সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “স্রেফ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কৃষি আইন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিরোধীরা। আজ যারা কৃষকদের জন্য এত বড় বড় কুম্ভীরাশ্রু ফেলছেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন তাঁরা কোন কাজটা করেছেন বলতে পারেন? ওঁদের নীতিতে গরিব আরও গরিব হয়েছে। কৃষকদের দুরবস্থা দেখেও ওঁরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।” নতুন কৃষি আইন (Farm Laws) নিয়ে ভুল বোঝানোর অভিযোগ তুলে বিরোধীদের তুলোধোনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মতিথিতে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির কিস্তি বাবদ ১৮ হাজার কোটি টাকা কৃষকদের জন্য বরাদ্দ করলেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই সঙ্গে কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের যাবতীয় ভ্রান্ত ধারণা দূর করারও চেষ্টা করলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাফ কথা, মানুষের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিজেদের প্রাসঙ্গিক করে তোলার জন্য ভুরি ভুরি মিথ্যাচার করছে। কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছে, দ্বিমুখী নীতি নিয়ে চলছে। এঁরা কেরলে, পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের স্বার্থে আন্দোলন করে না, অথচ পাঞ্জাবে গিয়ে কৃষকদের ভুল বোঝায়। দেশের একেক রাজ্যে গিয়ে একেক রকম কথা বলছেন। মোদির অভিযোগ, বিরোধীরা কৃষকদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি চালানোর চেষ্টা করছেন। কংগ্রেসের থেকে এদিন মোদির লক্ষ্যে মূলত ছিলেন বামেরা। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, কৃষি আইনের আড়ালে এঁরা নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা ফলানোর চেষ্টা করছে। আগে আন্দোলন শুরু হয়েছিল এমএসপির (MSP) দাবিতে। কিন্তু এখন সেটা পরিণত হয়েছে দেশদ্রোহীদের ছাড়ানোর দাবি, টোল ট্যাক্স বাতিল করার দাবিতে। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, “কিছু মানুষ সামান্য কিছু কৃষককে বিভ্রান্ত করে দেশের অর্থনীতিকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে, দিল্লির মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করতে চাইছে।” তবে, কংগ্রেসকেও একেবারে ছেড়ে কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, “আজকাল কেউ কেউ কৃষকদের জমি নিয়ে খুব চিন্তা করছেন। কিন্তু, কৃষকদের জমি নিয়ে কেলেঙ্কারিতে কাদের কাদের নাম জড়িয়েছে, আমরা সকলেই জানি।” প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের (Congress) বহু নেতার বিরুদ্ধেই জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে হাই প্রোফাইল নাম প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরা।
[আরও পড়ুন: ‘রাজনৈতিক স্বার্থে কৃষকদের বঞ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার’, ফের তৃণমূলকে তোপ মোদির]
প্রধানমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দেন, নতুন এই কৃষি আইন চালু হলে কৃষকরা যে কোনও জায়গায় নিজেদের ফসল বিক্রি করতে পারবেন। কেউ চাইলে ন্যূনতম সমর্থন মূল্যে সরকারি মান্ডিতেও ফসল বিক্রি করতে পারবেন। সরকার নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পরও এমএসপিতে রেকর্ড অঙ্কের ফসল কিনেছে। আগামী দিনেও কিনবে। নতুন আইনের ফলে কৃষকদের কাছে বিকল্প বাড়বে। মোদি এদিন আশ্বস্ত করেন, নতুন আইন পাশ হওয়ার পর কৃষকদের স্বার্থে বিন্দুমাত্র আঘাত লাগবে না। উলটে যে সংস্থাগুলি কৃষকদের ফসল কিনবে, তাদের ঝুঁকি নিতে হবে। ফসল নষ্ট হলে যেমন এই সংস্থাগুলিই ক্ষতিপূরণ দেবে, তেমনি লাভ বেশি হলে কৃষকদের বোনাস দিতেও বাধ্য থাকবে। বিরোধী দলগুলির কাছে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ, দয়া করে নিজেদের স্বার্থে কৃষকদের ক্ষতি করবেন না।