দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সরকারি অনুমতি ছাড়া জঙ্গলে প্রবেশ করে বাঘের (Tiger) আক্রমণে নিহত হলে মিলত না কোনও সরকারি সাহায্য। হত না মৃতদেহের ময়নাতদন্ত। কোনওরকমে লুকিয়ে দেহটা দাহ করত আত্মীয়–পরিজনরা। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে। আর তাই এখন ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বাঘের হানায় নিহতের পরিবারের হাতে এসে পৌছাল সরকারি সাহায্য। যা সুন্দরবনে(Sunderban) এই প্রথম।
এর আগে কখনও বাঘের আক্রমণে নিহত হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে মৎস্যজীবী পরিবারের হাতে সরকারি সাহায্য এসে পৌঁছায়নি। তবে শনিবার দুপুরে গোসাবা বিডিও অফিসে এই সরকারি সাহায্য প্রদান করা হয় নিহত মৎস্যজীবীর পরিবারের হাতে। দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পেয়ে খুশি ওই মৎস্যজীবী পরিবারও।
[আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্ত ৪০০০ ছুঁইছুঁই, আশার আলো একমাত্র সুস্থতার হার]
গত শুক্রবার দুপুরে সুন্দরবনের (Sundarban) লাহিড়ীপুর গ্রামের মৎস্যজীবী শশাঙ্ক মন্ডল বিনা অনুমতিতে দুই সঙ্গীকে নিয়ে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন। সেখানেই বাঘের আক্রমণে নিহত হন। এরপর খবর পৌঁছায় মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরের। সেই মতো ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয় নিহত মৎস্যজীবী পরিবারের জন্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলাগানাথান এদিন বিডিও অফিসে এসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে এই আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। উপস্থিত ছিলেন গোসাবার BDO সৌরভ মিত্র ও বিধায়ক (MLA) জয়ন্ত নস্করও।
এ বিষয়ে জেলাশাসক বলেন, ‘দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি সাহায্য পাওয়ার ঘটনা এই প্রথম ঘটল। এর আগেও বাঘের আক্রমণে নিহতরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তবে এত দ্রুত কখনও হয়নি। বিষয়টি নিয়ে জরুরী বিপর্যয় দপ্তর ও বনদপ্তরকে জানানো হয়েছিল। সেইমতো অর্থ বরাদ্দ করা হল। পরবর্তীতে কোন মৎস্যজীবীর বাঘের আক্রমণে নিহত হলে একই পদ্ধতিতে তাঁর পরিবারও ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’
[আরও পড়ুন: রেলকর্মীদের ট্রেনে উঠতে চেয়ে হাওড়ায় ফের বিক্ষোভ, আরপিএফের সঙ্গে হাতাহাতিতে ধুন্ধুমার]
গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের কথায়, ‘‘এর আগে সরকারিভাবে অনুমতি নিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীরাই শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণ পেত। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে যথেষ্ট সময় লাগত। অন্যদিকে, অনুমতিহীন মৎস্যজীবীরা বাঘের আক্রমণে নিহত হলেও কোনরকম সরকারি ক্ষতিপূরণ পেতেন না। দেহের ময়নাতদন্তও হত না। শুক্রবারেও নিহত মৎস্যজীবীর দেহের ময়না তদন্ত হয়নি। তা সত্ত্বেও সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা দেওয়া হলো। নিহতের স্ত্রী কবিতা মন্ডল এদিন গোসাবা বিডিও অফিসে এসে সরকারি সাহায্য গ্রহণ করেন।’’