সম্যক খান, মেদিনীপুর: করোনার (Coronavirus) রক্তচক্ষুতে গত দেড় বছরেরেও বেশি সময় ধরে একাধিক বিধিনিষেধ জারি রাজ্যে। তার জেরে স্কুল বন্ধ দিনের পর দিন। তারই জেরে পড়াশোনা ছেড়ে অসৎ সঙ্গে পড়ে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সনাতন সরেন। মাদকের (Drug) নেশা ক্রমশঃ গ্রাস করে ফেলেছিল তাকে। বাবা-মা বা পরিবারের লোকজন তাকে শোধরানোর অনেক চেষ্টা করেও পারেননি। অবশেষে শাস্তি দিতে ঘরের মধ্যেই তাকে শেকল (Chain) দিয়ে বেঁধে রাখলেন বাবা। খোদ মেদিনীপুর শহরের তলকুইয়ের এই ঘটনায় শেষমেশ এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেল কিশোর।
এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি ফারুক মল্লিকের মাধ্যমে খবর পেয়ে রবিবার পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন সনাতনের বাড়িতে গিয়ে শিকল খুলে উদ্ধার করে। শোধরানোর লক্ষ্যে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পুনর্বাসন কেন্দ্রে। সেখানে যাতে নেশা ছাড়িয়ে সনাতনকে আবার ছাত্রজীবনে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তার যথাযথ ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা।
[আরও পড়ুন: আর্থিক ‘তছরুপে’র দায়ে তরুণীকে যৌন হেনস্তা, ফেসবুক লাইভের পর অপমানে আত্মঘাতী বাবা-মা-ভাই]
মেদিনীপুর (West Midnapore) পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিক বাবুলাল সরেনের মেজো ছেলে সনাতন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। প্রায় দু’বছর আগে করোনা ও লকডাউনের (Lockdown) জেরে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের পঠনপাঠন। তারপর থেকেই সে বন্ধুবান্ধবদের পাল্লায় পড়ে অসৎ সঙ্গে চলে যায়। মাদকের নেশায় বুঁদ থাকতে শুরু করে। নেশার জন্য টাকার জোগান পেতে চুরি করতেও অভ্যস্ত হয়ে পড়ে সে। ছেলের নামে একের পর এক অভিযোগ পেয়ে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে পরিবার।
[আরও পড়ুন: বিজেপির প্রচার মিছিলে শয়ে শয়ে সমর্থক! কোভিডবিধি ভেঙে চন্দননগরে গ্রেপ্তার বিধায়ক-সহ ৭]
শেষমেশ ছেলেকে শায়েস্তা করতে না পেরে হাতে পায়ে শেকল পরাতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন তার বাবা বাবুরাম সরেন। সনাতনের মা ডগর সরেনের অনুরোধ, তার ছেলেকে প্রশাসন যেন ভালো পথে ফিরিয়ে আনে। আপাতত সনাতনের ঠাঁই হয়েছে এক পুনর্বাসন কেন্দ্রে। তার ভালো হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনতে রাজি তার মা-বাবা।