সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ প্রয়াত হন কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক বাপি লাহিড়ী। কলকাতায় এসে তাঁর পুত্র বাপ্পা লাহিড়ী অস্থি বিসর্জন করেছেন গঙ্গায়। ভারতীয় সংগীত জগৎ হারিয়েছে এই মহান শিল্পীকে। বাপি লাহিড়ীকে (Bappi Lahiri) হারিয়ে এখনও শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার। তাঁর স্মৃতি আঁকড়ে ধরেই নস্ট্যালজিয়ায় ভেসে চলেছেন তাঁর পরিবার।
সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাপি লাহিড়ীর স্মৃতিমন্থন করতে গিয়ে বাপ্পা জানালেন, ”বাবার জীবনটা একেবারে গল্পময়। তাঁর স্ট্রাগল অনুপ্রেরণা দেওয়ার মতো। তাই বাবার জীবন নিয়ে বায়োপিক করতে চাই। বাবাও জানতেন। বাবা চেয়েছিলেন রণবীর সিং যেন তাঁর চরিত্রে অভিনয় করেন।”
তবে এখানেই শেষ নয়, এই সাক্ষাৎকারে বাপি লাহিড়ীর শেষ ইচ্ছা নিয়েও মুখ খুললেন তাঁর ছেলে বাপ্পা। তাঁর কথায়, ” সংগীত জগতে বাবার অবদান প্রচুর। তবে বাবার একটাই দুঃখ ছিল। এ দেশের সর্বোচ্চ সম্মান তিনি পাননি। বিশেষ করে পদ্মবিভূষণ। তবে বাবা কখনও এসব মুখ ফুটে বলেননি। তবে আমরা বুঝতে পারতাম। শিল্পী হিসেবে একটা খেদ তো ছিলই। যে সব শিল্পী ইতিমধ্যেই পদ্মবিভূষণ পেয়েছেন, বাবা তাঁদের তুলনায় কোনও অংশেই কম ছিলেন না।”
[আরও পড়ুন: মাত্র ২৪ বছর বয়সে মৃত্যু ‘গাল্লি বয়’ খ্যাত ব়্যাপারের, শোকস্তব্ধ রণবীর সিং, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদীরা]
গত শতকের আটের দশকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জগতে পপ-ডিস্কো গানের যে জোয়ার এসেছিল তাঁর অন্যতম পুরোধা ছিলেন বাপি। ‘ডিস্কো ডান্সার’ (১৯৮২), ‘ডান্স ডান্স’ (১৯৮৭) হয়ে একের পর এক ছবিতে করা তাঁর সুর সেই সময়ের তরুণ প্রজন্মকে আন্দোলিত করেছিল। সেই সময়ের এক প্রতিনিধি হিসেবে বাপি লাহিড়ীর অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সমসাময়িক সংগীতেও যে তিনি সমান দক্ষ, তা নতুন করে প্রমাণিত হয়েছিল ২০১১ সালে ‘ডার্টি পিকচার’ ছবিতে ‘উ লা লা’ গানের মধ্যে দিয়ে। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বুঁদ করে রাখার কোন জাদুক্ষমতায় বলীয়ান তিনি। তবে কেবল পপ বা ডিস্কো নয়, নরম রোম্যান্টিক গানেও যে তিনি অনন্য তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল কেরিয়ারের শুরুতে ‘চলতে চলতে’ (১৯৭৬) ছবিতে বাপির করা সুর থেকেই।
একেবারে ছোটবেলা থেকেই সাংগীতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা। বাবা ও মা দু’জনেই ছিলেন সংগীত জগতের মানুষ। ৩ বছর বয়সে তবলা বাদক হিসেবে কেরিয়ার শুরু। ২০২০ সালে ‘বাগী ৩’ ছবিতে ‘ভাঙ্কাস’ গানটিই ছিল তাঁর শেষ কাজ। মাঝের দীর্ঘ সময়ে সুরকার তো বটেই, কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও যে অবদান তিনি রেখে গেলেন তা অবিস্মরণীয়।