shono
Advertisement

উৎপল দত্তর ‘ফেরারি ফৌজ’ নাটককে মঞ্চে আনল নৈহাটি নাট্য সমন্বয়, কেমন হল?

ভাল লেগেছে দেবশংকর হালদার ও পার্থ ভৌমিকের অভিনয়।
Posted: 04:39 PM Feb 27, 2024Updated: 04:46 PM Feb 27, 2024

ইন্দ্রনীল শুক্লা: ভারতের স্বাধীনতা কেবলমাত্র অহিংস আন্দোলনে আসেনি। রাসবিহারী বসু এবং পরে সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে বিরাট বড় মাপের সশস্ত্র লড়াই ছাড়াও পরাধীন ভারতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই নানা সময়ে ঘটে গিয়েছে গেরিলা হামলা। বিশেষ করে অবিভক্ত বাংলায় বার বারই জেগে উঠেছে বিপ্লবের আগুন। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, হত্যা করে ব্রিটিশ শাসকদের ঘুম কেড়ে নেন বিপ্লবীরা। আর সেই কারণেই তো বাধ্য হয়ে একসময়ে বঙ্গ-ভঙ্গ এবং রাজধানী দিল্লিতে স্থানান্তর করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয়েছিল বিলেতের শাসকদের। এই যে অশান্ত সময়টা, সেটাই ধরা পড়েছিল উৎপল দত্ত রচিত ‘ফেরারি ফৌজ’ নাটকে। সেই নাটকটাই নতুন করে মঞ্চে এনেছে নৈহাটি নাট্য সমন্বয়। উৎপল দত্তের সেই নাটকটা যে এখনও ঝাঁঝ হারায়নি তা এই প্রযোজনায় প্রমাণিত হয়েছে।

Advertisement

এই নাটকে ছড়িয়ে রয়েছে নানা চরিত্র। শান্তি রায়, অশোক চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় লাহিড়ী, কুমুদ, বিপিন, সিরাজুল, রাধারানি! বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে নাটকের শরীরে। বুঝতে পারা গিয়েছে যে ঠিক কেমন পরিস্থিতির মাঝে দেশকে মুক্ত করতে বাংলার তরুণ-তরুণীরা অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। দেখা গিয়েছে কেমন করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ কখনও প্রকাশ্য, কখনও ছদ্মবেশে রক্তে ভেজা সংগ্রামে ঝাঁপ দিয়েছেন। হাসি মুখে সহ্য করেছেন অকথ্য অত্যাচার, মেনে নিয়েছেন মৃত্যুকে।

[আরও পড়ুন: অক্ষয়-টাইগারের সামনেই ভক্তকে লাঠিচার্জ পুলিশের, নেটপাড়ায় নিন্দার ঝড়]

নাটকের কাহিনির দিকে তাকানো যাক। নাটকটির পটভূমি ভুবনডাঙা। সেখানে ব্রিটিশ অত্যাচারে গ্রামবাসীরা অতিষ্ঠ। প্রকাশ্য দিবালোকে ম্যাজিস্ট্রেট উইলমাটকে খুন করে বিপ্লবী অশোক চট্টোপাধ্যায়। সমাজের মাথারা চিনতে পারে তাকে। তাদের সাহায্য নিয়ে হিতেন দারোগা বিপ্লবীদের ধরতে হন্যে হয়ে খোঁজ চালায়। এদিকে, রাতের অন্ধকারে বাবা, মা, স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসে ধরা পড়ে যায় অশোক। পুলিসের নির্মম অত্যাচারে সে মুখ না খুললেও কৃত্রিমভাবে হিতেন দারোগা তার গায়ে বিশ্বাসঘাতকতার তকমা এঁটে দেয়। ব্যাপারটা এমনই দাঁড়ায় যে বাবা-মা, এমনকী দলের নেতা শান্তি রায়ও তাকে ভুল বোঝে! কিন্তু বিপ্লবীদের খবর তো বার বার ফাঁস হয়েছে! তাহলে আসল বিশ্বাসঘাতক কে? সেই উত্তর খুঁজে চলে নাটকটি।

দেবাশিস রায়ের নির্দেশনা চমৎকার। আত্মপরিচয় গোপন করে থাকা বিপ্লবী নেতার ভূমিকায় দেবশঙ্কর হালদার অবশ্যই ভাল। সিরিয়াসনেস এবং খানিক কমেডির বন্ধনে জ্যোতির্ময় লাহিড়ীর চরিত্রটিকে সুন্দর উপস্থাপন করেছেন পার্থ ভৌমিক। আবার, বিপ্লবী অশোক চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকায় বুদ্ধদেব দাস এবং নিষ্ঠুর তদন্তকারী অফিসার হিতেনের ভূমিকায় পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ও মন কাড়েন। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ভাল লেগেছে সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত, অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবযানী সিংহ, দেবাশিস সরকার প্রমুখকে। নাটকে গুরুত্বপূর্ণ সিকোয়েন্সগুলো মঞ্চ, আলো প্রয়োগ করা হয়েছে অত্যন্ত সূক্ষ্মতায়। তাই একটা ইমপ্যাক্ট থেকে যায় মনে!

[আরও পড়ুন: সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে খুন করল স্বামী! হাড়হিম করা সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement