সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অ্যালেক্সেই নাভালনি মামলায় ক্রমেই চাপ বাড়ছে রাশিয়ার উপর। বিশেষ করে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এবার মস্কোকে আরও বেকায়দায় ফেলে ছয় রুশ আধিকারিক ও একটি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU)।
[আরও পড়ুন: সরকারি অর্থ তছরুপ, পুলিশি তল্লাশির মাঝেই নিতম্বে টাকা লুকোলেন ব্রাজিলের মন্ত্রী]
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই পদক্ষেপে পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়া সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকেছে বলেই মত বিশ্লেষকদের। কারণ নিষেধাজ্ঞার জারি হওয়া ছয় রুশ আধিকারিকই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন প্রেসিডেন্সিয়াল এগজিকিউটিভ অফিসের শীর্ষ আধিকারিক। দু’জন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রকে ডেপুটি মিনিস্টার। শুধু তাই নয় নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নাম রয়েছে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের ডিরেক্টরেরও। এছাড়া, ‘State Scientific Research Institute for Organic Chemistry and Technology’ নামের সংস্থাটির উপরও বলবৎ হয়েছে একাধিক বিধিনিষেধ।
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদেশগুলির ২৭ জন প্রতিনিধি রুশ অধিকারিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার আগে নভালনি মামলায় ‘অযথা মস্কোর নাম জড়ালে’ পালটা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। বুধবার জার্মানির বিরুদ্ধে তোপ দেগে রুশ বিদেশমন্ত্রী সাফ বলেন, “আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাবি উঠলেই নাভালনি সম্পর্কে কোনও তথ্য দিচ্ছের না জার্মানি। এহেন অবস্থায় আমাদের ভাবতে হচ্ছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা যায় কি না।”
উল্লেখ্য, আগস্টের ২০ তারিখ সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমানে মস্কো ফিরছিলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রবল সমর্থক নাভালনি ( Alexei Navalny)। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। নাভালনি ঘনিষ্ঠদের প্রাথমিক ধারণা, টমস্ক বিমানবন্দরে তাঁর চায়ে বিষ মেশানো হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, নাভালনির স্নায়ুতন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। কোমায় আচ্ছন্ন হন তিনি। সেটা বিষের প্রভাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। এরপর নাভালনির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় জার্মানির বার্লিনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষানিরীক্ষার পর বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন। তারপর সুইডেন ও ফ্রান্সের গবেষণাগারও সাফ জানায়, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর বিরোধী নাভালনির উপর সোভিয়েত জমানার ভয়াবহ নার্ভ এজেন্ট নভিচক প্রয়োগ করা হয়েছিল।