রাজু। সঙ্গে সঙ্গেই সিনেমায় সুযোগ পাননি। ১৯৮৮ সালে ‘তেজাব’ সিনেমায় ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ সিনেমাতেও ছিলেন। তারপর থেকে একাধিক সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন রাজু। তবে তাঁর কেরামতি ছিল স্টেজে। ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ’ শোয়ের রানার-আপ ছিলেন রাজু। কিন্তু তাঁর হাস্যরসের খ্যাতি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ-চ্যাম্পিয়নস’ শোয়ে ‘দ্য কিং অফ কমেডি’র খেতাব পেয়েছিল। তাঁর ‘গজোদর ভাইয়া’ চরিত্র অত্যন্ত জনপ্রিয়।
সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজু। প্রথমে সমাজবাদী পার্টি তাঁকে ভোটে লড়ার টিকিট দিয়েছিল। কিন্তু তা ফেরত দিয়ে দেন রাজু। স্থানীয় নেতারা সাহায্য করছেন না বলে অভিযোগ ছিল কমেডিয়ানের। পরবর্তীকালে বিজেপিতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানের অঙ্গ ছিলেন তিনি।