সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে দশটি আসন চেয়ে দর কষাকষি শুরু করবে কংগ্রেস হাইকমান্ড। ১৪ জানুয়ারি ইম্ফল থেকে শুরু হচ্ছে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। তার পরদিনই কলকাতা যেতে পারেন বাংলার জন্য সদ্যনিযুক্ত পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর। দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম রাজ্য সফরে অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেস বা বাম নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দেখা করার সম্ভাবনা নেই। তিনি আলোচনা করবেন প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গেই। ইতিমধ্যেই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে চিঠি লিখে আসন সমঝোতা সম্পর্কে হাইকমান্ডের বার্তা স্পষ্ট করতে দ্রুত রাজ্যে পর্যবেক্ষক পাঠানোর আবেদন করেছিলেন। সেই মতোই আগামী সপ্তাহে রাজ্যে যাবেন গুলাম। সূত্রের খবর, প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় হাইকমান্ডের দশ আসনের বার্তাই দিতে পারেন তিনি। পরবর্তীতে আসন সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনায় যা বলা হবে তৃণমূল নেতৃত্বকেও।
কোন যুক্তিতে গতবার মাত্র দু’টি আসন জেতা কংগ্রেস দশটি আসন দাবি করবে?
২৪, আকবর রোড একটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, তৃণমূল গতবার যে ২২টি আসন জিতেছিল, শুধু সেই আসনগুলিতেই প্রার্থী দেওয়া উচিত। কিন্তু তা তো বাস্তবসম্মত নয়। কংগ্রেসের বক্তব্য, অতিরিক্ত যে আটটি কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার দাবি করবে কংগ্রেস, সেখানে জোর দেওয়া হবে কংগ্রেসের অতীত পারফরম্যান্স ও এখনও যেখানে কংগ্রেসের সংগঠন ঠিকঠাক, সেই কেন্দ্রগুলিতে। তবে এটি নিশ্চিত, তার মধ্যে কোনওটিই গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জেতা আসন নয়। এবং তার প্রায় গোটাটাই উত্তরবঙ্গে। দশটি নিয়ে দর কষাকষি শুরু করলেও তৃণমূল ছয় থেকে আটটি আসন ছাড়লেই কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব রাজি হয়ে যেতে পারে বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: পুরোহিতের মেয়ে নমাজের পর বিরিয়ানি রাঁধছে! আইনি বিপাকে ‘জওয়ান গার্ল’ নয়নতারা]
বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে ‘ইন্ডিয়া’ শরিকদের মধ্যে যাতে কোনওভাবেই মতপার্থক্য না হয়, সেদিকে কড়া নজর দিচ্ছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। এই কারণে রাজ্যওয়াড়ি আলোচনা চালাচ্ছে কংগ্রেসের ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স কমিটি। এই কমিটির কাছেই গত সপ্তাহে নাগপুরে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন প্রদেশ সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী ও কর্মসমিতির সদস্য দীপা দাশমুন্সি। সূত্রের খবর, সেখানে দুই নেতাই এক সুরে তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা না করার আবেদন করেছিলেন। সংগঠনকে বাঁচাতে প্রয়োজনে একা লড়ার কথাও বলেছিলেন তাঁরা। তারও আগে মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধীর কাছেও অন্তত এক ডজন কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার দাবি করে গিয়েছে প্রদেশ নেতৃত্ব।
রবিবার বিহার ও সোমবার দিল্লির পর মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের শরিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসছে কংগ্রেসের ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স কমিটি। যদিও বাংলা, পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য, যেখানে আসন সমঝোতার জট বেশি পেকে আছে, সেগুলির জন্য আরও সময় দিতে চাইছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। আদৌ কি বাংলায় এত আসন ছাড়তে রাজি হবে তৃণমূল? একই প্রশ্ন উত্তরপ্রদেশের ক্ষেত্রেও। অন্যদিকে, কেরল মডেল সামনে রেখে একা লড়ার বার্তা দিয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস। এত জট কত দ্রুত ও কীভাবে ছাড়াতে পারে কংগ্রেস নেতৃত্ব, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।