shono
Advertisement

Breaking News

Mahishasuramardini

'হাওয়ার তাজমহল': বিশ্বের ব্রডকাস্টিং ইতিহাসে 'মহিষাসুরমর্দিনী' একমেবাদ্বিতীয়ম

মহিষাসুরমর্দিনী ঘিরে বিতর্ক ধোপে টেকেনি।
Published By: Biswadip DeyPosted: 08:08 PM Oct 01, 2024Updated: 08:08 PM Oct 01, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবারও সেই ভোর। বাঙালির হৃদয়ে শিউলিফুলের গন্ধ আর নীল আকাশের আলোর ঝলক দেখতে পাওয়ার দিন। পিতৃপক্ষের অবসানে মহালয়া তিথির এই আগমন আসলে আকাশবাণীর এক অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছে কতকাল ধরে। 'আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর! ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা...' এক অমোঘ উচ্চারণ যুগযুগান্তের ওপার থেকে আজও পৃথিবীতে ফিরে ফিরে আসে। এমন অনুষ্ঠান সারা বিশ্বের ব্রডকাস্টিং ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। আসলে একমেবাদ্বিতীয়ম। পৃথিবী জুড়ে রেডিওয় সম্প্রচারিত বহু অনুষ্ঠানই তো রয়েছে। কিন্তু এভাবে বছরের পর বছর, বলা যায় বরাবর চলতে থাকা এমন অনুষ্ঠান সত্যিই অবিশ্বাস্য।

Advertisement

অথচ 'হাওয়ার তাজমহল' বাণীকুমার-পঙ্কজকুমার মল্লিক-বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর মহিষাসুরমর্দিনী ঘিরে বিতর্কও ছিল। এক অব্রাহ্মণের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ কিংবা মুসলিম-খ্রিস্টান যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পীর এতে অংশগ্রহণ কেন, এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কিন্তু শেষপর্যন্ত কিছুই ধোপে টেকেনি। কালের স্রোতে খড়কুটোর মতো ভেসে গিয়েছে সেই সব বিতর্ক।

কিংবা 'দেবিং দুর্গতিহারিনিম'। মহিষাসুরমর্দিনীর বিকল্প অনুষ্ঠান। উত্তম-হেমন্ত-লতা-আশা-মান্না-সন্ধ্যা-আরতি কে ছিলেন না? ১৯৭৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তা সম্প্রচারিত হওয়ার পর কী হয়েছিল তা সামান্য ইতিহাসসচেতন বাঙালি মাত্রেই জানেন। বাবুঘাটে তর্পণ করে আসা সাধারণ মানুষ আকাশবাণীর কাছে জড়ো হয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার করেছিলেন। বেলা গড়ালেও দেখা গিয়েছিল বিক্ষুব্ধ জটলা। তাছাড়া ছিল ফোন। পাশাপাশি পত্রাঘাতও কম হয়নি। সেযুগে সোশাল মিডিয়া ছিল না। তবুও মানুষ যেভাবে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছিলেন, তা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছিল উত্তম মহানায়ক হতে পারেন। কিন্তু এই রেডিও অনুষ্ঠানটি থেকে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে প্রতিস্থাপিত করা যায় না। এর পর আর কখনও এই অনুষ্ঠানের কোনও পরিবর্তন পরিকল্পনা করার 'দুঃসাহস' হয়নি আকাশবাণী কর্তৃপক্ষের।

মহিষাসুরমর্দিনী আসলে নিছক কোনও রেডিও অনুষ্ঠান মাত্র নয়। কিছু কিছু ব্যাপার এই পৃথিবীতে ঘটে যায়, তা এক অলৌকিক সিলমোহরের মতো চিরস্থায়ী হয়ে যায়। এই অনুষ্ঠানও তাই। সারা বছরের ব্যস্ততা, তিক্ততা, অপমান ভুলে মাতৃবন্দনায় মেতে ওঠার এক অমোঘ সূচনাপর্ব তৈরি করে মহালয়ার ভোর। তর্পণের জন্য গঙ্গামুখী মানুষের ঢল কিংবা শিউলিফুলের সুবাসে মাতোয়ারা হওয়ার চেয়েও জরুরি হয়ে পড়ে ভোরের অমল আলোয় রেডিও (সারা বছর খোঁজ পড়ে না তাকেই সারিয়ে নিয়ে) কিংবা মোবাইলে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর অমোঘ পাঠের সাক্ষী হয়ে পড়া। কিংবা অসামান্য সব গানের নস্ট্যালজিয়া... আজও অমলিন... 'এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর...'

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মহিষাসুরমর্দিনী সারা বিশ্বের ব্রডকাস্টিং ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। আসলে একমেবাদ্বিতীয়ম।
  • পৃথিবী জুড়ে রেডিওয় সম্প্রচারিত বহু অনুষ্ঠানই তো রয়েছে।
  • কিন্তু এভাবে বছরের পর বছর, বলা যায় বরাবর চলতে থাকা এমন অনুষ্ঠান সত্যিই অবিশ্বাস্য।
Advertisement