দীপঙ্কর মণ্ডল ও কলহার মুখোপাধ্যায়: করোনা আবহেই দেশজুড়ে শুরু হল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেন)। চলবে ৬ তারিখ পর্যন্ত। মঙ্গলবার দেশের অন্যান্য শহরের মত কলকাতা, আসানসোল, বর্ধমান, দুর্গাপুর, হুগলি, হাওড়া, কল্যাণী ও শিলিগুড়ির বিভিন্ন সেন্টারে অনলাইন পরীক্ষাটি সুষ্ঠুভাবে শুরু হয়। পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ জানিয়েছে, তারা গণপরিবহণের ঝুঁকি নেয়নি। প্রায় সবাই গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষা দিয়েছে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স চলবে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ডাক্তারিতে ভরতির প্রবেশিকা পরীক্ষা (NEET) হবে ১৩ সেপ্টেম্বর।
তবে ব্যতিক্রমী ছবিও আছে। সল্টলেকের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারলেন না অনেকে। এদিন সল্টলেক সেক্টর ফাইভে বি ই আর্কিটেকচার ও প্ল্যানিং – এই দুটি পরীক্ষা ছিল। সকাল ন’টা থেকে বারোটা এবং বিকেল তিনটে থেকে ছ’টা পর্যন্ত পরীক্ষা হয়। সকালের প্রথম পরীক্ষায় এসে বসতে পারলেন না একাধিক পরীক্ষার্থী। সূত্রের খবর, সকালবেলার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি পরীক্ষাকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি। দুপুরের পরীক্ষায় তুলনামূলকভাবে হাজিরা সংখ্যা ছিলো বেশি।
JEE’র জন্য আবেদন করেছিলেন ৮.৫৮ লক্ষ পড়ুয়া। NEET’এ বসতে চেয়ে আবেদন করেছেন ১৫.৯৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী। পশ্চিমবঙ্গের মোট ১৫ টি কেন্দ্রে ৩৭ হাজার ৯৭৩ জন পড়ুয়ার জয়েন্ট এন্ট্রান্স দেওয়ার কথা। এ রাজ্যের ১৮৯ কেন্দ্র থেকে NEET’এ বসার কথা ৭৭০৬১ জনের। গোটা দেশের পরীক্ষার্থীদের জন্য আইআইটি খড়গপুর (IIT, Kharagpur) এবং আইআইটি রুরকি (IIT, Roorkee) একটি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করেছে। যার সাহায্যে অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার পথ মসৃণ হতে পারে। রাজ্যের কেন্দ্রগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের পৌঁছতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য অতিরিক্ত বাস চালাচ্ছে সরকার। আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন পরীক্ষার্থীরা। ১৩ তারিখ NEET পরীক্ষার দিনও একই ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: মদ্যপানের প্রতিবাদ করে দুষ্কৃতীদের রোষে স্কুল পড়ুয়া! গাছে মিলল ঝুলন্ত দেহ]
অন্যদিকে, এ রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা হবে অনলাইনে। সোমবার এই সিদ্ধান্তের পর কতজন ছাত্রছাত্রীর হাতে স্মার্টফোন আছে, ক’জন তা ব্যবহার করেন না, প্রাথমিকভাবে সেটাই খুঁজে বের করা মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে কলেজগুলির কাছে। অনলাইন এবং ওপেন বুক সিস্টেমে পরীক্ষা হলে তার প্রথম পদক্ষেপই ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল, স্মার্টফোন ব্যবহার এবং তার ইন্টারনেট পরিষেবা কতটা গতিশীল, তা খুঁজে বের করা।
বহু কলেজের অধ্যক্ষের মতে, ‘মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন’ ফরম্যাটে পরীক্ষা হলে তুলনায় কম অসুবিধার সম্মুখীন হবেন ছাত্রছাত্রীরা। পাশাপাশি উত্তরপত্র ঘিরে নয়া জটিলতার সম্ভাবনাও এড়ানো যাবে। এর সঙ্গে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করার পাশাপাশি উত্তরপত্র আপলোড করার জন্য কয়েকদিনের টানা লম্বা সময়সীমা ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী অধিকাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: লিলুয়ার রেল আবাসনের জীর্ণদশা, সামাজিক দূরত্ব বিসর্জন দিয়ে আবাসিকদের বিক্ষোভ]
এ প্রসঙ্গে বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক গৌতম কুণ্ডু বলেছেন, ”ছাত্রছাত্রীদের পর্যাপ্ত সময় না দিলে অনেকে পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না, এমন সম্ভাবনা রয়েছে।” পাশাপাশি তিনি মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। বারুইপুর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক চঞ্চলকুমার মণ্ডল আবার বাংলায় উত্তর লেখা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। মোবাইলে বাংলায় উত্তর লেখার কাজ তাঁর কলেজের সব পরীক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠবে কিনা তা জানার জন্য খোঁজখবর নিচ্ছেন তিনি। এদিকে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ণ পদ্ধতি বুধবার ঘোষণা করা হবে। সূত্রের খবর, কলা-বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তির জন্য আলাদা আলাদা মূল্যায়ণ পদ্ধতি ঠিক হবে।
The post করোনা কালে সমস্ত বাধা পেরিয়ে শুরু JEE, রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্বিঘ্নেই অনলাইন পরীক্ষা appeared first on Sangbad Pratidin.