shono
Advertisement
Thakurpukur Accident

'দিনরাতের তফাত বুঝিনি', ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে 'মদ্যপ' ভিক্টোর কথা শুনে অবাক লালবাজারের গোয়েন্দারা

ঠাকুরপুকুরের জনবহুল বাজারে দুর্ঘটনার মৃত্যুতদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
Published By: Sandipta BhanjaPosted: 09:17 AM Apr 12, 2025Updated: 09:17 AM Apr 12, 2025

স্টাফ রিপোর্টার: "দিন আর রাতের তফাত বুঝতে পারিনি। মদ্যপ অবস্থায় দিনের বাজারের রাস্তা রাতের মতোই ফাঁকা মনে করে ঢুকে পড়েছিলাম বাজারে", পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টোর এই বক্তব্য শুনে হতবাক লালবাজারের গোয়েন্দারা। অতিরিক্ত মদ্যপানের পরও হাতে স্টিয়ারিং ছিল সিদ্ধান্তর। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে পর পর পথচারীকে ধাক্কা দেন সিদ্ধান্ত। মৃত্যু হয় এক পথচারীর। ট্রাফিক বিভাগের হাত থেকে এই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলার তদন্তভার নিয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। সিদ্ধান্তর দুই সহযাত্রী অভিনেত্রী ঋ সেনগুপ্ত ও কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া বসুকে লালবাজারের গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এ ছাড়াও তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছিল? তা জানার চেষ্টা করছেন।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে, ডানদিক, বাঁদিকে চলা এলোপাথাড়ি গাড়িটি একটি স্কুটারকেও ধাক্কা দেয়। স্কুটারটি গাড়ির তলায় চলে গেলে গাড়িটি লক হয়ে যায়। সবাই ছুটে আসেন। জনতা বিক্ষোভ শুরু করে। এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ ও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, সিদ্ধান্তই চালকের আসনে ছিল। ঠাকুরপুকুর বাজার অত্যন্ত জনবহুল। সেখানে কোনও গাড়ি নিয়ে ঢোকাই যায় না। সেখানে অন্তত ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে সিদ্ধান্ত কেন ঢুকে পড়ল সেই জনবহুল বাজারে? তা নিয়েই গোয়েন্দারা সিদ্ধান্তকে প্রশ্ন করেন। কারণ, একজন গাড়ির চালক হিসাবে সিদ্ধান্তর জানা উচিত যে, এভাবে জনবহুল এলাকায় গাড়ি চালালে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হতে পারে কারও। পুলিশ সূত্রের খবর, সিদ্ধান্ত গোয়েন্দাদের কাছে দাবি করে যে, ঠাকুরপুকুর বাজারের রাস্তাটি তার কাছে খুবই পরিচিত। গভীর রাতে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে প্রায়ই যাতায়াত করে সে। কখনও রাত দুটো, আবার রাত তিনটের পরও সে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু অত রাতে ঠাকুরপুকুর বাজার আর জনবহুল থাকে না। সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা থাকে সম্পূর্ণ ফাঁকা। তাই শর্টকাট করার জন্য ওই বাজারের রাস্তাই ব্যবহার করে সে। তখন ওই বাজারের মধ্যে দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগেও সে গাড়ি চালিয়েছে। কিন্তু ফাঁকা রাস্তায় কোনও সমস্যা হয়নি।

এর পর সিদ্ধান্ত পুলিশকে জানায়, প্রথমে দক্ষিণ কলকাতার একটি মলের পানশালায় মদ্যপান করেছিল সে। সেখান থেকে এক অভিনেত্রীর বাড়িতে গিয়ে ফের মদ্যপান করেছিল। মদের পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে, সিদ্ধান্তর কোনও হুঁশ ছিল না। অভিনেত্রী ঋ সেনগুপ্ত চালকের আসন তথা তার পাশেই বসে ছিলেন। আর পিছনের সিটে ছিলেন কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া বসু। দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন ওই দুই মহিলা সহযাত্রীও নেশায় বুঁদ হয়ে ঘুমাচ্ছিলেন গাড়িতে। পুলিশের কাছে পরিচালক সিদ্ধান্তের দাবি, প্রচণ্ড নেশা করে গাড়ি চালাতে চালাতে তার চোখও জুড়িয়ে আসছিল। অভ্যাসের বশেই সে প্রায় ঘুমন্ত অবস্থায় ঢুকে পড়ে ঠাকুরপুকুর বাজারে। তখন যে দিন, রাত নয়, তা তার খেয়ালই ছিল না। দিন আর রাতের তফাতই সে বুঝতে পারেনি। তাই রাতের বেলায় যেমন অতিরিক্ত গতিতে বাজারের মধ্যে দিয়ে সে গাড়ি চালায়, দিনের বেলায়ও সে একই গতিতে ভিতরে ঢুকে পড়ে। এর পরই সে স্টিয়ারিংয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ঘটে যায় দুর্ঘটনা। এই ব্যাপারে আরও তথ্য জানতে তাকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • "দিনরাতের তফাত বুঝতে পারিনি। মদ্যপ অবস্থায় দিনের বাজারের রাস্তা রাতের মতোই ফাঁকা মনে করে ঢুকে পড়েছিলাম বাজারে", ভিক্টোর এই বক্তব্য শুনে হতবাক লালবাজারের গোয়েন্দারা।
  • ট্রাফিক বিভাগের হাত থেকে এই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলার তদন্তভার নিয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
Advertisement