সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে জেল হেফাজতে থাকা কবি-সমাজকর্মী ভারভারা রাওয়ের (Varvara Rao) পরিবারের। অশীতিপর কবি করোনা পজিটিভ হওয়ার পর তাঁকে সংশোধনাগার থেকে হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এটুকুই। তারপর থেকে আর তাঁর কোনও খবরই পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা। চরম উদ্বেগে দিন কাটছে তাঁদের। এবার বাধ্য হয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি লিখে পরিবারের আরজি, উনি কেমন আছেন, সেটুকু জানার ব্যবস্থা করে দিন।
মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁওয়ে এক দলিত সমাবেশে মাওবাদী যোগের সূত্র ধরে বছর দুই আগে পুলিশের নজরবন্দি হয়ে পড়েছিলেন বিশিষ্ট কবি-সমাজকর্মী ভারভারা রাও। সেটা ২০১৮ সালের ঘটনা। ভারভারা রাওয়ের পাশাপাশি আরও ৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাওবাদী যোগের অভিযোগ তুলেছিল পুলিশ। তাঁদের অনেককেই গ্রেপ্তারও করা হয়। এরপরই এলগার পরিষদ মামলা নিয়ে পুলিশের বিরোধিতায় সরব হয় বিশিষ্টদের একটা বড় অংশ। পুলিশ পালটা অভিযোগ তোলে, দলিতদের আড়ালে এই সংগঠনের আসলে নিষিদ্ধ মাওবাদীদের সরাসরি যোগাযোগ আছে। সেসময় ভারাভারা রাও-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ২০১৮’র নভেম্বর মাসে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ভারভারা রাওকে। সেই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়েছিল।
[আরও পড়ুন: নির্বাচনে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীকে সমন পাঠাল আদালত]
সেই থেকে জেলবন্দি দেশের পিছিয়ে পড়া জনজাতির প্রতি দরদী এই কবি। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় বারবার জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পরিবারের তরফে আবেদন জানানো হয়েছিল, তাঁকে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তালোজা সংশোধনাগারে সেটুকুও হচ্ছে না, এই অভিযোগে সরব হন বিশিষ্টরা। পরে চাপে পড়ে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। তবে পুলিশ প্রশাসন এমন একজনের প্রতি যথারীতি কোনও সহমর্মিতা দেখায়নি। অসুস্থতার কারণে ভারভারার জামিনের আবেদন খারিজ করতে গিয়ে তদন্তকারীরা বলেছিলেন, ‘সবই জামিন নেওয়ার অজুহাত।’
[আরও পড়ুন: কেরল ও কর্ণাটকে ঘাপটি মেরে রয়েছে ISIS জঙ্গিরা, রাষ্ট্রসংঘের নয়া রিপোর্টে চাঞ্চল্য]
চলতি মাসের ১৬ তারিখ ভারভারার করোনা (Coronavirus) পরীক্ষা হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তারপর তাঁকে মুম্বইয়ের সেন্ট জর্জেস হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। সেখান থেকে একবার নানাবতী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় স্নায়ুর চিকিৎসার জন্য। এই পর্যন্ত তথ্য রয়েছে পরিবারের কাছে। কিন্তু তারপর কীভাবে তাঁর চিকিৎসা চলছে, কেমন আছেন ৮০ বছরের কবি, সে সম্পর্কে কিছুই জানে না পরিবার। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চিঠি লিখে ভারভারা রাওয়ের আত্মীয়রা রীতিমতো কাকুতি-মিনতি করেছেন যে একটিবার যেন তাঁর স্বাস্থ্যের খবর দেওয়া হয়। অন্তত তিনি কেমন আছেন, সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য যেন জানানো হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, এভাবে পরিবারকে অন্ধকারে রেখে আসলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
The post কোনও খবরই নেই করোনা আক্রান্ত কবি ভারভারা রাওয়ের, চরম উদ্বিগ্ন পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.