shono
Advertisement

বড়পর্দায় জুটি বেঁধে মন জিতলেন বিক্রম-শোলাঙ্কি, প্রেমে ভরা ছবি ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’

ছবি জুড়ে যত্ন আর ভালবাসার উত্তাপ।
Posted: 02:10 PM Jun 30, 2023Updated: 03:42 PM Jun 30, 2023

শম্পালী মৌলিক: এই শহরকে ভালবেসে, বন্ধুত্বকে ভালবেসে, প্রেম ভালবেসে দিনলিপি লেখা যেমন হয়, পাতাগুলো হলদে হয়ে গেলেও সময়টা পুরনো হয় না। শহরের আনাচ-কানাচে জল-হাওয়া-রোদ্দুরে সেই স্মৃতির ঘূর্ণিপাক চলতেই থাকে। ঠিক তেমন মনকেমন-করা একটা ছবি বানিয়েছেন পরিচালক অরিত্র সেন। এ ছবি প্রাণের অন্তস্তলে নাড়া দেয়। অরিত্রর আগের ছবির প্রেক্ষাপট ছিল লন্ডন, আর এ ছবির প্রেক্ষিত কলকাতা। তবে প্রেম থেকে এতটুকু বিচ্য়ুত হননি পরিচালক আগের মতোই। তাঁর কাহিনিকে সফল রূপ দিতে বিক্রম চট্টোপাধ‌্যায় আর শোলাঙ্কি রায়ের জুটি নিশ্চিতভাবে অবিকল্প। এত স্বতঃস্ফূর্ত তাঁদের পারস্পরিক বোঝাপড়া তথা অ‌্যাকশন-রিঅ‌্যাকশনের ওঠা-নামা পর্দায় দেখতে দুরন্ত লাগে। তাঁদের জুটি দেখতে দেখতে অনেকেই ফিরে যাবেন নিজের কলেজবেলায়। নস্টালজিয়ার গলিপথে সটান দাঁড় করিয়ে দেয় ‘শহরের উষ্ণতম দিনে’। যে পথ জুড়ে আছে ডেকার্স লেন, সুফিয়া, ময়দান, নিউমার্কেট। ছবিজুড়ে যত্ন আর ভালবাসার উত্তাপ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্সি যেন ‘মহব্বতে’র ‘গুরুকূল’! প্রেমে ফরমান, সৃজিতের প্রশ্ন ‘ধাপার মাঠে যাবে?’]

গল্পের খানিক আন্দাজ দেওয়া যাক, ঋতবান (বিক্রম) পিএইচডি স্কলার তবে তার আসল প‌্যাশন ফোটোগ্রাফি। প্রায় পাঁচ বছর বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফিরেছে। পুরনো বন্ধুত্ব, সম্পর্ক, ভালবাসা সে নতুন করে খুঁজছে, ফেরত পাওয়ার আশায়। সে ভালবাসে অনিন্দিতাকে (শোলাঙ্কি)। অনিন্দিতা এখন রেডিও জকি। এক সময় তার ইচ্ছে ছিল বিদেশে পড়তে যাওয়ার। শহরের প্রতি টান, বাবার প্রতি টান তাকে দেশে আটকে দিয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তার বিয়ে ঠিক হয়ে রয়েছে সিদ্ধার্থর (অনিন্দ্য) সঙ্গে। ঋতবান শহরে ফেরে এমন সময়ে। একে একে দেখা হয় পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে। রেহান এখন সফল ব‌্যবসায়ী, সায়ক সারাজীবন প্রতিষ্ঠিত গায়ক হতে চেয়েছে, রয়েছে বিশ্বস্ত বান্ধবী ক্রিস্টিন– যে যার জীবনযুদ্ধে লড়ছে তখন। সম্পর্কের সেতার অতীতের মতো সুর তুলবে কি না ছবিতে দেখাই ভাল। পাঁচজনের বন্ধুত্ব জমাটি লেগেছে, ভিন্ন আর্থসামাজিক অবস্থান থেকে উঠে এলেও মনের যোগ ছেঁড়েনি এখনও– ছবি এগোলেই স্পষ্ট হয়। ভাল লাগে ঋতবান-অনিন্দিতার দ্বিধাদ্বন্দ্ব মেশানো রিইউনিয়নের মুহূর্তগুলো। আদর-অভিমানের হাইভোল্টেজ তরঙ্গে ভাসতে ভাল লাগবে দর্শকের। ছবির ক্লাইম‌্যাক্সের মোচড় মনে দাগ কাটে।

নবারুণ বোস ও আকাশ চক্রবর্তীর মিউজিক বেশ ভালভাবে ছবির মেজাজ ধরতে পেরেছে। সেরা লগ্নজিতা চক্রবর্তীর ‘আমার শহর যেন একটা টাইম মেশিন’ গানটা। ভাল লাগে অর্ণব দাস, তিমির বিশ্বাসের গানও। সুন্দর সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন বাসুদেব চক্রবর্তী। কোনও কোনও সংলাপ একটু বেশি কাব্যিক, যা কিছুটা আরোপিত মনে হয়েছে। তবে দেবপ্রিয় মুখোপাধ‌্যায়ের মুখে ‘বন্ধুত্ব কামস উইথ অ‌্যান এক্সপায়ারি ডেট’ সংলাপটা শুনলে বুকে ধাক্কা লাগে। অন‌্য বন্ধুদের চরিত্রে রাহুলদেব বোস, অনামিকা চক্রবর্তীও সাবলীল অভিনয় করেছেন। অনিন্দিতার আত্মকেন্দ্রিক উচ্চাকাঙ্খী বয়ফ্রেন্ডের চরিত্র যতটা অসহ‌্য লাগার দরকার ছিল ঠিক সেটাই তুলে এনেছেন অনিন্দ‌্য চট্টোপাধ‌্যায় তাঁর অভিনয়ে। শোলাঙ্কি কিন্তু বড় পর্দায় দ্বিতীয় কাজে আরও মসৃণ। মনেই হয় না অভিনয় করছেন। বিক্রম চরিত্রের দুটো বয়সেই সাবলীল। তাঁর আর শোলাঙ্কির জুটি বড় পর্দায় প্রথমবারে মন জিতে নিল। শোলাঙ্কির মা-বাবার ভূমিকায় সুদীপা বসু ও দেবেশ রায়চৌধুরি বেশ বিশ্বাসযোগ‌্য। ভাল লাগে রেশমি সেন, সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ‌্যায়কেও ঋতবানের অভিভাবকের ভূমিকায়। স্বল্প পরিসরে বিশেষ চরিত্রে সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ‌্যায় চমকে দিয়েছেন। অনিন্দিতার সহকর্মীর ভূমিকায় রূপসা দাশগুপ্তও ঠিকঠাক। সব মিলিয়ে, যারা ভালবাসে, সম্পর্ক হারিয়ে ফেলেও আবার ফিরে পেতে চায় তারা কানেক্ট করবে ছবিটার সঙ্গে।

[আরও পড়ুন: দীর্ঘ ৩৮ বছর পর পর্দায় অমিতাভ-কমল হাসান দ্বৈরথ, ‘Project K’ নিয়ে বড় আপডেট]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement