স্টাফ রিপোর্টার: নোনা মাটিতে এ ধান দিব্যি ফলে। ভাতের স্বাদ আর পাঁচটা ধানের চালের মতোই। গতবার আমফান (Cyclone Amphan) হয়ে যাওয়ার পরপরই এই স্বর্ণ ধানের উদ্ভাবনী ক্ষমতা সামনে আসে। বিস্তারিত গবেষণা করে তখনই এই ধানের চাষ শুরু করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তখনও কিছুটা গবেষণার কাজ বাকি ছিল। সেসব সেরে এবার একেবারে প্রস্তত। সাইক্লোনে নোনা জলে ডুবে হয়ে যাওয়া জমিতে আর ক’দিনের মধ্যেই স্বর্ণ ধানের বীজ তলা তৈরি হবে। তার পর হবে রোপন। কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, ৯৬ হাজার হেক্টর জমিতে পোঁতা হবে এই বীজ।
দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি মিলিয়ে ঝড়-জলে নষ্ট হয়েছে ১.৫৪ লক্ষ হেক্টর জমি। নোনা জল ঢুকে হয় ফসল নষ্ট করেছে। নয়তো নষ্ট করেছে জমির উর্বরতা। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ৯৬ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমির। অন্যান্য ক্ষেত্রে কিছু ফসল বাঁচানো গেলেও এই অংশের জমির পুরোটাই নষ্ট। জমিও জলের তলায়। গত কয়েকদিন ধরে সেই জল বের করার কাজ চলছে। তা পুরোপুরি বেরিয়ে গেলেই এই ধানের চাষ হবে। দপ্তরের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের (Sovandeb Chattopadhyay) কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আগেরবারই এই ধান নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বলেছিলেন। এভাবে ঝড়, জল হবেই। তাকে আটকানো যাবে না। কিন্তু তা বলে তো জমি তৈরির জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করা যায় না। তখনই স্বর্ণ ধানের গবেষণা সামনে আসে। গবেষণা করে যে ফল মিলেছিল, তাকেই বাস্তবের মাটিতে আনার কাজ শুরু হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘যশে’র জেরে টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পূর্ব বর্ধমানের কৃষকরা, কমপক্ষে ১২৫ কোটির ফসল নষ্টের আশঙ্কা]
সাইক্লোনের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে মোটামুটি পেকে ওঠা বোরো ধান কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কৃষি দপ্তর। কিন্তু তিল, বাদাম, সূর্যমুখী গাছের জমির প্রায় বেশিরভাগটাই গিয়েছে জলের তলায়। ফসলের প্রায় সবটাই নষ্ট হয়েছে। সাকু্ল্যে যে ক্ষতির পরিমাণ দু হাজার ১১০ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। বাদাম, তিলের জমি থেকে আপাতত জল সরানোর কাজ চলছে। এর মধ্যেই খারিফ মরশুম আসছে। যেখানে দুর্যোগ হয়নি সেখানে খারিফ শস্য বোনার কাজই হবে। ওই একই সময়ে নোনা জমিতে বপন করা হবে স্বর্ণ ধানের বীজ।