সৈকত মাইতি, তমলুক: এবার ভাঙন রোধের পাশাপাশি রূপনারায়ণের পাড়জুড়ে শোভা বাড়াবে কেরল থেকে আনা নারকেল চারা। সেই লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী বছর বর্ষার আগেই লক্ষাধিক নারকেলের চারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়েছে। এবিষয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস বলেন, “প্রতি বছরই বনমহোৎসব সপ্তাহ উপলক্ষে রকমারি চিরহরিৎ বৃক্ষ ও ফলের চারাগাছ বিতরণ করা হয়ে থাকে। তবে চলতি বছর নদী কিংবা সমুদ্রের ভূমিক্ষয় রোধে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে নারকেলের চারা আরও বেশিমাত্রায় রোপণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত উপকূলীয় এলাকাগুলিতে বেশি পরিমাণ নারকেল গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে ভূমিক্ষয়ের দরুণ রূপনারায়ণের ভাঙন রোধের জন্যও এই নারকেলের চারা রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজেই নদীর পাড় ও দিঘা উপকূলীয় এলাকায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মাধ্যমেই সেই চারা বিতরণ করা হবে। আর সেই লক্ষ্যেই ইতিমধ্যে পূর্ব উপকূলীয় প্রজাতির প্রায় ৯০ হাজার ও ১০ হাজার কেরলের ডুয়ার্থ প্রজাতির নারকেলের চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে। মোট ২০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে এই নারকেলের চারা প্রতিপালন করা হচ্ছে খেজুরি ১ ব্লকের ইড়িঞ্চি ফার্মে। এর জন্য প্রতিটি দল পিছু ৫০০টি করে কর্মদিবস ধার্য করা হয়েছে। ফলে প্রায় দশ হাজার শ্রমদিবসও তৈরি হবে।
[আরও পড়ুন: পরিত্যক্ত কয়লা খাদানে মাছ চাষ, ব্যতিক্রমী ভাবনা মৎস্য দপ্তরের]
প্রশাসনিক আধিকারিকদের দাবি, পূর্ব উপকূলীয় প্রজাতির নারকেল গাছগুলি উচ্চতায় অনেক লম্বা। উলটোদিকে, কেরালিয়ান ডুয়ার্থ প্রজাতির নারকেল গাছগুলি আবার হলদেটে, বেশ বেঁটেখাটো রকমের। তাছাড়া, এই নারকেলের চারা থেকে খুব অল্পদিনে অর্থাৎ ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যেই ফল পাওয়া যায়। ফলনও বেশি। তাছাড়া ছোট ধরনের এই নারকেল গাছ হওয়ায় গাছে ওঠার ঝক্কি অনেকাংশেই কম। ফলে ভূমিক্ষয় রোধের পাশাপাশি এই নারকেল গাছ রূপনারায়ণ কিংবা দিঘার উপকূলীয় পাড়গুলিতে সৌন্দর্যায়নেও কাজে লাগবে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের। তমলুকে রূপনারায়ণের ভাঙন রোধে সম্প্রতি পাঁশকুড়ার বৃক্ষমিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শচীনন্দন সামন্ত, হরিপদ দোলইদের নেতৃত্বে লাগানো হয় প্রায় তিনশোর বেশি তালগাছের চারা। সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের (তমলুক) প্রকল্প আধিকারিক উত্তমকুমার লাহা বলেন, “চলতি বছর দু’টি ভিন্ন প্রজাতির এক লাখ নারকেল চারা উৎপাদন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী জুন মাসে বর্ষা নামার সঙ্গে সঙ্গেই এই চারা বিতরণ করা হবে।”
The post লক্ষ্য নদীভাঙন রোধ ও আয়, নারকেল চাষে মন কৃষকদের appeared first on Sangbad Pratidin.