shono
Advertisement
Bangladesh Student Protest

'রাতে ঘুমোতে পারছি না', রক্তাক্ত পদ্মাপাড়ের যন্ত্রণা গঙ্গাপাড়ের শিল্পীর তুলিতে

কার্যতই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ছবিটি।
Published By: Biswadip DeyPosted: 02:44 PM Jul 20, 2024Updated: 03:28 PM Jul 20, 2024

বিশ্বদীপ দে: রক্তস্নাত বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। বিবৃতি পেশ করেছে রাষ্ট্রসংঘও। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে এই বাংলাতেও সেই উদ্বেগের কালো মেঘ ক্রমেই ঘন হচ্ছে। চোখের সামনে তরুণ পড়ুয়াদের লুটিয়ে পড়ার ভিডিও ভেসে আসছে নেটদুনিয়ায়। এমন এক সময়ে প্রতিবেশীর রক্ত উঠে আসছে এখানকার শিল্পীদের তুলিতে। প্রতিবাদের ভাষ্য তাঁরা রচনা করছেন রং-তুলির অভিঘাতে। তেমনই এক ছবি এঁকেছেন প্রখ্যাত শিল্পী অনিকেত মিত্রও। কার্যতই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ছবিটি।

Advertisement

বাংলাদেশের পতাকার সবুজের প্রেক্ষাপটে লাল বৃত্তকে তিনি মিলিয়ে দিয়েছেন সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সঙ্গে। সবুজাভ আলোয় অসংখ্য় প্রতিবাদীর ভিড়ে পড়ে থাকা তিন তরুণের লাশ, তাঁদের শরীর থেকে গড়িয়ে আসা রক্তস্রোতকে তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন অনিকেত। সেই সঙ্গে লিখে দিয়েছেন তাঁর বার্তা। 'বাংলাদেশ ব্লাডিড ইয়েট আনব্রোকেন'। অর্থাৎ বাংলাদেশ রক্তাক্ত কিন্তু অটুট। কীভাবে জন্ম নিল এমন ছবি?

[আরও পড়ুন: দোকানে থাকতে হবে মালিকের নাম, এবার কানোয়ার যাত্রার সব রুটেই নির্দেশিকা জারি যোগীর]

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের সঙ্গে কথা বলার সময় শিল্পী জানাচ্ছেন, ''রাতে ঘুম আসছে না। বাংলাদেশে (Bangladesh) বহু শিল্পী-বন্ধুরা রয়েছেন। আমার এক বোন সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছে। তারও খোঁজ পাচ্ছি না। সব মিলিয়ে একটা অস্থিরতা। এত ছোট ছোট ছেলেরা প্রাণ হারাচ্ছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি জানি সব মিটে যাবে একসময়। কিছু না কিছু একটা সমাধান নিশ্চয়ই বেরবে। কিন্তু যে প্রাণগুলি চলে গেল তারা তো আর ফিরে আসবে না। একসময় সব থিতিয়ে যাবে। কিন্তু যে মায়ের কোল খালি হল, তা আর ভরবে না। সেই যন্ত্রণা থেকেই এঁকেছি এই ছবি।''

কিন্তু একটা ছবি কি কোনও রক্তস্রোতের মোকাবিলা করতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে অনিকেতের পরিষ্কার উত্তর, ''এর বেশি কিছু তো পারি না। হাত-পা বাঁধা। তাই ছবি এঁকেছি। অনেকে বলেছে সোশাল মিডিয়ায় এসব পোস্ট করে কী হবে। আমার মত হল, যদি একজনকেও ছবিটা স্পর্শ করে সেটাই অনেক। আবার অনেকে এও বলছে, বাংলাদেশ তো বিদেশ। সেখানকার সংকট নিয়ে আমি এত ভাবছি কেন। কিন্তু আমি মনে করি স্রেফ সৌন্দর্য সৃষ্টিই শিল্পীর কাজ নয়। সাম্প্রতিক ক্ষত যদি কোনও শিল্পীকে আহত না করে তাহলে তাকে শিল্পী বলতেই আমার আপত্তি রয়েছে।''

[আরও পড়ুন: সংরক্ষণে ‘না’, আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ ওপার বাংলা, প্রতিবাদে গর্জে উঠল কলকাতা]

সাম্প্রতিক সময়ে এই পৃথিবী ইউক্রেন দেখেছে। দেখেছে গাজা। এখন দেখছে বাংলাদেশ। বার বার মানুষের নিপীড়নের এই কাঁটায় রক্তাক্ত শিল্পী মন। অনিকেত বলছেন, ''কীভাবে কোভিড অতিমারীতে সারা পৃথিবী ক্ষতবিক্ষত হল। অতিমারীর প্রকোপ কমতে না কমতেই রাশিয়া ছুটে গেল ইউক্রেনের দিকে। অথচ তার আগেই আমরা দেখেছি রাশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের সারি। কিন্তু সব ভুলে ফের যুদ্ধ শুরু করে দেওয়া হল! এসবই আমাকে ভাবায়। আর সেটাই ফুটে ওঠে ছবিতে।'' তবে এই আকালেও হাল ছাড়তে রাজি নন অনিকেত। তাই তাঁর ছবিতেও রেখেছেন বাংলাদেশের অটুট থাকার বার্তা। ভরসা রাখছেন শেষপর্যন্ত সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু পাশাপাশি এও সত্যি, যে সব প্রাণ ঝরে গেল তারা আর ফিরে আসবে না। সেই ভাবনাও কষ্ট দিচ্ছে অনিকেতকে। যেমন বিষণ্ণ করছে সারা পৃথিবীর সংবেদনশীল মানুষকে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • প্রতিবেশীর রক্ত উঠে আসছে এখানকার শিল্পীদের তুলিতে। প্রতিবাদের ভাষ্য তাঁরা রচনা করছেন রং-তুলির অভিঘাতে।
  • তেমনই এক ছবি এঁকেছেন প্রখ্যাত শিল্পী অনিকেত মিত্রও।
  • কার্যতই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ছবিটি।
Advertisement