সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাক নিয়ে সরগরম রাজনীতি। কর্ণাটকের সীমা ছাড়িয়ে হিজাব বিতর্কের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে দেশজুড়ে। অনেকেরই দাবি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ হওয়ায় ছাত্রীরা স্কুল-কলেজে আসতে পারছেন না। ফলে পরীক্ষায় বসতে সমস্যা হচ্ছে তাঁদের। এহেন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ হিজাব পরিধানের সঙ্গে পরীক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই।
[আরও পড়ুন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পোশাকবিধি মানতেই হবে, হিজাব বিতর্কে সাফ কথা কর্ণাটক হাই কোর্টের]
কর্ণাটকের স্কুলে হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার একটি মামলার দ্রুত শুনানি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আবেদন করেন এক মামলাকারী। কর্ণাটক হাই কোর্টের রায়ের বিপক্ষে মামলাকারীর হয়ে এদিন শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী দেবদত্ত কামাত। তাঁর যুক্তি, মার্চের ২৮ তারিখ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এবং হিজাব নিষিদ্ধ হওয়ায় অনেক ছাত্রী স্কুল বা কলেজে আসতে পারছেন না। ফলে তাঁদের একটি বহুমূল্য শিক্ষাবর্ষ কার্যত নষ্ট হতে চলেছে। কিন্তু আদালতে এই যুক্তি ধোপে টেকেনি। মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনা বলেন, “হিজাব বিতর্কের সঙ্গে পরীক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই।” শুধু তাই নয়, মামলাকারীর আইনজীবীকে হিজাব নিয়ে অযথা উত্তেজনা না ছড়ানোর পরামর্শও দেন তিনি।
উল্লেখ্য, মার্চের ১৫ তারিখ হিজাব বিতর্কে ঐতিহাসিক রায় দেয় কর্ণাটক হাই কোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানায়, ইসলাম ধর্মাচরণে হিজাব অপরিহার্য নয়। শিক্ষাঙ্গনে হিজাব নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে যে সমস্ত আবেদন জমা পড়েছিল, তা খারিজ করে দেয় আদালত। তারপরই এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন জমা পড়ে।
বলে রাখা ভাল, কর্ণাটক (Karnataka) সরকার গত ৫ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশিকা জারি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তার পর থেকেই সে রাজ্যে হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষ করে উদুপি জেলায় বিক্ষোভের জেরে স্কুল-কলেজগুলি রীতিমতো রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করেছিল। লাগাতার প্রতিবাদের জেরে বেশ কয়েকদিন স্কুল-কলেজ বন্ধও রাখতে হয় কর্ণাটক সরকারকে। সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন কয়েকজন মুসলিম পড়ুয়া। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করা যাবে না, এই মর্মে একাধিক মামলা করা হয়েছিল। সরব হয় বিরোধী দলগুলিও। সেই বিতর্কে ফের একনার জল ঢেলে দিল শীর্ষ আদালত।