সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: প্রাণীজ খাদ্য মাংস ও দুধ উৎপাদনে সমগ্র দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে বাংলা। ফের কেন্দ্রের রিপোর্টে মিলল বাংলার এই স্বীকৃতি। কেন্দ্র সরকার গত নভেম্বর মাসের শেষে তথ্য,পরিসংখ্যান দিয়ে যে রিপোর্ট পেশ করেছে তাতেই ধরা পড়ে প্রাণীসম্পদ ক্ষেত্রে বাংলার সাফল্য। তবে শুধু মাংস ও দুধ উৎপাদনে নয় ডিম উৎপাদনেও সারা দেশের মধ্যে বাংলার অবস্থান চতুর্থ।
কিন্তু বৃদ্ধির হারের নিরিখে বাংলা এখন পয়লা নম্বরে। ডিম উৎপাদনে রাজ্যের বৃদ্ধির হার ২০.১ শতাংশ। রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগীয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মাংস ও দুধ উৎপাদনে বাংলা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ডিম উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে থাকলেও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমগ্র দেশের নিরিখে সবথেকে বেশি। মাংসের উৎপাদন যাতে আরও বাড়ানো যায় সেই জন্য আমরা বাংলার কালো ছাগলের ওপর আলাদাভাবে জোর দিচ্ছি।”
ভারত সরকার বেসিক অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ২০২৩- এ গত ২৬ নভেম্বর এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। দুধ উৎপাদন ও বৃদ্ধির হারেও বাংলা দ্বিতীয়। বৃদ্ধির হারে ৮.৬৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। যা বৃদ্ধির নিরিখে উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের মত রাজ্যকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। ২০১১-১২ আর্থিক বছরে রাজ্যে দুধ উৎপাদন হতো ৪৪.৭২ লাখ মেট্রিক টন।
[আরও পড়ুন: ‘নির্দেশ মানার ইচ্ছা আছে?’, সিবিআইয়ের অভিযোগে মুখ্যসচিবকে তোপ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
২০২২-২৩ আর্থিক বছরে তা পৌঁছে গিয়েছে ৬৯.৬৯ লাখ মেট্রিক টনে। প্রায় ১০ বছরে দুধের বৃদ্ধির হার ৫৩.৮৩ শতাংশ। একইভাবে মাংস উৎপাদনে কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী বৃদ্ধির হার ১১.৯ শতাংশ। যা গত এক দশকে বেড়েছে ১০২.৭ শতাংশ। ২০১১-১২ আর্থিক বছরে রাজ্যে মাংস উৎপাদন হতো ৫.৭৭ লাখ মেট্রিক টন। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১১.৬৬ লাখ মেট্রিক টন।
‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ বা বাংলার কালো ছাগলের মধ্য দিয়ে এই উৎপাদন আরও বাড়াতে চায় রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগ। যেহেতু এই ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’-র ‘অরজিনাল ভ্যারাইটি’ সমগ্র দেশের মধ্যে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় ছাড়া আর কোথাও নেই তাই এই চাষ যাতে ওই পাহাড়ে আরও বাড়ানো যায় সেই ব্যাপারে একটি সুসংহত পরিকল্পনা নিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ। ২০১১-১২ সালে রাজ্যে ডিম উৎপাদন হতো ৪০১ কোটি। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের নিরিখে তা বেড়ে হয়েছে ১,৩৫৪ কোটি। যদিও বছরে বাংলার চাহিদা ১,৪৪০ কোটি। তাই নতুন বছরে ১,৫০০ কোটির টার্গেট রয়েছে।