অরূপ বসাক, মালবাজার: ডুয়ার্সের জনপদগুলির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী ও ঝোড়াগুলি যেন হয়ে উঠেছে জনপদের ডাস্টবিন। শহর বা জনপদের যাবতীয় জৈব ও অজৈব বর্জ্যপদার্থ জমে নদী বক্ষ হয়ে উঠেছে ডাম্পিং গ্রাউন্ড। রবিবার বিশ্ব নদী দিবসে (World Rivers Day 2021) এ নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ একাধিক পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ও মানুষজন।
মালবাজার শহরের পূর্ব প্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে মাল নদী। শহরের মানুষজনের জন্ম থেকে মৃত্যু যাবতীয় কাজের সাক্ষী এই নদীটি। এহেন নদীর বুকে প্রতিদিন ফেলা হয় জঞ্জাল। হাট, বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা তো বটেই, আশেপাশের বাড়ির লোকজনও জঞ্জাল ফেলে যান।
শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে পাগলা ঝোড়া। ১, ৪, ৫, ৮ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ফেলা জঞ্জালে পাগলা ঝোড়া যেন হয়ে উঠেছে বড় ডাস্টবিন।
[আরও পড়ুন: ২৩০০০ বছর আগে মানুষের পা পড়েছিল আমেরিকায়! ইতিহাসের চেনা হিসেব পালটে দিল নয়া সমীক্ষা ]
নদী ও ঝোড়ার প্রতি এই অবিচারের অন্য ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত শহরের পরিবেশপ্রেমী সংগঠন মাউন্টেন ট্রেকার ফাউন্ডেশনের সম্পাদক স্বরূপ মিত্র। তিনি বলেন, “নদী আমাদের সভ্যতার প্রাণ। নদীর বুকে এভাবে জঞ্জাল ফেললে জল দূষিত হয়। নদীর জল গবাদিপশু-সহ অনেকে বাড়ির কাজে ব্যবহার করেন। অবিলম্বে এসব আবর্জনা সরিয়ে ফেলে নদীবক্ষ সাফ করা উচিত। আমরা ওই এলাকার মানুষদের বোঝাবো যেন নদীর বুকে আবর্জনা না ফেলেন।”
এ প্রসঙ্গে মাল পৌর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সমর কুমার দাস বলেন, “মাল নদী ও পাগলা ঝোড়ার বুকে কেউ কেউ আবর্জনা ফেলে। পৌরসভার পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সেসব সাফাই করা হয়। সামনে উৎসবের আগে সমস্ত সাফাই করা হবে। তাছাড়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জমির সমস্যা মিটতে চলছে। দ্রুত ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়ে যাবে তখন এ সমস্যা থাকবে না। আমরা সমস্ত জঞ্জাল সাফাই করে শহরকে জঞ্জাল মুক্ত করবো।”
এদিকে নদী দিবসে ওদলাবাড়িতে পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসের পক্ষ থেকে আন্দা ঝোড়ার পাশে বসবাসকারীদের বোঝানো হয়, যাতে তাঁরা নদীর বুকে জঞ্জাল না ফেলেন। সংস্থার কো-অর্ডিনেটর নফসর আলি বলেন, “আন্দা ঝোড়ার পাশে কয়েকটি কাবারির দোকান আছে। আমরা তাদের নদীর মধ্যে আবর্জনা না ফেলতে বুঝিয়েছি।”