সৈকত মাইতি, তমলুক: বীরভূমের (Birbhum) ভুবন বাদ্যকারের কাচা বাদাম গান ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফাঁড়া কাটতে সেই বাদাম চাষে উৎসাহ যেন শিখরে উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরে। ধান, পানের বিকল্প হিসেবে চলতি রবি মরশুমে চাহিদা তুঙ্গে থাকায় অতিরিক্ত লাভের আশায় দিনরাত্রি এক করে বাদাম রোপণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন জেলার চাষিরা। উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি দপ্তরও।
স্থানীয় ও জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট কৃষিক্ষেত্রের মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে এই বাদাম চাষ হয়ে থাকে। মূলত দোঁয়াশ মাটি হিসেবে এগরা ব্লক জেলার বাদাম চাষের ক্ষেত্রে ভূমি হিসেবে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। তবে এর পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর, পাঁশকুড়াতেও বাদাম চাষ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শীতের মরশুমে রবি ফসল হিসেবে জেলার অর্থকারী ফসল বাদাম চাষ জানুয়ারি থেকেই রোপণের কাজ শুরু হয়। মাত্র ১২৫ দিনের মধ্যেই চাষিরা তাদের লাভের ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হন। বিগত শীতের মরশুমে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও জেলার বাদাম চাষিরা সাফল্যের সঙ্গে বাদাম চাষ করে বেশ খানিকটা বাড়তি উপার্জনে সক্ষম হয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: শীতের মরশুমে খেজুর রস থেকে গুড় তৈরি করে মোটা টাকা আয়ের সুযোগ, জানুন পদ্ধতি]
এসবের মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে কাঁচা বাদামের একটি লোকসংগীত জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠে। এতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে চলতি মরসুমে বাড়তি উৎসাহ নিয়ে বাদাম চাষে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন জেলার চাষিরা। কৃষিদপ্তরের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই উৎসাহী চাষিদের নিয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে একটি প্রদর্শনী ক্ষেত্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর জন্য জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
জেলার এক বাদাম চাষির কথায়, বিগত কয়েক বছর ধরে ধান চাষের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে বাদাম চাষ কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক। তাছাড়া বাজার জুড়ে চাহিদা থাকায় এখন অনেকেই ধান চাষের ছেড়ে বাদাম চাষের ক্ষেত্রে বেশি করে উৎসাহিত হচ্ছেন। জেলা যুগ্ম কৃষি আধিকারিক (শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরা বলেন, “বাড়তে থাকা চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবছরও চাষিদের বাদাম চাষের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য উৎসাহী চাষিদের বিনামূল্যে বাদাম বীজ ও অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করার পাশাপাশি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।”