সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করল চুঁচুড়া থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃত পার্থ মণ্ডল সিপিএমের (CPM) প্রাক্তন সদস্য। তার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে। যদিও পার্থর সঙ্গে দলের একসময়ে যোগ ছিল, তা অস্বীকার করেছে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। শুক্রবার ধৃতকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকরি দেওয়ার নাম করে একটি বড়সড় প্রতারণা চক্র সক্রিয় পূর্ব মেদিনীপুরে। এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত পার্থ মণ্ডল, অমিত পাইরা ও সুরজিৎ কামিলা। তিন প্রতারক পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের (Nandigram) বাসিন্দা স্বপন দাস নামে এক ব্যক্তির ছেলেকে সরকারি স্বাস্থ্যদপ্তরে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে তাকে ফাঁদে ফেলে। ১৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে স্বপনবাবুর ছেলে কৌশিককে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর ধাপে ধাপে স্বপনবাবুর কাছ থেকে প্রতারকরা নগদ ১৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
[আরও পড়ুন: বিচারপতিকে লেখা কুন্তলের চিঠি মামলা: অভিষেককে জেরার বিরোধিতায় দাখিল ক্যাভিয়েট]
ধৃত পার্থর বয়স ৪৫ বছর। ছাত্রজীবন থেকে বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। তাম্রলিপ্ত কলেজে পড়ার সময় এসএফআই ও পরে সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত হয়। দরিদ্র পার্থ সাইকেল নিয়ে দলের মুখপত্র ফেরি করতেন। ২০১৫ সাল থেকে তার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠতে থাকে। পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore) থেকে হুগলি পালিয়ে এসেও শেষরক্ষা হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়ে। পুলিশ জানতে পারে, চুঁচুড়া স্টেশনের আশেপাশে প্রতারক রয়েছে। পুলিশের কথা মত অভিযোগকারী স্বপনবাবু দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে যাচ্ছেন বলে সেখানেই প্রতারককে অপেক্ষা করতে বলেন। আর টাকা নিতে এসেই হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় প্রতারক পার্থ মণ্ডল।
[আরও পড়ুন: পুলওয়ামা কাণ্ডের জন্য দায়ী কেন্দ্রই, হেলিকপ্টার চেয়েও পাননি জওয়ানরা! বিস্ফোরক সত্যপাল মালিক]
পুলিশ জানিয়েছে, এর পিছনে একটা বড় চক্র রয়েছে। এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে ১৫ থেকে ২০ জন প্রতারিত হয়েছে। এই সংখ্যাটা অনেক বেশি হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত পার্থ মণ্ডলকে নিয়ে বাকি দুই প্রতারকের খোঁজে পূর্ব মেদিনীপুর যাবে পুলিশ। তবে পুলিশের অনুমান, এই প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা অন্য কেউ।