shono
Advertisement

মরণোত্তর অঙ্গদানে নজির! হুগলির বাসুদেবের অঙ্গে প্রাণ ফিরে পাচ্ছেন ৪ জন

বাসুদেববাবুর লিভার পাচ্ছেন ৬২ বছরের এক প্রবীণ চিকিৎসক।
Posted: 05:10 PM Dec 10, 2022Updated: 05:42 PM Dec 10, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: পিজি হাসপাতালে মরণোত্তর অঙ্গদানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জুড়ে গেলেন বাসুদেব খাঁড়া (৫৬)। বেহুলা গুপ্তিপাড়ার কৃষক বাসুদেববাবুর দু’টি কিডনি পাবেন দু’জন। আর এই নিয়ে মোট ১০২ জন ব্রেন ডেথ হওয়া ব্যক্তির থেকে কিডনি পেয়ে সুস্থ হতে চলেছেন পিজি হাসপাতালে। বাসুদেববাবুর লিভার পাচ্ছেন পিজি হাসপাতালে ভরতি ৬২ বছরের এক প্রবীণ চিকিৎসক। আর হার্ট পেয়ে নতুন জীবন পাবেন শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের রোগী।

Advertisement

হুগলির গুপ্তিপাড়ার বেহুলার বাসুদেববাবু গত শনিবার সাইকেলে করে বাজারে যান। বিক্রিবাটা সেরে বাড়ি ফেরার পথে ফোন করেন স্ত্রীকে। জানান, ‘‘একটু পরে বাড়ি আসছি।’’ ব্যস। আর কোনও খবর নেই তাঁর। বেশ কিছুক্ষণ পর জানা যায় রাস্তায় পড়ে আছেন বাসুদেব খাঁড়া। একটু দূরে ছিটকে পড়ে আছে সাইকেল। সামনে অজস্র কাচের টুকরো। প্রৌঢ় বাসুদেববাবুর ভাগ্নে তুষার দাসের কথায়, প্রথমে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর মামাকে। কিন্তু দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি যে কলকাতার কোনও হাসপাতালে রেফার করা হয়।

[আরও পড়ুন: বিজেপির ডিসেম্বরের পালটা জানুয়ারি! নতুন বছরের ‘গুরুত্বপূর্ণ’ দিনক্ষণ জানালেন কুণাল ঘোষ]

এরপর রাতেই পিজি হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ‘রেড জোন’ চিকিৎসা চলছিল। শুক্রবার পিজি হাসপাতালের অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিভাগের বাইরে দাঁড়িয়ে তুষার দাস বলেন, ‘‘গতকাল ডাক্তারবাবুরা বলেন উনি আর ফিরবেন না। ক্রমশ ব্রেন ডেথের মতো লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছে। এখন মামার কিডনি, হার্ট, আর লিভার যেহেতু ঠিক আছে, তাই এগুলো দিয়ে কোনও মুমূর্ষু রোগী নতুন জীবন পেতে পারেন।’’

মরণোত্তর অঙ্গদানের কথা সংবাদ মাধ্যমে অনেকবার শুনেছিলেন বাসুদেব খাঁড়ার পরিবার। কিন্তু এমন প্রস্তাব যে তাঁদের দেওয়া হবে তা বুঝতেই পারেননি। পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা করে শেষ পর্যন্ত অঙ্গদানে সহমত হলেন এই কৃষক পরিবার। শুক্রবার দুপুর দু’টো নাগাদ বাসুদেববাবুর শরীর থেকে পরম যত্নে একটা একটা করে অঙ্গ তুলে নেওয়ার কাজ শুরু হয়। সেই কাজ চলে রাত প্রায় সাতটা পর্যন্ত।

এরপর শুরু হয় অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কাজ। এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, যে দু’জন কিডনি পেয়েছেন তাঁরা হলেন মোক্তার মণ্ডল (৩৯) ও উজ্জ্বল দত্ত (২৮)। লিভার প্রাপক এক প্রবীণ চিকিৎসক এবং শহরের বেসরকারি হাসপাতালে বাসুদেববাবুর হার্ট পাবেন জনৈক বাদশা খান (৫০)। দীর্ঘদিন হার্টের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। এসএসকেএম হাসপাতালে দাঁড়িয়ে তুষার দাস বলেছেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে হয়তো শোক কমবে। কিন্তু চারজনের মধ্যে বেঁচে থাকবেন মামা। এর থেকে বড় প্রাপ্তি কী হতে পারে?’’ 

[আরও পড়ুন: রাত পোহালেই টেট, পরীক্ষার্থীদের সুবিধায় কী ব্যবস্থা নিল পর্ষদ?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement