কাতার : ১ (আব্দুল আজিজ হাতিম)
ভারত : ০
দুলাল দে: একটা দল বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ড (FIFA World Cup 2022 Qualifiers) শুধু খেলছে। যারা আবার ইতিমধ্যেই কাতার বিশ্বকাপে যাওয়ার দৌড়টাও থামিয়ে ফেলেছে। বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে খেললেও, ভারতীয় দলের এই মুহূর্তে মূল লক্ষ্য-গ্রুপে তৃতীয় হয়ে পরবর্তী এশিয়ান কাপে সুযোগ পাওয়া।
উলটোদিকে, আরেকটা দেশ , কাতার নিজের দেশে পরের বিশ্বকাপ খেলবে, এটা নিশ্চিত হয়েই রয়েছে। এক বছর পর বিশ্বকাপের মহামঞ্চে যে দল রোনাল্ডো, মেসি, নেইমারদের বিরুদ্ধে খেলবে, সেই দলের বিরুদ্ধে ১৭ মিনিটের পর থেকেই একজন ফুটবলার কম নিয়ে খেলে মাত্র ১ গোলে হার। কখনওই এই হার অগৌরবের হতে পারে না।হয়তো কাতার (Qutar) নামটাই ভারতীয় দলের জন্য উদ্বুদ্ধ হওয়ার একমাত্র কারণ।
২০১৯-এ এই কাতারকেই শুরুর ম্যাচে কাঁদিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় দল (Indian Football Team)। বলা ভাল কাতারের সঙ্গে ম্যাচ ড্র করার জন্য পুরো কৃতিত্বটাই দাবি করতে পারেন গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু। সেদিন ভারতীয় দল নয়। গুরপ্রীতের (Gurpreet Singh Sandhu) সঙ্গেই খেলা হয়েছিল কাতারের। এদিন ফের কাতার ম্যাচ যেন প্রথম ম্যাচেরই অ্যাকশন রিপ্লে। একের পর এক আক্রমণ আসছে, আর কখনও হাত, কখনও পা ছুঁড়ে বাঁচিয়ে গেলেন গুরপ্রীত। মাথায় রাখতে হবে, এই ম্যাচটা খেলার আগে আয়ারল্যান্ডের মতো দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ড্র করেছে কাতার। আর ভারতীয় দলের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা তো দুরের কথা, কাতার পৌঁছে ঠিকভাবে প্র্যাকটিস করার সুযোগটা পর্যন্ত পায়নি। আইএসএল (ISL) শেষ হয়ে যাওয়ার পর দলের অর্ধেক ফুটবলার করোনা অধ্যুষিত ভারতে সামান্য ফিটনেস ট্রেনিং পর্যন্ত করতে পারেননি। তার মধ্যে কাতারের মাটিতেই ফিট কাতারে বিরুদ্ধে খেলতে নেমে হ্যান্ডবল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে ১৭ মিনিটেই দলকে ১০ জনে করে দিলেন রাহুল ভেকে।
[আরও পড়ুন: প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই গোটা ভারতীয় দলকে ভ্যাকসিন, অলিম্পিকের প্রস্তুতি বৈঠকে নির্দেশ মোদির]
কিন্তু তারপরে দেখুন, দশজন নিয়ে শুধু নিজেদের ডিফেন্সিভ সিষ্টেমের শেপ বজায় রেখে কীভাবে কাতারকে আটকে দিল। আরেকটু সচেষ্ট হলে মনবীর সিং গোলটাও করে ফেলতে পারত, প্রথমার্ধেই। আশিক কুরিয়নের থ্রু বক্সের মধ্যে মনবীর ধরতে পারলেই নিশ্চিত গোল পেয়ে যেত ভারতীয় দল। আর কাতারের গোলটা অনেকটা জটলার মধ্য থেকে। কাতারের ফুটবলাররা সুযোগ পেলেই ওয়ান -টু , ওয়ান-টু খেলতে খেলতে বক্সের কাছাকাছি পৌঁছলেই জোড়ালো শট নিয়েছেন। বিশেষ করে বাঁ পায়ের আব্দুল করিম। তবে গোলটা হল কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই। ভিড়ের মধ্যে বক্সের ভেতর থেকেই আব্দুল আজিজ গোল করে যান। অদ্ভুত ভাবে বাজে ফর্মে ছিলেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। বাধ্য হয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে উদান্তাকে নামান কোচ ইগর স্টিমাচ (Igar Stimac)। তাতেও অবশ্য ম্যাচের সমতা ফেরানো সম্ভব হয়নি।
[আরও পড়ুন: জিদানের জায়গায় অ্যান্সেলোত্তিকে কোচ করল রিয়াল, ক্লাব ছাড়তে পারেন ব়্যামোসও]
সে যাই হোক, হার হারই। এর ফলে কিছুটা হলেও কঠিন হল ভারতের এশিয়ান কাপে (AFC Asian Cup) খেলার অঙ্ক। এই মুহূর্তে নিজেদের গ্রুপে চতুর্থ স্থানে ভারত। এশিয়ান কাপে খেলতে হলে যেতে হবে তৃতীয় স্থানে। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে কাতার এবং ওমান ধরাছোঁয়ার বাইরে। যত লড়াই বাকি তিন দলকে নিয়ে। ভারত, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ। আফগানিস্তান এবং ভারত দু’দলেরই রয়েছে ৩ পয়েন্ট। বাংলাদেশের পয়েন্ট ২। তবে, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের তুলনায় ভারতের আগামী দিনের সূচি সহজ। কারণ, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশকে এখনও খেলতে হবে ওমানের সঙ্গে। বাকি একটি করে ম্যাচ তাঁরা খেলবে ভারতের বিরুদ্ধে। ওমানের বিরুদ্ধে এই দুটি দলের লড়াই খুব কঠিন হতে চলেছে। সেক্ষেত্রে দুই ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট পেলেই ভারত মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই তৃতীয় স্থানে শেষ করবে। তার কম পেলে অন্যের ভরসায় থাকতে হবে।