shono
Advertisement
Hemanter Aparanna

পরীক্ষাধর্মী ছবি 'হেমন্তের অপরাহ্ন', পড়ুন রিভিউ

অশোক বিশ্বনাথন পরিচালিত 'হেমন্তের অপরাহ্ন' কেমন হল?
Published By: Sandipta BhanjaPosted: 07:53 PM Jul 13, 2024Updated: 07:53 PM Jul 13, 2024

নির্মল ধর: পরিচালক অশোক বিশ্বনাথনকে এই মুহূর্তে বাংলা সিনেমার 'বেলা বালাজ' বলাটা বোধহয় অত্যুক্তি হবে না! কে ছিলেন বেলা বালাজ? জাতে হাঙ্গেরিয়ান ইহুদি। পেশায় ফিল্ম থিওরিস্ট। তিনিই সিনেমা তৈরির প্রথম বর্নপরিচয়টি লেখেন- দি ফিল্ম থিওরি। ক্লোজ আপ, মিড ক্লোজ শট-সহ ফিল্ম সম্পাদনার খুঁটিনাটির তিনিই প্রবক্তা। আইজেন্সটিয়েনের 'মন্তাজ' থিওরির পূর্বেই বেলা সিনেমা ব্যাকরণের অ-আ-ক-খ বর্ণের প্রায় উদ্ভাবক বলা যায়। আজকের সিনেমা ভাষার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বেলা বালাজ! আজকের সিনেমায় যে টাইম-স্পেস ও পেস নিয়ে নানান চর্চা চলে, তার আবিষ্কর্তা বলা যেতে পারে তাঁকে। আমাদের পরিচিত অশোক বিশ্বনাথন আত্মিক ভাবেই বেলা বালাজের ভাবানুসারি।

Advertisement

প্রায় তিরিশ বছর আগে 'শূন্য থেকে শুরু' দিয়ে তাঁর পরিচালক জীবনেরও শুরু। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার জিতেছিল সেই ছবি এবং অশোকের সিনেমার মধ্যে সাধারণভাবে নিটোল কোনও গল্প থাকে না। তাঁর ছবির ন্যারেটিভ স্ট্রাকচারেও বহুলাংশে আপাতভাবে এলোমেলো ভাব মনে হয়, কিন্তু সেই বিক্ষিপ্ততার
মধ্যেই ধীরে ধীরে তৈরি হতে থাকে এক অন্য ন্যারেটিভ। হ্যাঁ, এই নতুন ছবি 'হেমন্তের অপরাহ্ন'তেও তাঁর সেই নিজস্ব স্টাইলের কোনও পরিবর্তন ঘটেনি।

মফঃস্বল শহরের একটি ছোট্ট নাট্যদল আধুনিক ভাবনায় একটি বিদেশী নাটক মঞ্চায়িত করবে বলে অবসৃত বয়স্ক এক বিপত্নীক সুধীনবাবুকে তাদের দলে নিয়ে আসে। অনভিজ্ঞ মানুষটি কীভাবে দলের ভিন্ন বয়সি পাপিয়া (অনুষা), রাজেশ (ঋতব্রত) নাটকের পরিচালক বিশ্বজিৎদের (অশোক নিজে) সঙ্গে মিশে যায়, সেটা কাহিনীর একটা দিক। অন্যদিকে রয়েছে সুধীনের মৃতা স্ত্রীর (বিদিপ্তা) রহস্যজনক মৃত্যু, নাট্যপরিচালক বিশ্বজিতের সিনেমা পরিচালনার কাজ এবং অকস্মাৎ মহামারী কোভিড এসে সব ভণ্ডুল করে দেওয়ার ঘটনা। অশোক তাঁর পরিচালনার কাজে থিওরিকে প্রাধান্য দিয়েছেন দর্শকের পছন্দ-অপছন্দ বা ভালো লাগা না লাগার তোয়াক্কা না করেই। এসেছে সত্যপ্রিয়র ইউক্রেনবাসী ছেলের কথা, স্ত্রীর নৃত্য ভালোবাসার প্রসঙ্গ এবং আজকের রাজনীতির দেয়ালচিত্রও। এইসব অশোক ক্যামেরার সামনে এনেছেন টুকরো টুকরোভাবে, এলোমেলো চেহারায়। দর্শককে সাজিয়ে নিতে হবে জিগস পাজলের মত কৌশলে।

[আরও পড়ুন: দেড় লাখি আনারকলিতে আঁটসাঁট অন্তঃসত্ত্বা দীপিকা, আম্বানিদের নিশিঠেকে অসুস্থ বোধ করছিলেন!]

একই শট এসেছে বারবার, চেনা চরিত্রে ভিড়ে মিশেছে অচেনা মুখ। অশোকের এই সম্পাদনার কৃতকৌশলে বার বার উঁকি দিয়ে যান বেলা বালাজ। এজন্য দর্শক যদি একঘেয়ে হন, সে দায় তার। সিনেমা শিক্ষিত না হয়ে 'পিওর' সিনেমা দেখার টিকিট না কাটলেই হয়। অশোক সম্ভবত তেমনটাই ভাবেন, সিনেমা করার আগে এবং পরেও। যে কারণে তাঁর ছবি দেখতে দর্শক এল বা কেন এল না, সেটা নিয়ে এতটুকু চিন্তিত নন কোনোদিনই। শিল্পের সাধনায় শিল্পী মগ্ন থাকবেন, দর্শক তার রুচির মতো ছবি দেখবেন - এর বাইরে অশোকের অন্য কোনও ভাবনাই নেই যে! বাস্তব অবাস্তব এর মাঝখানে ঝুলে থেকেও এই ছবির অভিনেতারা কিন্তু তাঁদের কাজে এতটুকুও খামতি রাখেননি। প্রধান চরিত্রে সত্যপ্রিয় মুখোপাধ্যায় কিন্তু তাঁর অসহায় অবস্থাটি সুন্দর ফুটিয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়ে অনুষা বিশ্বনাথন, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় এবং অশোক নিজেও বেশ একটু বাস্তবধর্মী অভিনয়কে প্রাধান্য দিয়েই গল্পটিকে আংশিক চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। শুধু একটাই ধন্দ রয়ে গেল। নৃত্যশিল্পী সোহিনীর চরিত্রটি কি বিদিপ্তার অলটার ইগো?

[আরও পড়ুন: ১৬০ বছরের পুরনো! সোনা-রুপো খচিত শতাব্দী প্রাচীন শাড়ি পরে আম্বানি জলসায় আলিয়া ভাট]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পরিচালক অশোক বিশ্বনাথনকে এই মুহূর্তে বাংলা সিনেমার 'বেলা বালাজ' বলাটা বোধহয় অত্যুক্তি হবে না!
  • প্রায় তিরিশ বছর আগে 'শূন্য থেকে শুরু' দিয়ে তাঁর পরিচালক জীবনেরও শুরু।
Advertisement