সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুতুব মিনারের (Qutb Minar) নাম বদলে হোক বিষ্ণু স্তম্ভ। ক’দিন আগেই এমন দাবি তুলেছিল হিন্দুত্ববাদীরা। ওই দাবিতে কুতুব মিনার চত্বরে বিক্ষোভ দেখায় তারা। এবার ঐতিহাসিক স্তম্ভটিকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন পুরাতত্ত্ব বিভাগ অর্থাৎ আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (Archaeological Survey of India) এক প্রাক্তন আধিকারিক। তাঁর দাবি, কুতুব মিনার নির্মাণ করেছিলেন মহারাজা বিক্রমাদিত্য (Raja Vikramaditya)। সূর্য অবস্থান পর্যবেক্ষণের জন্য পঞ্চম শতাব্দীতে মিনার নির্মাণ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর অন্তর্গত কুতুব মিনার। ইঁটের তৈরি মিনারের মধ্যে এটিই বিশ্বের দীর্ঘতম। দৈর্ঘ্য ৭২.৫ মিটার। এখানে রয়েছে ৩৭৯টি ঘোরানো সিঁড়ি। ইতিহাস বলছে, কুতুবুদ্দিন আইবক এই মিনার তৈরি করান। যদিও সম্প্রতি হিন্দুত্ববাদীরা দাবি করেছেন, কুতুব মিনার চত্বরে ২৭টি মন্দির ছিল। তার মধ্যে অন্যতম জৈন তীর্থঙ্কর ভগবান ঋষভ দেবের উপাসনাস্থল-সহ ভগবান বিষ্ণু, গণেশ, শিব, সূর্য, হনুমান, দেবী গৌরীর মন্দির। এবার পুরাতত্ত্ব বিভাগের এক প্রাক্তন আধিকারিক ধরমবীর শর্মা দাবি করলেন, কুতুব মিনার নির্মাণ করেছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্য।
[আরও পড়ুন: রুশ প্রভাব খর্ব করতে ভারতকে বিশেষ সামরিক প্যাকেজ দেওয়ার ভাবনা আমেরিকার]
তিনি বলেন, “এটি কুতুব মিনার না, বরং সূর্য মিনার। কুতুবুদ্দিন আইবক নয়, পঞ্চম শতাব্দীতে এটি নির্মাণ করেছিলেন মহারাজা বিক্রমাদিত্য।” এই বিষয়ে তাঁর কাছে তথ্য প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেছেন ধরমবীর। তাঁর যুক্তি, “গোড়ার তুলনায় মিনারের মাথাটি ২৫ ইঞ্চি হেলে রয়েছে। জুনের ২১ তারিখে সূর্য পর্যবেক্ষণের জন্য এভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল মিনারটিকে। ওই দিন সূর্যের অবস্থানে একটি বিশেষ পরিবর্তন হয়। অন্তত আধ ঘণ্টা এলাকায় ছায়া পড়ে না। পুরো বিষয়টি বিজ্ঞান ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয়।” আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার একজন প্রাক্তন আধিকারিকের এমন বক্তব্যের পর হিন্দুত্ববাদীরা মিনার নিয়ে তেড়ফুঁড়ে ময়দানে নামবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
[আরও পড়ুন: রাস্তায় রাস্তায় ফুল বেচেই মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে PhD করার সুযোগ, চমকে দিলেন JNU প্রাক্তনী]
প্রসঙ্গত, কুতুব মিনার চত্বরের ২৭টি মন্দিরের পুনর্নির্মাণেরও দাবি উঠেছে। এই দাবি তুলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP)। বলা হয়েছে ওই মন্দিরে সকলকে প্রার্থনার সুযোগও দিতে হবে। কট্টর হিন্দুত্ববাদী দলের জাতীয় মুখপাত্র বিনোদ বনসল বলেন, ”আমরা ওখানকার প্রধান সব এলাকা ঘুরে দেখেছি। যেভাবে ওখানে হিন্দু মন্দিরগুলি ধ্বংস করা হয়েছিল, সেই দৃশ্য হৃদয়বিদারক। ২৭টি হিন্দু মন্দির ভেঙে সেখানে কুতুব মিনার তৈরি করা হয়েছিল। ওই অতিকায় নির্মাণটি তৈরিই করা হয়েছিল দেশকে খোঁচা দিতে। আমাদের দাবি, ওই মন্দিরগুলি ফের নতুন করে তৈরি করে সেখানে হিন্দুদের পুজো করতে দিতে হবে।”