নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: কথা ছিল এক, হল আরেক। লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ নিয়ে উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু মহুয়া ইস্যুতে সোমবার পুরো শীতল রইল অধিবেশন। টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের (TMC MP) বিরুদ্ধে। এথিক্স কমিটির রিপোর্টে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্টই পেশ হওয়ার কথা ছিল লোকসভা (Lok Sabha) অধিবেশনে প্রথম দিন। কিন্তু সোমবার রিপোর্টটি পেশই হল না। বরং সংসদে নিজের বক্তব্য রেখে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেলেন মহুয়া। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ”আগে রিপোর্ট পেশ করতে দিন, তার পর দেখা যাবে।”
সংসদে টাকা নিয়ে আদানি (Adani) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে মহুয়ার বিরুদ্ধে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। সংসদের এথিক্স কমিটি গত ৯ নভেম্বরের বৈঠকে এই ইস্যুতে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করে। তার আগে কৃষ্ণনগরের সাংসদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এথিক্স কমিটির (Ethics Committee) সদস্যরা। মহুয়ার পাশে দাঁড়ান বিরোধী সাংসদরা। শেষমেশ এথিক্স কমিটি তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করার সুপারিশ করে রিপোর্ট তৈরি করে। তা লোকসভায় পেশ করে ভোটাভুটির ভিত্তিতে মহুয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ স্থির হওয়ার কথা। হিসেব বলছে, লোকসভায় সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে মহুয়া বিরোধী ভোটই বেশি পড়ার কথা।
[আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমে’র দাপটে রাতভর বৃষ্টি, ভাসছে চেন্নাই! দেওয়াল ধসে মৃত ২]
মহুয়া সাংসদ থাকবেন নাকি তাঁর পদ যাবে – সোমবারই তার নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই অবশ্য ওই রিপোর্টে গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। স্পিকারের কাছে জমা পড়ার আগেই কীভাবে সেই রিপোর্ট সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে গেল? সর্বদলীয় বৈঠকে এই প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা ও লোকসভা দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। রিপোর্ট ‘লিক’ হওয়ার কারণেই কি সোমবার তা পেশ হল না? নাকি অন্য কোনও কারণ? সংসদ সূত্রে খবর, রিপোর্টটি আজ পেশ না করার কারণ হিসেবে ‘টেকনিক্যাল’ সমস্যার কথা বলা হয়েছে। কী সেই টেকনিক্যাল কারণ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। বিরোধীদের দাবি, মহুয়াকে সংসদ থেকে বের করে দিতে বিজেপির লম্ফঝম্পই সার। আসল সময়ে পিছু হঠেছে তারা। মঙ্গলবার তা পেশ হওয়ার সম্ভাবনা।