সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) ফের আক্রান্ত সংস্কৃতির পীঠস্থান। মৌলবাদীদের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবেড়িয়ার বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র (Allauddin Khan) সংগীত ভবনটি পুড়ে গিয়েছে। একাধিক বাদ্যযন্ত্র, নথিপত্র, স্বরলিপি-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সম্পূর্ণ ভস্মীভূত। তবে উস্তাদের ব্যবহৃত সরোদটি অক্ষত রয়েছে। গোটা বাড়ির ধ্বংসস্তূপের ধারে তা পড়ে থাকতে দেখা গেল। এর আগে ২০১৬ সালে এই প্রতিষ্ঠানের বেশ খানিকটা অংশ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে এই ঘটনার সঙ্গে তার বিস্তর ফারাক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
গত সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে হিংসাত্মক আন্দোলনে নেমেছে মৌলবাদীদের একটা গোষ্ঠী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) বাংলাদেশ সফরের তাঁদের এই বিরোধিতা। তিনি সফর সেরে দেশে ফিরে এলেও হেফাজতের তাণ্ডব চলেই। যদিও পুলিশ প্রশাসন কড়া হাতে তা দমন করেছে। তবে তার আগেই বিপদ যা হওয়ার, হয়ে গিয়েছে। ব্রাহ্মণবেড়িয়ায় বিখ্যাত দি আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গনটিও মৌলবাদীদের তাণ্ডবের শিকার। বিখ্যাত সংগীত প্রতিষ্ঠানটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়, প্রতিটি ঘরে হামলাও চলে বলে অভিযোগ। তিনটি শ্রেণিকক্ষ, প্রশাসনিক কক্ষ, বাদ্যযন্ত্রের মিউজিয়ামটিতে ভাঙচুর চলে। প্রায় গোটা বাড়িটি পুড়ে গিয়েছে। তবে সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও অক্ষত রয়েছে উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র ব্যবহৃত সরোদটি।
[আরও পড়ুন: হেফাজতের সাত মামলায় কাঠগড়ায় সাড়ে ৮ হাজার, পরিস্থিতি সামলাতে কড়া শাসকদল]
প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এভাবে পুড়তে দেখে স্বভাবতই শোকস্তব্ধ ছাত্রছাত্রী থেকে কর্মী, সকলেই। এক রাতের মধ্যেই যে এত নামী প্রতিষ্ঠানটি ভস্মীভূত হয়ে যেতে পারে, কেউ বিশ্বাসই করতে পারছেন না যেন। দি আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গনের নিরাপত্তা রক্ষা প্রবীন্দ্র দাস জানান যে তিনি প্রতিষ্ঠানের একটি ঘরে থাকেন। ওই ঘর এবং আরও কয়েকটি ঘর ছাড়া আর সবই পুড়ে গিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। তাঁর অভিযোগ, মৌলবাদীদের ভয়ে এই ধ্বংসলীলা থেকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেননি। প্রতিষ্ঠান সূত্রে খবর, এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে দুর্লভ আড়াইশোটি বই, আড়াই হাজার ছবি, দলিলপত্র, আলাউদ্দিন খাঁ’র লেখা সংগীতের স্বরলিপি, সংগীতের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। নষ্ট হওয়া বাদ্যযন্ত্রগুলির মধ্যে রয়েছে ১২টি হারমোনিয়াম, সেতার, তবলা, বেহালা ও সরোদ। সবমিলিয়ে অন্তত ৩৫ লক্ষ টাকার যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়েছে বলে খবর।