সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ব্রাজিল ২০২৬ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলবে।’ ডোরিভাল জুনিয়রের এই বক্তব্যের চব্বিশ ঘণ্টাও কাটেনি। তার মধ্যেই ফের পপাত ধরণীতলে ব্রাজিল। বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে (FIFA World Cup 2026 Qualifier) প্যারাগুয়ে ১-০ গোলে হারিয়ে দিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। অন্যদিকে, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাও আন্তর্জাতিক ফুটবলে দীর্ঘদিন পর হারের কবলে পড়ল। লিওনেল মেসিহীন আর্জেন্টিনা ১-২ গোলে পরাজিত হল কলম্বিয়ার কাছে। একই দিনে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের দুই মহাশক্তিধরের হার রীতিমতো বিরল ঘটনা।
ব্রাজিল এমনিতেই দুঃসময়ের মধ্যে হাঁটছে। গত ম্যাচে ইকুয়েডরকে হারালেও পারফরম্যান্স মোটেই উজ্জ্বল ছিল না। মঙ্গলবার রাতে আরও বিবর্ণ দেখাল তাদের। এই নিয়ে কোয়ালিফাইং পর্বে মোট চারটি হারের সম্মুখীন হল ব্রাজিল। বল দখলের নিরিখে ব্রাজিল এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে কোনওরকম ধার ছিল না। ডোরিভাল তাঁর প্রথম একাদশে ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রড্রিগো এবং এনড্রিককে রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কোনওরকম বোঝাপড়া লক্ষ করা যায়নি। ম্যাচের ২০ মিনিটে দিয়েগো গোমেজের গোলে এগিয়ে যায় প্যারাগুয়ে। গোল পরিশোধের জন্য প্রায় সত্তর মিনিট হাতে পেয়েও গোল করতে পারেননি ভিনিসিয়াসরা। ম্যাচের শেষদিকেও গোলের সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেনি। ২০০৮ সালে শেষবার প্যারাগুয়ে হারিয়েছিল ব্রাজিলকে।
[আরও পড়ুন: শিখদের পাগড়ি নিয়ে মন্তব্যের জের, দিল্লিতে রাহুল-সোনিয়ার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ]
১৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে মাঠের মধ্যেই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন প্যারাগুয়ের ফুটবলাররা। আর হতাশায় ভেঙে পড়েন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলাররা। দক্ষিণ আমেরিকার প্রাক বিশ্বকাপ পর্বে ব্রাজিলের এই হতশ্রী পারফরম্যান্স চিন্তায় ফেরে দিয়েছে ব্রাজিল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে। অথচ এই ম্যাচের আগে ব্রাজিল কোচ ডোরিভাল প্রবল আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, আসন্ন বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবে ব্রাজিল। তার পরই এই মহাপতন। ব্রাজিলিয়ান তারকা মার্কুইনহোস হতাশার স্বরে ম্যাচের পর বলেন, ‘‘আমাদের খেলায় আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আছে। দলে প্রচুর নতুন ফুটবলার এসেছে। কোচ চেষ্টা করছেন।’’ তিনি আরও বক্তব্য, ‘‘কোয়ালিফাইং রাউন্ড মোটেই সহজ নয়। আমরা চেষ্টা করছি। আমরা একটা পালবদলের মধ্যে দিয়ে হাঁটছি। দলে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যাচ্ছে। তবে আমরা কথা দিচ্ছি, কঠোর পরিশ্রম করে ঠিক ঘুরে দাঁড়াব।’’
ভিনিসিয়াস হারের পর ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। বলছেন, ‘‘কঠিন সময় চলছে আমাদের। আমরা অবশ্যই উন্নতি করতে চাই। আমরা নিজেদের সামর্থ্য কতটা জানি। নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কেও অবগত আছি। কোথায় উন্নতি করতে হবে বুঝতে পারছি। আশা করছি, দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াব।’’ আর ব্রাজিল কোচ বলছেন, ‘‘আমরা প্রথমার্ধে বেশকিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করেছি। এই হারের দায় আমার। কোনও ফুটবলারকেই দোষ দেব না। আমাদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’’ দলে নেমারের অভাব স্পষ্ট। তবে তিনি কবে ব্রাজিল দলে ফিরবেন, বলতে পারলেন না।
[আরও পড়ুন: ‘জিত পাক্কা সমঝো’, হরিয়ানায় মনোনয়ন দিয়ে প্রত্যয়ী ভিনেশ, কংগ্রেসের দ্বিতীয় প্রার্থীতালিকায় চমক]
এদিকে, ১২ ম্যাচ পর কলম্বিয়ার কাছে হেরে বসল আর্জেন্টিনা। এবং কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নিল কলম্বিয়া। চোটের কারণে দলে ছিলেন না মেসি। ২৫ মিনিটে ইয়েরসন মসকেরার গোলে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। যদিও বিরতির পরই নিকো গঞ্জালেসের গোলে সমতায় ফেরে আর্জেন্টিনা। ৬০ মিনিটে কলম্বিয়ার হয়ে জেমস রড্রিগেস পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি করেন। শেষদিকে আরও একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়া। সেক্ষেত্রে আর্জেন্টিনার ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। এদিনে হারলেও পর ৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে সবার উপরেই রইল আর্জেন্টিনা। আর ব্রাজিল সমসংখ্যক ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।