সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হু হু করে ছুটছে গাড়ি। চালকের আসনে বসে রয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর পাশের আসনে রাখা প্লাস্টিকে মোড়া দেহ। তা বাঁধা সিট বেল্টে। করোনায় মৃত নিজের মেয়ের দেহ নিয়ে ঠিক এভাবেই শ্মশানে পৌঁছলেন ওই ব্যক্তি। চোখে জল আনা এই ছবিই এখন নেটদুনিয়ায় ভাইরাল।
দিনকয়েক ধরে শরীর ভাল যাচ্ছিল না রাজস্থানের (Rajasthan) বাসিন্দা সীমার। করোনা শরীরে বাসা বেঁধেছে বলেই আশঙ্কা করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তাতেই জানা যায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ওই তরুণী। গত ২৪ এপ্রিল কোটার এক হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। তবে শেষরক্ষা হল না। রবিবার হাসপাতালেই প্রাণহানি হয় তরুণীর। তাঁর বাবা স্থির করেন ঝালাওয়ারের শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে মেয়েকে। শ্মশানের দূরত্ব বাড়ি থেকে ৮৫ কিলোমিটার। ওই রাস্তা নিয়ে যেতে অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া কোনও গতিই নেই। কিন্তু বাদ সাধলেন খোদ অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তরুণীর বাবার দাবি, ৮৫ কিলোমিটার রাস্তা যেতে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করে অ্যাম্বুল্যান্স চালক। যদিও ওই পরিমাণ অর্থ দেওয়ার সামর্থ্য নেই তরুণীর বাবার।
[আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ফের বাড়ল সংক্রমণ, ফের একদিনে করোনার বলি ৪ হাজারেরও বেশি]
কিন্তু মেয়ের সৎকার হবে না, তা তো হতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে নিজেই গাড়ির চালকের আসনে বসেন। পাশের আসনে প্লাস্টিকে মোড়া তাঁর মেয়ের দেহ। আর সেভাবেই গাড়ি চালিয়ে এগোতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত শ্মশানেও পৌঁছন। নিজের মেয়েকে শেষযাত্রায় এভাবে বাবার শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার ছবি ভাইরাল হতে বিশেষ সময় লাগেনি। যে দেখেছেন সেই অবাক হয়ে গিয়েছেন। নিদারুণ দুঃখের এই ঘটনা মন খারাপ করে দিয়েছে সকলের। একজন বাবা কতটা অসহায় হলে এ কাজ করেন, সেকথাই বলছেন প্রায় সকলেই। এই ঘটনা নজর এড়ায়নি প্রশাসনেরও। এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পর শুরু হয়েছে তদন্ত। অ্যাম্বুল্যান্সের (Ambulance) ভাড়া নির্ধারণের পরেও কেন এমন কাণ্ড ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।