দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: এবার মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের জালে ধরা পড়ল ভুয়ো ডিএসপি (Fake DSP) পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার। ধৃতের নাম সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। বাড়ি চন্দননগরের বক্সি গলিতে।বুধবার রাতে চন্দননগর (Chandannagar) স্ট্যান্ড থেকে মদ্যপ অবস্থায় ওই ভুয়ো পুলিশ অফিসারকে গ্রেপ্তার করে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ। চন্দননগর থানার ১০০ মিটারের মধ্যে হুটার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্টিকার সাঁটানো স্করপিও গাড়িতে বসে দুই সঙ্গীর সঙ্গে রীতিমতো মদের আসর বসিয়েছিল ‘গুণধর’ সিদ্ধার্থ। পরনে ছিল ডিএসপি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারের পোশাক। কারও নজরে যাতে না পড়ে তার জন্য গাড়ির জানালার কাঁচও তোলা ছিল। তাতেও শেষরক্ষা হল না।
বুধবার গভীর রাতে চন্দননগর থানার অদূরে স্ট্যান্ড এলাকার রানীঘাটে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্টিকার লাগানো নীলবাতির হুটার লাগানো গাড়িটি নিয়ে সন্দেহ ছিল টহলরত পুলিশের। গাড়ির সামনে লাল বাতি লাগানো ছিল। গাড়িটির ভিতরে নজর পড়তেই রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের! দেখেন সামনের আসনে ডিএসপি’র পোশাক পরে বসে মদ্যপান করছেন সিদ্ধার্থ। আর তাকে সঙ্গ দিচ্ছে দু’ জন। এরপরই চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ সিদ্ধার্থ ও তার দুই সঙ্গীকে থানায় নিয়ে যান। পুলিশের দীর্ঘ জেরায় শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে সিদ্ধার্থ। পুলিশের দাবি, নিজের কুকীর্তির কথা স্বীকার করে নেয় সে।
[আরও পড়ুন: আত্মীয়ের ঋণ শোধ করতে না পারায় মানসিক অবসাদ! মর্মান্তিক পরিণতি হাওড়ার মা-ছেলের]
জানা গিয়েছে, ধৃত সিদ্ধার্থ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। চন্দননগরের একটি কলেজ থেকে ২০১৩ সালে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে পাস করে। এরপর বেশ কিছুদিন সে বিভিন্ন ব্যক্তির গাড়ি চালাত। একসময় জেলা প্রশাসনের গাড়িও চালাত বলেই দাবি করে অভিযুক্ত। পরবর্তীকালে একটি ওষুধের কোম্পানিতে কিছুদিন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজ করে। পরে কাজ ছেড়ে দিয়ে ভুয়ো ডিএসপি অফিসারের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা শুরু করে। বছর তিনেক আগে বিয়েও করেছে। স্ত্রী একটি বেসরকারি নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা।
শিক্ষিত পরিবারের ছেলে সিদ্ধার্থ কেন এই ধরনের কাজ বেছে নিল এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহ এই কাজে অভিযুক্তকে সাহায্য করার জন্য প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকতে পারে। চন্দননগরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা ওই ব্যক্তিকে পুলিশ অফিসার বলেই জানতেন। কিন্তু পুলিশের পোশাকের আড়ালে যে এত বড় প্রতারণার গল্প লুকিয়ে ছিল, তা কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি। বুধবার ধৃতকে চন্দননগর মহকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।