সুপর্ণা মজুমদার: ১৯৮৪ সালে মহেশ ভাট পরিচালিত 'সারাংশ' সিনেমা যখন মুক্তি পায়, অনুপম খেরের বয়স তখন প্রায় ২৯। অভিনয় করেছিলেন ৬৫ বছরের এক অবসরপ্রাপ্ত এক বৃদ্ধের ভূমিকায়। দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখেছিলেন তাঁর অভিনয়। এখন অনুপম খেরের বয়স ৬৯। আবারও এক অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু পরিচালক গজেন্দ্র আহিরের 'দ্য সিগনেচার' আটের দশকের জনপ্রিয় সিনেমার ম্যাজিক ফেরাতে পারল না।
ছবিতে অরবিন্দের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনুপম। ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার অরবিন্দ ও তাঁর স্ত্রী মধুর। সারাজীবনের দায়িত্ব পালনের শেষে অবসরের আনন্দ দুজনের জীবনে। কিন্তু সুখের মুহূর্ত বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না। বেড়াতে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে লুটিয়ে পড়ে মধু। জানা যায় ব্রেন হেমারেজ হয়েছে তার। হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় মধুকে। চিকিৎসার বিপুল খরচ। কিন্তু মধুকে বাঁচানোর পণ নিয়েছে অরবিন্দ। এর জন্য সন্তানদের কাছেও বিরাগভাজন হতে হয়েছে। মেয়ের কাছে, ভাইয়ের কাছে হাতও পাততে হয়েছে। প্রায় সর্বস্ব হারিয়েছে অরবিন্দ। পারবে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে?
২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া মারাঠি সিনেমা 'অনুমতি' অবলম্বনে 'দ্য সিগনেচার' সিনেমাটি তৈরি করেছেন গজেন্দ্র আহির। ছবি দেখতে দেখতে একাধিকবার 'সারাংশ' সিনেমার কথা মনে পড়তে পারে। তবে গুণমানের নিরিখে সেই সিনেমার ধারেকাছে ২০২৪ সালের এই ছবিটি যেতে পারেনি। অনুপম খের আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু গল্পে বাঁধন বড় আলগা। সারাক্ষণের একটা একঘেয়েমি রয়েছে। সেই একঘেয়েমি অভিজ্ঞ অভিনেতার অভিনয়েও দেখা গিয়েছে।
এই ছবিতে বহুদিন বাদে মহিমা চৌধুরীকে দেখা গেল। কিন্তু এতদিন বাদে আসার জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারলেন না অভিনেত্রী। অন্নু কাপুরের চরিত্রে মেলোড্রামা বেশি। রণবীর শোরে এবং মনোজ যোশীর অভিনয়ের পরিসর খুবই ছোট। প্রত্যেকটা চরিত্র যেন খাপছাড়াভাবে এসেছে। Zee5 অরিজিনাল এই সিনেমার বিষয়বস্তু বাস্তব। এদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক জায়গাতেই খরচসাপেক্ষ। সাধ আর সাধ্যের জাঁতাকলে বেশিরভাগ সময় মধ্যবিত্তকেই পিষতে হয়। তবে বাস্তবকে সিনেমা হিসেবে দেখাতে গেলেও একটু তো চিত্রনাট্যের জোর থাকতে হয়। সেই জোরটা 'দ্য সিগনেচার' ছবিতে পাওয়া গেল না।
ছবি: দ্য সিগনেচার
অভিনয়ে: অনুপম খের, নীনা কুলকর্নি, মহিমা চৌধুরী, অন্নু কাপুর, মনোজ যোশী, রণবীর শোরে প্রমুখ
পরিচালনায়: গজেন্দ্র আহির