ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কাশী, কোশল, অঙ্গ, মগধ, চোল বংশের মতো ১৬টি জনপদ নিয়ে ষোড়শ মহাজনপদ। বৌদ্ধধর্মে পালি ভাষায় লেখা ‘অঙ্গুত্তর নিকায়’ গ্রন্থে যাদের বিস্তারিত উল্লেখ পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে এই ১৬টি মহাজনপদকে একজোট করে তৈরি হয়েছিল অখণ্ড ভারতবর্ষ। কপিলাবস্তুর শাক্য বংশ ছিল যাদের অন্যতম। যে বংশে জন্মেছিলেন গৌতম বুদ্ধ (Gautam Buddha)। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকে কোশল রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় সেই জনগোষ্ঠী। এই শাক্য বংশের শুরুর দিকে প্রচলন ছিল ‘জনপদা মুদ্রা’-র। তাদের কিছু নিদর্শন এখন কলকাতায় (Kolkata)!
শুক্রবার থেকে তাদের নিয়ে প্রদর্শনী চলছে শহরে। ইতিহাসে জানা যায়, কোনও কেন্দ্রীয় রাজশক্তি ছিল না সেসময়। নেপাল (Nepal) বা ভারত (India) বলে সে সময় পৃথক পৃথক কোনও রাষ্ট্র ছিল না। এই প্রদর্শনীতে এক অর্থে সেই সময়টাকেই ধরা হয়েছে। বালিগঞ্জের একটি শপিং মলে এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর থিম তাই এবার নেপাল। আজ, রবিবার তার শেষদিন।
[আরও পড়ুন: মেয়ের জন্মদিনে দেরিতে ফেরা নিয়ে অশান্তি, লাভপুরে স্বামীকে শিক্ষা দিতে এ কী করলেন বধূ!]
এই প্রথম নিউমিসম্যাটিক সোসাইটি অফ ক্যালকাটার পাশাপাশি নেপাল নিউমিসম্যাটিক সোসাইটির সঙ্গে এমন মুদ্রা উৎসবের আয়োজন হয়েছে। রয়েছে নেপালের নানা সময়ের নানা রাজত্বের মুদ্রা ও নোট। পরবর্তীকালে ভারতীয় নানা মুদ্রার সংগ্রহও বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করেছে। যাদের প্রতিটির ঐতিহাসিক ও আর্থিক মূল্য অপরিসীম। শাক্য (Shakya)বংশের ওই বিশেষ মুদ্রাটিই যেমন! আকারে চৌকো এই মুদ্রার ব্যবহার বাড়ে সে সময়ের বাণিজ্য বিস্তারে। হাতে গরম অভিজ্ঞতা হয়তো সে সবের পাওয়া যাবে না। কারণ, নিরাপত্তার কারণেই তাদের ছোঁয়া বারণ। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত শহর অন্তত বেশ গরম থাকবে এইসব মুদ্রার ধার ও ভারে। আর কী কী থাকছে সেই সব সংগ্রহে? রয়েছে প্রথম চন্দ্রগুপ্তর সময়ের মুদ্রা। রয়েছে নেপালের আরেক রাজা প্রতাপ মল্লের সময়ের মুদ্রা।
[আরও পড়ুন: ‘মাস্ক পরুন, সজাগ থাকুন’, বছর শেষের ‘মন কি বাতে’ প্রধানমন্ত্রীর মুখেও করোনা সতর্কতা]
নিউমিসম্যাটিক সোসাইটি অফ ক্যালকাটার তরফে রবি শর্মা জানাচ্ছেন, এই প্রতাপ মল্লের সঙ্গে বিবাহসূত্র আবদ্ধ হয়েছিল কোচবিহার (Cooch Behar)। কোচবিহারের মহারাজা প্রাণ নারায়ণের বোন রূপমতী দেবীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল প্রতাপ মল্লের। তাঁদের বিয়ের ঘটনাকে স্মরণ করে কিছু মুদ্রা তৈরি হয়েছিল। প্রদর্শনীতে রয়েছে সেসবও। নেপালের লিচ্ছবি বংশের রাজকন্যার সঙ্গে আবার বিয়ে হয়েছিল প্রথম চন্দ্রগুপ্তর। রয়েছে সে সময়েরও বেশ কিছু মুদ্রা।