মরক্কো: ১ (ইউসেফ এন-নেসরি)
পর্তুগাল: ০
দুলাল দে, দোহা: কাতারে অব্যাহত অ্যাটলাস সিংহের গর্জন। এবার মরক্কোর শিকার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগাল। বলা ভাল ফের্নান্দো স্যান্টোসের পর্তুগাল (Portugal)। কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগিজদের ১-০ গোলে হারিয়ে ইতিহাসে প্রথমবার সেমিফাইনালে পা রাখলেন হাকিমি, আম্রাবাটরা।
প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে গোটা ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে (Cristiano Ronaldo) রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে দিয়েছিলেন ফের্নান্দো স্যান্টোস। তাঁর দাবি ছিল, সেটা নাকি ট্যাকটিক্যাল সিদ্ধান্ত। নিজের সেই তথাকথিত ট্যাকটিক্সে তাৎক্ষণিক সাফল্যও পেয়েছিলেন। রোনাল্ডোর বদলে খেলতে নেমে তরুণ স্ট্রাইকার র্যামোস হ্যাটট্রিক করলেন। পর্তুগাল ৬ গোল করল। সেই সঙ্গে স্যান্টোসোর মাথায় ঢুকিয়ে দিল, তাঁর দল রোনাল্ডোকে ছাড়াই ভাল খেলতে পারে। কোয়ার্টার ফাইনালে সংঘবদ্ধ মরক্কোর বিরুদ্ধেও তিনি সেই সাহসে বলিয়ান হয়ে রোনাল্ডোকে মাঠের বাইরে রেখেই শুরু করলেন। সেটাই সম্ভবত তাঁর সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।
[আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ‘আগামী ২০ দিন রাজনীতি নয়, শুধু ফুটবল’, এমপি কাপ উদ্বোধনে বললেন অভিষেক]
ফের্নান্দো স্যান্টোস (Fernando Santos) বোধ হয় ভুলে গিয়েছিলেন, সুইজারল্যান্ড আর বেলজিয়াম, স্পেনের মতো দলকে হারানো মরক্কো এক নয়। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল আর কোয়ার্টার ফাইনালের চাপ এক নয়। কঠিন প্রতিপক্ষ আর চাপের মুখে আগের দিন যে পর্তুগালের আক্রমণভাগকে বিশ্বমানের মনে হচ্ছিল, প্রথমার্ধে সেটাকেই সাধারণ মানের মনে হল। সুযোগ তৈরি হচ্ছিল না, মরক্কোর রক্ষণ ভাঙা যাচ্ছিল না। যে কটা সুযোগ তৈরি হল সেটাও র্যামোস, ফেলিক্সদের মতো তরুণরা নষ্ট করলেন। উলটে খেলার গতির বিপরীতে গিয়ে পর্তুগাল গোলরক্ষক কোস্টার ভুলে গোল করে গেলেন মরক্কোর ইউসেফ এন-নেসরি। প্রথমার্ধের শেষদিকে এগিয়ে গেল মরক্কো।
[আরও পড়ুন: বাগদানের দিন প্রায় ১০০ জন মিলে তরুণী চিকিৎসককে অপহরণ! বাড়ি ভাঙচুর, ভিডিও ভাইরাল]
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও যখন প্রথমার্ধের মতোই পরিস্থিতি মনে হচ্ছিল। তখন টনক নড়ল কোচ স্যান্টোসের। খেলার বয়স যখন ৫০ মিনিট তখন মাঠে এলেন ক্রিশ্চিয়ানো। যার জন্য অপেক্ষা করছিল গোটা স্টেডিয়াম, সম্ভবত গোটা বিশ্ব। রোনাল্ডোর ভক্তরা আশা করছিলেন, এবার হয়তো মহাতারকার পা থেকে বেরিয়ে আসবে কোনও জাদুমুহূর্ত। এইবার হয়তো নিজের সেরাটা দিয়ে রোনাল্ডো বুঝিয়ে দেবেন, কেরিয়ারের সায়াহ্নে এসে তাঁকে যা যা সহ্য করতে হচ্ছে, আদৌ সেগুলি তাঁর প্রাপ্য ছিল না। কিন্তু তেমনটা হল না। রোনাল্ডো চেষ্টা করলেন। মাঝে মাঝে উজ্বল মুহূর্তও তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোল, কাঙ্ক্ষিত জাদু, কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত, সেটা এল না। পর্তুগাল হারল। রোনাল্ডো হারলেন। বিশ্বের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোল স্কোরারকে ফিরতে হল শূন্য হাতেই। চোখের জলে মাঠ ছাড়লেন পর্তুগাল অধিনায়ক।