সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন দিন বেড়েই চলেছে দূষণ। সাধারণ মানুষের মধ্যে দূষণ রোধে সচেতনতা বাড়াতে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। বিশ্ব জুড়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বাড়ছে পাটের ব্যবহার। আর এই অতিরিক্ত পাটের যোগান দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে হায়দরাবাদ নুজিভীডু সিডস কোম্পানি। পাটের বিশেষ ফলন রাজা পাটের অধিক উৎপাদন হাসি ফুটিয়েছে চাষির মুখে। গত বছরের তুলনায় এবছর রাজা পাটের ফলনের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদাও বেড়েছে। দামও বেড়েছে দ্বিগুণ। এই অভাবনীয় সাফল্যে খুশি রাজ্যের চাষি ভাইয়েরা।
গত বছরের তুলনায় এবছর পাটের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। গতবছর যেখানে প্রতি কুইন্টাল পাটের দাম ছিল ৪০০০ টাকা, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। ফলে রাজা পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে রাজ্যের বহু কৃষকের। 'এনজে-৭০০৫'- রাজা পাটের এই নতুন প্রজাতিটি ২০২০ সালে উদ্ভাবন করেন নুজিভীডু সিডস সংস্থার গবেষণা বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ মোহাম্মদ মসিউর রহমান। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে চাষিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এই উচ্চমানের পাট বীজের জনপ্রিয়তা।
রাজা পাটের আঁশ সাধারণ পাটের তুলনায় অনেক লম্বা ও উন্নতমানের। অন্য প্রজাতির তুলনায় একর প্রতি অন্তত ২ কুইন্টাল বেশি উৎপাদন মেলে। সঙ্গে থাকে কম খরচে চাষ, মোটা ছাল, বেশি লম্বা গাছ (প্রায় ২ ফুট বেশি) ও ভালো মানের আঁশ। যার ফলে চাষিরা একর প্রতি অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভের মুখ দেখছেন। এই অভাবনীয় সাফল্যে খুশি রাজ্যের চাষিরা।
চাষিরা জানান, আগে তারা অন্য প্রজাতির পাট চাষ করতেন। কিন্তু ফলন ও লাভের পরিমাণ ছিল তুলনামূলক অনেকটাই কম। রাজা পাট চাষ শুরুর পর থেকে তাদের আর্থিক অবস্থা অনেকটাই উন্নত হয়েছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, আগের থেকে অনেক বেশি আয় হচ্ছে এই পাট চাষ করে। তারা বলেছেন, 'রাজা পাট শুধু ফসল নয়, চাষিদের ভাগ্যবদলের হাতিয়ার।'
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, রাজা পাট ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই ও লাভজনক উৎপাদন। বর্তমানে ভারতে যে ধরনের পাট চাষ হয়, তার আঁশের গুণমান বাংলাদেশের তুলনায় কম। ফলে শিল্পক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হয়। কিন্তু রাজা এনজে-৭০০৫ সেই সমস্যা দূর করতে সক্ষম বলে দাবি গবেষকদের।
এখনও যারা রাজা পাট চাষ শুরু করেননি, তারা বাজারের চড়া দামের খবর শুনে ও প্রতিবেশী চাষিদের সাফল্য দেখে আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, আগামী মরসুমে তাঁরা নিশ্চিতভাবে এই বীজ দিয়ে চাষ করবেন। অর্থাৎ রাজা পাট এখন শুধু একটি বীজ নয়, গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত শক্ত করার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠছে। দাম, মান, ফলন সব দিক থেকেই কৃষকদের জন্য সেরা পছন্দ হয়ে উঠেছে এই নতুন প্রজাতির পাট।
