দেবব্রত মণ্ডল, সোনারপুর: ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই। এই দিয়ে প্রয়াত হন মহানায়ক উত্তমকুমার (Uttam Kumar)। সেই স্মৃতি আজও সোনারপুরের গৌতম মুখোপাধ্যায়ের মনে টাটকা। এখনও বুকের ভিতরটা যেন মোচড় দিয়ে ওঠে। যেন তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য আর নেই। আছে শুধু তাঁর স্মৃতি। মহানায়কের সেই স্মৃতি আঁকড়ে ধরেই বেঁচে রয়েছেন সোনারপুরের বৃদ্ধ। তাঁর মূল্যবান সামগ্রী দিয়ে তৈরি করেছেন সংগ্রহশালা। তবে এখন সেগুলি সংরক্ষণ করা বড় দায়। বয়স সত্তর ছুঁই ছুঁই। এত জিনিসের দেখভাল এখন সেভাবে করে উঠতে পারেন না গৌতমবাবু। তাই কেউ যদি স্বেচ্ছায় এর দায়িত্ব নিতে চান, তাহলে নিশ্চিন্ত হবেন সোনারপুরের বাসিন্দা।
ছোটবেলা থেকেই উত্তমকুমারের ফ্যান ছিলেন গৌতম মুখোপাধ্যায়। স্কুল থেকে পালিয়ে বহুবার মহানায়কের ছবি দেখতে ছুটেছেন বিভিন্ন সিনেমা হলে। আর উত্তমকুমারকে নিয়েই গড়ে তুলেছেন নিজের সংগ্রহশালা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের বৈকুণ্ঠপুর লেনে তার এই সংগ্রহশালায় কী নেই! উত্তমকুমারকে নিয়ে ডাকটিকিট, সুভেনিয়ার থেকে পুরনো হিন্দি ও বাংলা সিনেমার সমস্ত পোস্টার, হ্যান্ডবিল, বুকলেট। উত্তমকুমারের বিভিন্ন গানের সিডি থেকে শুরু করে তৎকালীন রেডিওতে পরিবেশিত মহালয়া, সবই আছে গৌতমবাবু একক সংগ্রহে। উত্তমকুমারের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে সমস্ত কিছু নিজে হাতে ঝেড়ে মুছে আবার গুছিয়ে রাখেন সংগ্রহশালাতে।
তবে এই বয়সে এসে এতকিছুর দেখভাল করে ওঠা আর সম্ভব হচ্ছে না গৌতমবাবুর পক্ষে। তিনি বলেন, “মহানায়ক উত্তমকুমারকে নিয়ে তৈরি হওয়া প্রায় সমস্ত সিনেমার সিডি, বিভিন্ন গানের ক্যাসেট, বই, বিভিন্ন ম্যাগাজিন, পত্রপত্রিকা প্রায় সবই আমার সংগ্রহে আছে। অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সব মূল্যবান সংগ্রহ। যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি এগুলো সংগ্রহ করতে চান বা রাজ্য সরকার যদি এগুলো নিয়ে কোনও সংগ্রহশালা বানান তাহলে আমার এই কষ্ট সার্থক হবে।”