সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাসিকের কৃষকদের দেখানো পথেই মুম্বইয়ের রাজপথ দখল নিলেন থানের অন্তত ২০ হাজার কৃষক৷ কৃষিঋণ মকুব-সহ একগুচ্ছ দাবিতে থানে থেকে দু’দিনের প্রতিবাদ-যাত্রা ধেয়ে আসছে দেশের আর্থিক রাজধানীর দিকে৷ আজ, বৃহস্পতিবার পদযাত্রা শেষ হবে মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে৷ নাসিকের কৃষক বিদ্রোহের উত্তাপ মিটতে না মিটতে প্রায় আট মাসের ব্যবধানে থানের কৃষকদের প্রতিবাদ-যাত্রায় অস্বস্তিতে পড়েছে মহারাষ্ট্রের ফড়ণবিস সরকার৷
[মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত তামিলনাড়ু, সাত জেলায় বন্ধ স্কুল-কলেজ]
চলতি বছর মার্চে নাসিকের কৃষকদের আন্দোলনের কাছে নতজানু হয়ে সরকার প্রায় অধিকাংশ দাবি মেনে নিতে বাধ্য হতে হয়েছিল৷ এবারও সেই আন্দোলনের ধাঁচে মারাঠা রাজ্যে ফের পথে নেমেছেন কৃষকরা। তাঁদের দাবিগুলির মধ্যে কৃষিঋণ মকুব ছাড়াও রয়েছে স্বামীনাথন কমিটি রিপোর্ট (যেখানে কৃষকদের জমি ও জলের উপর নিয়ন্ত্রণ সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে) কার্যকর ও বনভূমি অধিকার আইন অনুসারে উপজাতিদের হাতে বনের অধিকার অর্পণ, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য এবং তা কার্যকর সুনিশ্চিত করতে বিচারবিভাগীয় পদ্ধতি গঠন এবং সেচ এলাকায় প্রতি একরে ১ লক্ষ টাকা ও অ-সেচ এলাকায় প্রতি একরে ৫০ হাজার টাকা খরাজনিত ক্ষতিপূরণ।
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে বাণিজ্যনগরীর পথে এগিয়ে আসছেন ২০ হাজারের বেশি কৃষক৷ থানে থেকে ২১ কিমি পথ হেঁটে বুধবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ের সোমাইয়া গ্রাউন্ডে পৌঁছান৷ সেখানে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়ে আজ, সকালে ফের আজাদ ময়দানে দিকে যাত্রা শুরু করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা৷ নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজাদ ময়দানে জনসভার ডাক দিয়েছে লোক সংঘর্ষ মোর্চা৷ এদিনের এই কর্মসূচিতে বিপর্যস্ত হয় শহরের যান চলাচল৷ বেশ কিছু রুটে যান নিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য হয় পুলিশ৷ সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে মিছিলের জেরে যানজট তৈরি হলেও কৃষকদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন পথচলতি মুম্বইবাসী৷
[চলন্ত বাসে মহিলার সামনে হস্তমৈথুন, মুখ ফিরিয়ে রইলেন সহযাত্রীরা]
কৃষক-দলিতদের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে ‘লোক সংঘর্ষ মোর্চা’র সদস্য প্রতিভা শিণ্ডে বলেছেন, “মহারাষ্ট্রজুড়ে কৃষকরা অনাহারে মরছে৷ ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু, তাতেও সরকার নিষ্ক্রিয় রয়েছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সরকার যখন আমাদের কাছে আসছে না, তখন আমরাই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারের দিকে ধেয়ে যাব।” সংগঠনের স্পষ্ট বক্তব্য, সরকার যদি আন্দোলনকারী কৃষকদের ঋণ মকুব না করে, তাহলে এর পর ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে সরকারকে।
এই বছরের মার্চে সারা ভারত কৃষকসভার ডাকে নাসিক শহর থেকে পায়ে হেঁটে প্রায় ১৮০ কিমি দূরত্ব পেরিয়ে দেশের বাণিজ্য রাজধানী মুম্বই অভিযান করেছিলেন ৫০ হাজার কৃষক। কৃষকদের লং মার্চের বার্তা সংবাদমাধ্যমের হাত ধরে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। পরে, কৃষকদের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে বাধ্য হন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। কিন্তু অভিযোগ, সেই সময়ে নাসিকের কৃষকদের জন্য সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও বঞ্চিতই থেকে যান থানের কৃষকরা। তাই এবার পথে নেমে পড়েছেন থানের কৃষকরাও।
The post আট মাসের ব্যবধানে জোড়া কৃষক বিদ্রোহে অস্বস্তিতে ফড়ণবিস সরকার appeared first on Sangbad Pratidin.