সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহানাটকের পরের পর্ব কী? সম্ভাবনা একাধিক। প্রথম সম্ভাবনা, শিণ্ডে-সহ বিক্ষুব্ধ শিব সেনা বিধায়কদের উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গত্যাগ। দ্বিতীয় সম্ভাবনা, শিব সেনার বিক্ষুব্ধ শিবিরের বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়া। উদ্ধবকে তাঁরই দল থেকে সরিয়ে শিব সেনার (Shiv Sena) প্রতীক দাবি করা। তৃতীয় সম্ভাবনা, বিক্ষুব্ধদের পদত্যাগ, এবং বিধানসভায় আস্থাভোট। চতুর্থ সম্ভাবনা, একে একে বিধায়কদের দলে ফেরা এবং সব আগের মতো চলা। পঞ্চম সম্ভাবনা, শিব সেনার গোটা দলটিরই এনসিপি-কংগ্রেসের (Congress) হাত ছেড়ে বিজেপির হাত ধরা। আপাতত সবকটি সম্ভাবনার পথই খোলা। তবে শিব সেনার বিক্ষুব্ধ শিবির চাইছে শেষ বিকল্পটি। একনাথ শিণ্ডে জানিয়ে দিয়েছেন, শিব সেনা তিনি ছাড়বেন না। কিন্তু দলকে এই নীতি বিরুদ্ধে জোট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
মহারাষ্ট্রের মহানাটক পর্বে এদিন দিনভর একের পর এক পর্ব যোগ হয়েছে। আর বেশিরভাগই গিয়েছে মহা বিকাশ আগাড়ি (MVA) সরকারের বিপক্ষে। প্রথমে সুরাট থেকে বিধায়করা চলে গিয়েছেন অসমে। কারণ বিক্ষুব্ধদের বোঝাতে শিব সেনা নেতারা মঙ্গলবারই সুরাটে চলে গিয়েছিলেন। তাই মোদির (Narendra Modi) খাসতালুককেও নিরাপদ মনে করেননি বিদ্রোহীদের নেতা একনাথ শিণ্ডে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে শিণ্ডের সঙ্গে সব মিলিয়ে জনা চল্লিশেক বিধায়ক আছেন। তাঁর দাবি, আরও ৫-৬ জন বিধায়ক যোগ দেবেন।
[আরও পড়ুন: ‘আপনারা বললে ইস্তফা দিতে রাজি’, দলীয় বিধায়কদের আবেগঘন বার্তা উদ্ধবের]
দলীয় বিধায়কদের ফেরাতে চেষ্টার ত্রুটি করছে না শিব সেনার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। বুধবার দুপুরে দলের বিধায়কদের বৈঠক ডেকেছিলেন উদ্ধব। হুঁশিয়ারি দিয়ে দেন যেসব বিধায়ক এই বৈঠকে যোগ দেবেন না, তাঁরা স্বেচ্ছায় দল ছেড়েছেন বলে ধরে নেওয়া হবে। পালটা শিণ্ডে শিবির আবার ওই বৈঠককে বেআইনি বলে দাবি করেছে। শিণ্ডের অনুগামী ৩০ জন বিধায়ক আবার তাঁকেই শিব সেনার পরিষদীয় দলনেতা বলে মেনে নেওয়ার দাবিতে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: অটোচালক থেকে মহারাষ্ট্রের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, কে এই একনাথ শিণ্ডে?]
এসব নিয়ে পরিস্থিতি যখন টালমাটাল তখনই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thakeray) সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলেন। ঘোষণা করে দেন, দলের একজন বিধায়কও যদি তাঁকে সামনাসামনি এসে বলেন, যে তাঁর নেতৃত্ব পছন্দ নয়, তাহলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে রাজি। এমনকী, দলের শীর্ষপদও ছাড়তে রাজি। তবে বিধায়কদের মুম্বই ফিরে আলোচনায় বসতে হবে। বস্তুত শিণ্ডের উদ্দেশে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন তিনি। যার জবাব এসেছে শিণ্ডে শিবির থেকেও। পালটা তাঁর শর্ত, “গত আড়াই বছরে শিব সেনা শুধুই দুর্বল হয়েছে। বাকি দুটি দল এই জোট থেকে সুবিধা পেয়েছে। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এই নীতিবিরুদ্ধ জোট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।” এখন দেখার মহানাটকের পরের পর্ব কোনদিকে বাঁক নেয়।