shono
Advertisement

Breaking News

‘কালী মূর্তির সামনে দেহ পুড়তে দেখেছি’, শ্মশানের স্মৃতিকথা শোনালেন ‘ছবিয়াল’শাশ্বত

শাশ্বত-শ্রাবন্তী জুটির কথা শোনালেন পরিচালক মানস বসু।
Posted: 06:40 PM Dec 07, 2020Updated: 06:40 PM Dec 07, 2020

মানুষের স্বপ্নের কথা বলে ‘ছবিয়াল’ (Chobiyal)। জীবনের টুকরো মুহূর্তগুলিকে এক ফ্রেমে বাঁধে। এই শুক্রবারই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ছবিটি। তাঁর আগে সংবাদ প্রতিদিনের সঙ্গে টেলিফোনিক সাক্ষাৎকারে নানা কথা জানালেন অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় (Saswata Chatterjee) এবং পরিচালক মানস বসু (Manas Basu)। শ্রোতা সুপর্ণা মজুমদার।

Advertisement

সবার প্রথমেই হাবুলের বিষয়ে জানতে চাইব। ‘ছবিয়াল’-এ হাবুলের চরিত্র কেন বেছে নিলে?

শাশ্বত: এই লোকটি ছোটবেলায় একজনকে আদর্শ মানত। তাঁর কাছ থেকে ক্যামেরা পেয়েছিল। শখ ছিল বড় ফটোগ্রাফার হওয়ার। কিন্তু শ্মশানের ফটোগ্রাফার হয়ে যায়। কিন্তু সেখানেও মোবাইলের যুগে কাজ প্রায় নেই। এহেন মানুষের একজনের সঙ্গে প্রেম হওয়ায় নিজেকে স্টুডিওর ভিতরে গুটিয়ে নেয়। এটা নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়।

এই যে শ্মশানের ফটোগ্রাফার, এই বিষয়টা কিন্তু বাংলা সিনেমায় দেখা যায়নি।

শাশ্বত: আসেনি। সত্যি বলতে আমিও দেখেছি মানুষকে এভাবে ছবি তুলতে দেখেছি। এখন তো মোবাইলে সেলফিও তুলতে দেখেছি। এখন এঁরা বেকার হয়ে গিয়েছে। প্র্যাক্টিক্যালি এঁদের কোনও কাজ নেই।

শ্মশানের ‘ছবিয়াল’! এমন বিষয়ের ভাবনা তোমার কেমনভাবে এল মানসদা?

মানস: দেশ’ পত্রিকায় গল্পটি বেরিয়েছিল। একটা অদ্ভুত চরিত্র। একেবারে প্রান্তিক মানুষ। রোজকার চোখে দেখা মানুষগুলোর থেকে এক্কেবারে আলাদা। সেই থেকেই আকর্ষণ।

আচ্ছা, শ্মশান সম্পর্কে একেক জনের একেকরকম অনুভূতি। কারও কাছে শোকের, কারও কাছে আবার শান্তির। তোমার কী মনে হয়?

শাশ্বত: আমার একটা অদ্ভুত নস্ট্যালজিয়া হয় শ্মশানে গেলে। কারণ, আমি রাজা বসন্ত রায় রোডে থাকতাম। কালী পুজোর দিন নিয়ম করে শ্মশানকালীতে গিয়ে বসতাম এবং তখন এত ইলেকট্রিক চুল্লির ব্যাপারও ছিল না। কালী মূর্তির সামনে আমি কাঠে দেহ পুড়তে দেখেছি। সেটা একটা অদ্ভূত অনুভূতি। এখন হয়তো জানি না সেটা আর পাব কিনা কোনওদিন। মানুষ হয়তো ওখানে গিয়ে বসে দার্শনিক হয়ে যায়। আমি যে চুল্লিটার পাশে বসেছিলাম, একজন সধবা মহিলার দেহ ছিল। তাঁর পায়ে আলতা ছিল। সেটা সচরাচর দেখা যায় না।

সেখান থেকে হাবুলের চরিত্রের জন্য কোনও রসদ পেয়েছো?

শাশ্বত: ঠিক রসদ নয়। তবে আমি এই মানুষগুলোকে দেখেছি। তখন একটা পাড়া কালচার ছিল তো। অনেক মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে গেছি। সে চেনা হোক বা অচেনা। এই মানুষগুলো আমার চেনা।

চরিত্রে বাস্তব ও কল্পনা কীভাবে রক্ষা করলে?

শাশ্বত: আমি চরিত্রটা করেছি, বাকি পুরোটাই সামলেছে আমাদের পরিচালক মানস।

মানসদা, একদিকে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অন্যদিকে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee), এই অন্যরকম জুটিকেই কেন বাছলে?

মানস: ২০১৫ সালে যখন চিত্রনাট্য লিখেছিলাম, সেদিনই টিমকে বলে দিয়েছিলাম, এই চরিত্রটা অপুদাই করবে। সেদিন থেকেই নিশ্চিত ছিলাম এই চরিত্রটা আর কাউকে দিয়ে হবে না। অভিনয় তো আছে, তার সঙ্গে সেই চেহারা, মুখাবয়ব। আর যেহেতু স্বপ্নের নারী। স্বপ্নের নারী দেখাতে হলে শ্রাবন্তীই সেরা। শ্রাবন্তী খুবই ভাল অভিনেত্রী। ওর জনপ্রিয়তা প্রচুর। তবে ধৈর্য ধরে সব কথা শুনেছে। আর অপুদা তো অনবদ্য। একদম মেথোডিক্যাল অ্যাক্টিং। আগে থেকে ভাবা আছে, এই সময় এটা করব। এবং সেটা একদম নিখুঁত করে মাপা।

[আরও পড়ুন: টুইটারে অনিল কাপুর ও অনুরাগ কাশ্যপের কোন্দল কীসের? ফাঁস করলেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা]

অপুদা তুমি হাবুলের চরিত্র থেকে কী নিলে?

শাশ্বত: আমি সচরাচর বলি না। কিন্তু এই ধরনের চরিত্র আমাকে আগে কেউ দেয়নি। পাইনি। অনেক ভাল চরিত্র রয়েছে। যাঁদের লোকে নতুনভাবে আবিষ্কার করবে। আমি নিজে ছবিটা দেখার জন্য মুখিয়ে আছি।

এমন কোনও চরিত্র আছে যেটা তুমি ভীষণভাবে করতে চাও?

শাশ্বত: হ্যাঁ! আমি তো অনেকদিন ধরে বলছি। কিন্তু কেউ দিচ্ছে না। বোবার চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। খুবই কঠিন। ছোটবেলায় ‘শ্যামলী’ সিনেমা দেখেছিলাম। কাবেরী বসু করেছিলেন। সেটাই আবার সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় করেছিলেন মঞ্চে। কথা না বলে এক্সপ্রেস করাটা খুবই ডিফিকাল্ট। এটা একটা কারণ। আরেকটা কারণ, সংলাপ না থাকলে আলাদা করে ডাবিংয়ের ডেট দিতে হবে না।

তোমার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল দেখলাম। ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম। তুমি তো মোবাইলও রাখ না। এই সিদ্ধান্ত হঠাৎ?

শাশ্বত: সিদ্ধান্তটা অন্য কারণে। কারণ, আমার ভুয়ো পেজ থেকে অনেকরকম ব্যাপার হচ্ছিল। তো পুলিশের পরামর্শেই আমার এটা করা। নিজস্ব একটা অথেনটিক পেজ থাকা উচিত। যেটা মানুষ জানবে যে এটা আমি। এটা আমি বাধ্য হয়েছি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কিছু অসভ্যতার জন্য। ভুয়ো পাতা থেকে যেসব উদ্ভট ব্যপার হচ্ছিল তা কোনও সুস্থ সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।

মানসদা তোমার কাছে শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন।  অতিমারী পরিস্থিতিতে প্রত্যাশা কেমন?

মানস: আমাদের যা বাজেট তাতে অসুবিধা তাতে অসুবিধা হওয়ার কথা হয়। কিছু দর্শক আসলেও আমরা বেরিয়ে যেতে পারব। আমার ধারণা, কিছু দর্শক আসবেনই। একবার যদি তাঁরা ছবিটি দেখেন, তাহলে জনপ্রিয়তা পেয়ে যাব। এখনও পর্যন্ত ৪২টা মতো সিনেমা হলে রিলিজ করছে। আমরা চেষ্টা করছি আরও সাত, আটটা বাড়াতে।

[আরও পড়ুন: ‘ভাল নেই দিলীপ কুমার’, মনখারাপের খবর শোনালেন স্ত্রী সায়রা বানু]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement