সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারি জমি অবৈধভাবে হস্তগত করার কেলেঙ্কারিতে নাম জড়াল জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লার (Farooq Abdullah )। রোশনি জমি প্রকল্পের আড়ালে হওয়া এই কেলেঙ্কারির পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এতে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছেন না ফারুক। তাঁর মতে, তাঁকে অপদস্থ করতে এটা স্থানীয় প্রশাসনের নয়া কৌশল।
[আরও পড়ুন: যোগী আদিত্যনাথের তৎপরতার জের! উত্তরপ্রদেশ মন্ত্রিসভায় পাশ ‘লাভ জেহাদ’ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স]
রোশনি প্রকল্প অনুযায়ী যেসব সরকারী জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে, তার বেশ কিছু কেনা হয়েছে ফারুক আবদুল্লা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও তাঁর দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের পার্টি অফিসের নামে। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ফারুক। বলেন, “আমার একার নয়, ওই এলাকায় আরও কয়েকশো মানুষের বাড়ি রয়েছে। এসব নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিকলারেশকে দূর্বল করতে ও লোকচক্ষুতে কালিমালিপ্ত করতেই এসব চক্রান্ত করছে স্থানীয় প্রশাসন। ওদের যা প্রাণ চায় করুক।”
ফারুক কিছু না বললেও এই প্রসঙ্গে তাঁর দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের তরফে বক্তব্য রেখেছেন দেবেন্দ্র রাণা। তাঁর মতে, ফারুক আবদুল্লা সরকার এই আইন চালু করলেও পরবর্তীতে অন্যান্য সরকার এই আইন সংশোধন করেছে। যদিও গুপকার ডিকলারেশনের জোট অটুট রাখতে অন্য কোনও দল সম্পর্কেই বিরূপ মন্তব্য করেননি তিনি। শুধু বলেছেন, বিষয়টি বিচারাধীন। সিবিআই তদন্তের পর আদালত যা রায় দেবে, এনসি তা মেনে নেবে।
প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, ২০০১ সালে ফারুকের মুখ্যমন্ত্রীত্বে থাকা সরকার এক প্রকল্প চালু করে। যাতে বলা হয় ১৯৯৯ সালের আগে যে ব্যক্তি বা সংস্থা সরকারী জমি ব্যবহার বা অধিগ্রহণ করে ছিল, তারা সরকার নির্ধারিত মূলে্য জমি কিনে নিতে পারবে। পরবর্তীকালে পিডিপি ও কংগ্রেস সরকার এসে নিজেদের মতো করে এই আইন সংশোধন করে। জমি কেনার শর্তের মেয়াদ ১৯৯৯ থেকে বেড়ে যথাক্রমে ২০০৪ ও ২০০৭ সাল পর্যন্ত করে মেহবুবা মুফতি ও গুলাম নবি আজাদের সরকার। ২০০১ সালে ফারুক আবদুল্লা সরকার এই আইন প্রণয়নের সময় জানায় যে বাজার থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা তুলে রাজে্য বিদু্যৎ-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নতি করতে চায় তারা।
২০১৪ সালে সিএজি রিপোর্টে সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বলা হয়, ২৫ হাজার কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও একের পর এক সরকারী জমি বিক্রি করে উঠেছে মাত্র ৭৬ কোটি টাকা। এরপর ২০১৮ সালে তদানীন্তন রাজ্যপাল রোশনি আইন বাতিল করে দেন। ৪ নভেম্বর স্থানীয় প্রশাসন জম্মু ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারকে মিউটেশন বাতিলের নির্দেশ দেয়। তার আগেই অবশ্য জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। ইতিমধে্যই তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।