shono
Advertisement
Fashion Show

র‍্যাম্পজুড়ে আদিবাসী ছোঁয়া, পাঞ্জি শাড়ি-ধুতিতে সিউড়ির ফ্যাশন শো মাতালেন প্রতিযোগীরা

র‍্যাম্পে হাঁটবেন বলে নিজের হাতে পাঞ্জি বানিয়ে পাড় বুনেছেন তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী হেমলতা মাড়ান্ডি।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 05:14 PM Jan 24, 2025Updated: 05:14 PM Jan 24, 2025

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। দিনভর কড়া মেজাজে কাজ করতে হয়। কিন্তু র‍্যাম্প শো-এ ক্যাটওয়াক করতে দিয়ে তিনি বেশ ঘাবড়ে যাচ্ছিলেন। সিউড়ির আদিবাসী ফ্যাশন শোয়ে যোগ দিতে এসে মহম্মদবাজারের নিবেদিতা মাড়ান্ডি জানান, "জীবনে এই প্রথম র‍্যাম্পে হাঁটা। কিছুই জানি না। খুব ভয় করছিল।" তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী হেমলতা মাড়ান্ডি। তিনি র‍্যাম্পে হাঁটবেন বলে আগে থেকেই একটা পাঞ্জি নিজের মতো করে রেখেছিলেন। তাঁর পাড়ও বুনেছেন নিজের হাতে। নলহাটি থেকে আসা প্রমিলা হেমব্রম জানান, "এই শোয়ে নজর কাড়ার জন্য অনেক আগে থেকেই ঝাড়খণ্ড থেকে পঞ্জি কিনে এনেছি।" এভাবেই আদিবাসী পরম্পরার সাজে র‍্যাম্প শোয়ে মঞ্চ মাতালেন মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ৩৯ জন প্রতিযোগী।

Advertisement

সিউড়িতে আদিবাসী পরম্পরার সাজে র‍্যাম্প শোয়ে মঞ্চ মাতালেন মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ৩৯ জন প্রতিযোগী। ছবি: শান্তনু দাস।

সিউড়ির বীরবান্টা বৌজৌল মেলায় এই প্রথম আদিবাসী র‍্যাম্প শো। সিউড়ির আবাদারপুর সুসৌর গাঁওতার পরিচালনায় আবদারপুর ফুটবল মাঠে গত তিনদিন ধরে চলছিল লিগ পর্যায়ে ফুটবল খেলা। কিন্তু বৃহস্পতিবার শেষ সন্ধ্যায় ছিল চমক - আদিবাসী ফ্যাশন শো। তা দেখতে ভিড় জমিয়েছেন মানুষজন। মূল আয়োজক আদিবাসী দিশম গাঁওতার রাজ্য সভাপতি রবীন সরেন জানান, "এই ফ্যাশন শো আমাদের জেলায় এই প্রথম। আমাদের চিরাচরিত পঞ্জি পিরহান, আদিবাসী বিয়ের সাজ, মাঠে যাওয়ার পোশাক-সব কিছু আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমাদের ছেলেমেয়েরা এই সাজে র‍্যাম্পে হাঁটলেন।"

সিউড়ির বীরবান্টা বৌজৌল মেলায় এই প্রথম আদিবাসী র‍্যাম্প শো। ছবি: শান্তনু দাস।

রবীনবাবু আরও বলেন, "বীরবান্টা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। একইসঙ্গে সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ। সিধু কানহুরা ইংরেজদের দেশ থেকে সরাতে যে লড়াই করেছিলেন তাঁদের সঙ্গে, তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইনিও। মহাজন তাম্বুলিকে হত্যার দায়ে তাঁকে জেলে যেতে হয়। সিউড়িতে তখন ইংরেজদের সেন্ট্রাল জেল। কিন্তু জেলজীবনে থাকাকালীন আদালতের কাছে আবেদন করে তিনি নিজের কাছে একটা বাঁশের আড়বাঁশি রাখার অনুমতি পান। পরে সেই বাঁশির মধুর সুরে জেলারের মেয়েকে মোহিত করেছিলেন।"

দিশম গাঁওতার দাবি, বীরবান্টার এই অজানা ইতিহাস আগামী প্রজন্মকে জানানো দরকার। তাই গত সাত বছর ধরে তাঁকে ঘিরে এই উৎসবের আয়োজন। গত তিনদিনের ফুটবলে আদিবাসীদের সঙ্গে বিদেশি নাইজেরিয়ানরাও খেলায় অংশ নিয়েছেন। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী হয় এসএসবি স্পোর্টিং ক্লাব। রানার্স হয় শালডাঙা আদিবাসী মার্শাল ক্লাব। জয়ীদের এক লক্ষ টাকা ও বিজিতদের হাতে ৭০ হাজার টাকা নগদ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। একইভাবে মহিলা ফুটবল দল বোলপুরের বল্লভপুরের এলভিএস স্টার বিজয়ী হয়। রানার্স হয় নগরী ফুটবল ক্লাব।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement