shono
Advertisement
New Drama Bhuto

বাংলার মঞ্চে সত্যজিৎ রায়ের 'ভূতো', কেমন হল কথা বলা পুতুলের আজব খেলা?

কাব্যাকলা মনন ও দেবন্তরা আর্টসের প্রযোজনায় তৈরি এই নাটক।
Published By: Suparna MajumderPosted: 05:13 PM Jun 17, 2024Updated: 05:13 PM Jun 17, 2024

চারুবাক: ভেন্ট্রিলোকুইজম বা মায়াস্বর বাচিক শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলেও আমাদের এই বাংলায় এই শিল্পটির চর্চায় তেমন কোনও ধারাবাহিক উদ্যোগ দেখিনি। হয়তো কিছু চর্চা চোখের আড়ালেই রয়ে গেছে। সত্যজিৎ রায় কিন্তু বেশ কিছু বছর আগেই ভেন্ট্রিলোকুইজমকে আশ্রয় করে 'ভূতো' নামের একটি গল্পই শুধু লেখেননি, সেই গল্প নিয়ে একটি ছবিও তৈরি করেছিলেন তাঁর ছেলে সন্দীপ রায়। অবশ্য বাংলায় নয়, হয় হিন্দিতে। আনন্দের কথা, নাট্যচর্চার প্রাণকেন্দ্র এই শহর কলকাতায় একটু দেরিতে হলেও সেই অপ্রচলিত শিল্প চর্চা নিয়ে একটি নাট্যদল এগিয়ে এল। শহরের মঞ্চে দেখা গেল 'ভূতো'র নাট্যরূপ (অন্তরা চট্টোপাধ্যায়)। প্রযোজনায় কাব্যাকলা মনন ও দেবন্তরা আর্টস।

Advertisement

সম্প্রতি অকাদেমির মঞ্চে 'ভূতো'র মঞ্চায়ন দেখতে বসে সত্যিই এক অনাস্বাদিত শিল্পের সঙ্গে শুধু পরিচয় ঘটল না, পলাশ নন্দীর গভীর আত্মপ্রত্যয়ে ভেন্ট্রিলোকুইজম-এর সম অভিনয়ে চমকে দিলেন। প্রবীণ ভেন্ট্রিলোকুইস্ট আক্রুর দত্তর 'খেল' দেখে তরুণ সাধারণ এক জাদুকর নবীন মুন্সী তাঁর কাছ থেকে ওই বিদ্যাটি শিখতে আগ্রহী হয়। কিন্তু কিছুটা অহংকার ও বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেখাতে অস্বীকার করেন। নবীন নিজেই বইপত্র কিনে ঠোঁট চেপে গলা দিয়ে বিভিন্ন স্বর বের করা রপ্ত করে নেয় এবং হয়ে ওঠে স্বশিক্ষিত এক ভেন্ট্রিলোকুইস্ট।

[আরও পড়ুন: আচমকাই বুকে অস্বস্তি, হাসপাতালে সন্ধ্যা রায়!]

এবার নবীন শুরু করে প্রদর্শনী। সফলও হয়। আক্রুর বলেছিলেন 'ভেন্ট্রিলোকুইজম' কাউকে শেখানো যায় না, নিজের অধ্যাবসায়, ধৈর্য দিয়ে শিখতে হয়। স্বশিক্ষিত নবীনের মধ্যে হয়তোবা কিঞ্চিৎ আত্মগরিমার জন্ম হয়ে থাকবে। কিন্তু একদিন সেও উপলব্ধি করে এই কথা। কিন্তু শিল্পের চর্চায় আত্মগরিমার স্থান নেই! এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নবীন হারিয়ে ফেলে তার চর্চিত কণ্ঠস্বর। তার হাতে ধরা পুতুলটি তখন তারই শেখানো বুলির বদলে বলে ওঠে 'ওথেলো' নাটকের স্বগতোক্তি "ইটস দ্য কজ, ইটস দ্য কজ..."। এ যেন এক সাবধানবাণী। এর পরই প্রবীণ অক্রুরের মৃত্যুতে নাটকের সমাপ্তি।

সত্যজিৎ রায়ের গল্পের মূল বক্তব্যকে বজায় রেখে অন্তরা যে নাট্যরূপ দিয়েছেন সেখানে তাঁর নিজস্ব ইনপুটও আছে। তা কখনও বাড়তি মনে হয়নি। পরিচালক সুমিত কুমার রায়ের নির্মাণ কৌশলের সারল্য, স্বাভাবিকতা, স্বচ্ছন্দ গতি নাটকটিকে দর্শকের কাছে আগ্রহী এবং মনোগ্রাহী করেছে। সহর্ষ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াও পেয়েছেন শিল্পীরা। দেবদূত মাইতির নিরাভরণ মঞ্চ মূল লেখকের চিন্তার অনুসারি। শুধু দৃশ্য বদলের সময় আরও একটু গতি বৃদ্ধির প্রয়োজন। পার্থপ্রতিম রায়ের আবহও অতি সাধারণ হয়েও নাটকীয় মুহূর্তকটিকে বেশ জমিয়ে দেয় বৈকি!

তবে এই প্রযোজনায় দেখার বিষয় প্রকৃত ভেন্ট্রিলোকুইস্ট পলাশ অধিকারী। তিনি অভিনেতা হয়ে নবীনের চরিত্রটিকে যেমন সহজ সরল একজন মানুষ হিসেবে মঞ্চে এনেছেন, তেমনই কথাবলা পুতুলের চরিত্রে কণ্ঠস্বর বদল করে ও স্বরের ওঠানামা, ক্ষেপণের ভ্যারিয়েশনে বেশ মজারু ভাবটিও একইসঙ্গে চালিয়ে গেছেন। ভেন্ট্রিলোকুজমের সেটাইতো আসল খেলা। পলাশ সেই খেলায় দশে আট পেয়ে যাবেন। হাতেগরম সেটা পেয়েওছেন। আক্রুরের চরিত্রে অভিজিৎ ঘোষ মন্দ নন, শুধু এটুকুই বলব। আসলে বাংলা মঞ্চে ভেন্ট্রিলোকুইজম দেখানোই এই প্রযোজনার প্রধান ও প্রথম আকর্ষণ।

[আরও পড়ুন: পুরীর সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছিলেন অপরাজিতা! পায়ে আঘাত, কী বললেন অভিনেত্রী?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাংলা মঞ্চে ভেন্ট্রিলোকুইজমের অভিনব ভাবনা।
  • সত্যজিৎ রায়ের কাহিনি অবলম্বনে তৈরি নতুন নাটক 'ভূতো'।
Advertisement