সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিঙ্গুর জমি আন্দোলনে যখন উত্তাল রাজ্য, তখন শিল্পমন্ত্রী ছিলেন তিনি। বছর পাঁচেক গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। সোমবার ভোরে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী নিরুপম সেন। প্রয়াত নেতার মরদেহ রাখা থাকবে পিস হাভেনে। শেষকৃত্য হবে বুধবার।
[ ‘আমার জন্য কাউকে শাস্তি দেবেন না’, অনশন তুলে মন্ত্রীকে আর্জি মাও নেতার]
একদা এ রাজ্যে ‘বামদুর্গ’ হিসেবে পরিচিত ছিল অবিভক্ত বর্ধমান জেলা। সেই জেলায় সিপিএমের দাপুটে নেতা ছিলেন নিরুপম সেন। দীর্ঘদিন দলের সংগঠনের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ছিলেন দলের অন্যতম তাত্ত্বিক নেতা ও পলিটব্যুরোর সদস্য। তবে সংসদীয় রাজনীতিতে তেমনভাবে সক্রিয় ছিলেন না নিরুপম। ২০০১ সালে যখন মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে জ্যোতি বসু অবসর নেন, তখনই পোড়খাওয়া এই রাজনীতিবিদকে মন্ত্রিসভায় শামিল করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়। দলের নির্দেশে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন নিরুপম সেন। ভোটে জেতেন এবং শিল্পমন্ত্রী হন। ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন তিনি। বাম জমানায় ‘কৃষি ভিত্তি, শিল্প ভবিষ্যত’ নীতির রূপায়ণের দায়িত্ব ছিল তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের কাঁধেই। সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা ও নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। যদিও শেষপর্যন্ত বামেদের শিল্পনীতি সফল হয়নি। বরং সিঙ্গুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জমি আন্দোলনের কারণে ক্ষমতাচ্যুত হয় বামেরা।
রাজ্যে পালাবদলের পর, ২০১৩ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হন নিরুপম সেন। আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। গত পাঁচ বছর ধরে গুরুতর অসুস্থ ছিলেন তিনি। তবে তারমধ্যেও যখনই একটু সুস্থ থাকতেন, হুইলচেয়ারে বসে হাজির হতেন দলের কর্মসূচিতে। ১২ ডিসেম্বর রাতে ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে নিরুপম সেনের। তাঁকে ভরতি করা হয় সল্টেলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। একে একে বিকল হয়ে যাচ্ছে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ। সপ্তাহে তিনটি করে ডায়ালিসিসও চলছিল। সোমবার ভোর পাঁচটা নাগাদ শেষ প্রয়াত হলেন এ রাজ্যে শেষ বাম সরকারের শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন।
[ শিয়ালদহে হবে নয়া সেতু, যানজট এড়াতে বিকল্প পথের সন্ধানে প্রশাসন]
The post দীর্ঘ রোগভোগের পর প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন appeared first on Sangbad Pratidin.