ফ্রান্স: ৪ (গ্রিজম্যান-পেনাল্টি, বেঞ্জামিন, এমবাপে-২)
আর্জেন্টিনা: ৩ (ডি মারিয়া, মার্কাডো, অ্যাগুয়েরো)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইতিহাসে ফরাসি বিপ্লবে পতন হয়েছিল বাস্তিল দুর্গের। আর শনি-সন্ধেয় বিশ্ব সাক্ষী থাকল এক অন্য ফরাসি বিপ্লবের। যেখানে পতন হল মেসিয়ানার।
বিশ্বকাপে নক্ষত্রপতন। যাঁর হাতে কাপ দেখার স্বপ্নে বুঁদ ছিল গোটা দুনিয়া, সেই লিও মেসি আর বিশ্বকাপেই নেই! সেই মেসি জ্বলে ওঠার আগেই নিভে গেলেন। সেই মেসি আজ দেশের জার্সি গায়ে আরও একবার ব্যর্থ। সেই মেসি আজ হেরে গেলেন একজন ফুটবলার, অধিনায়ক এবং সর্বোপরি একজন আর্জেন্টাইন নাগরিক হিসেবে। জীবনের কোনও পর্বে এসে ঈশ্বরকেও হয়তো পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়। আর সেই পরীক্ষাতেই এদিন মাথা নত হল ফুটবল ঈশ্বরের। ভক্তকূলের দীর্ঘদিনের প্রার্থনায়, প্রত্যাশায় ছেদ টানলেন এলএম টেন।
[দর্শকদের মধ্যমা প্রদর্শন, ফিফার রোষের মুখে মারাদোনা]
চারটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েও নক-আউটে কখনও গোলের মুখ খুলতে পারেননি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। এদিনও পারলেন না। সমর্থকদের জন্য সান্ত্বনা পুরস্কারও যে রইল না। মার্কাডোকে দিয়ে একটা গোল করালেন। কিন্তু তা তো যথেষ্ট ছিল না মেসির জার্সি গায়ে ফুটপাতে শুয়ে থাকা সেই ছেলেটার জন্য। যে ঈশ্বরের বাঁ-পায়ের শটের অপেক্ষায় ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে মেসির গোলমুখী শটও তো পারল না নীল-সাদা জার্সি গায়ে তোলা ওই সমর্থকদের চোখের জল আটকাতে। আজ তো গোটা আকাশ যেন ভেঙে পড়ল মাথার উপর। হাজার গঞ্জনা, হাজার অপমান সহ্য করেও যে ভক্তদের বিশ্বাস ছিল, দেশকে ঠিক ট্রফি এনে দেবেন মেসি। তাঁদের তো আর তর্ক করার কিছু রইল না। একরাশ শূন্যতাই দিয়ে গেলেন মেসি। নিজেকে ও তাঁর ভক্তদের।
এদিন দিদিয়ের দেশঁর ছেলেরা যে দাপটের সঙ্গে শুরু করেছিলেন, তাতে আর্জেন্টিনাকে বেশ কোণঠাসাই লাগছিল। পেনাল্টিতে গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন ফরাসিরা। ‘নো মেসি, নো আর্জেন্টিনা’ স্ট্র্যাটেজিতেই বাজিমাত করলেন গ্রিজম্যান, জিরু। তবে প্রথমার্ধে ডি মারিয়ার লং শটে করা ছবির মতো গোলটা নিয়ে তখনও চর্চা চলছিল। আর তার মধ্যেই হাফ-ভলিতে এমন একটি গোল করলেন ফরাসি ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভার্ড, তাতে আলোচনার মোড়ই ঘুরে গেল। এভাবেও গোল হয়! চাক্ষুষ না করলে এ গোলের বর্ণনা দেওয়া কঠিন। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের অন্যতম সেরার তালিকায় থাকবে এই গোল। তবে আরেকজন ফরাসি তারকার নামের পাশে যদি গোল না লেখা থাকত তাহলে হয়তো খানিকটা অন্যায়ই হত। তিনি ফ্রান্সের তরুণ তুর্কি এমবাপে। শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে ফ্রান্সকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বক্সের ভিতর তাঁকে ফাউল করাতেই মিলেছিল কাঙ্ক্ষিত পেনাল্টিটি। আর শেষমেশ তাঁর দুর্দান্ত জোড়া গোলেই লেখা হয়ে গেল মেসিদের ভাগ্য। অ্যাগুয়েরো গোল দিলেও তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আর্জেন্টিনার জঘন্য ডিফেন্সকে এদিনের হারের জন্য দায়ী করা যেতেই পারে। আর কোচ সাম্পাওলি? তিনি আর্জেন্টিনায় পা রাখতে পারবেন কি না জানা নেই।
[জঘন্য পারফরম্যান্সের জের, ওজিলদের দেওয়া ‘উপহার’ ফিরিয়ে দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট]
দেখুন ফরাসি সমর্থকদের উল্লাস-
ভিডিও সৌজন্যে: পথিকৃৎ সেনগুপ্ত
The post বিশ্বকাপে ইন্দ্রপতন, ফরাসি বিপ্লবে স্বপ্নভঙ্গ মেসির বিশ্বকাপ জয়ের appeared first on Sangbad Pratidin.