সন্দীপ্তা ভঞ্জ: বিয়ের পর সোনাক্ষী সিনহার প্রথম কোনও সিনেমা রিলিজ হল। জি ফাইভ প্ল্যাটফর্মে মুক্তিপ্রাপ্ত 'কাকুদা' কেমন হল ? পড়ুন রিভিউ।
'মুঞ্জিয়া' সিনেমা দিয়ে হরর-কমেডি ঘরানার পরিচালক হিসেবে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। এবার 'কাকুদা' ছবিতে আরও পোক্ত পরিচালক হিসেবে নিজের পরিচয় দিলেন আদিত্য সারপোতদার। রতৌরি নামে এক পাড়া-গাঁয়ের গল্প। যেখানে ৭টা বাজলেই বাইরে থাকা সর্বনেশে। ঘড়িতে সন্ধে ৭.১৫ মানেই ঘরের দুয়ারে খিল এঁটে থাকতে হয় পুরুষদের। তবে বাঁচার উপায় অবশ্য একটা রয়েছে। এই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই একটা করে ছোট দরজা রয়েছে। সেই দরজা বন্ধ দেখলেই আর রক্ষে নেই! কাকুদা এসে সেই বাড়ির পুরুষ মানুষটিকে তেরো দিনের মৃত্যুর নোটিস দিয়ে যায়। তাঁর সঙ্গে পিঠে 'কুঁজ' উপহার। কীভাবে? সেই রহস্য সমাধানের জন্য অবশ্য জি ফাইভে চোখ রাখতে হবে। পুরোটা এই পরিসরে ভাঙলে ট্যুইস্ট বাকি থাকবে না। তবে গল্পের এমন প্লট নিয়েই এগিয়েছে সিনেমা।
যতটা গা ছমছমে ভাব রহস্য, রোমাঞ্চ রয়েছে, ঠিক ততটাই কমেডি। খানিক 'বোকা' বলেও মনে হতে পারে দুঃসাহসীদের কাছে। দেখতে বসে অনেকটা 'ভুলভুলাইয়া' কিংবা 'স্ত্রী' সিনেমার কথা মনে করায়। দুটো বলিউড সিনেমাই দর্শকদের মনে ছাপ ফেলেছিল। যদিও 'কাকুদা' এই দুটো সিনেমার পর্যায়ে ঠিক পৌঁছতে পারেনি, তবে পরিচালকের গল্প বলার ধরণের প্রশংসা এই পরিসরে না করলেই নয়। পাড়া গাঁয়ের অন্ধবিশ্বাস এবং সেটাকে পুঁজি করে পরিচালক আদিত্য খুব নিপুণভাবে গল্প বুনেছেন। ইন্দিরা নামে এক চরিত্রে দেখা যাবে সোনাক্ষী সিনহাকে। তবে ছবিতে কিন্তু তাঁর ডবল রোল। ভাবছেন তো 'স্ত্রী' ছবির সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন? মোটেই নয়! সিনেমা দেখলে তবেই ট্যুইস্টটা ধরতে পারবেন।
[আরও পড়ুন: পরিবারে অঘটন! পোশাক তৈরি করেও আম্বানিদের রিসেপশনে যাচ্ছেন না টোটা]
গ্রামের ত্রাস 'কাকুদা'কে কবজা করতে ইন্দিরা ওরফে সোনাক্ষীই প্রথম এগিয়ে আসে। বিয়ে করতে গিয়েই তাঁর স্বামী সানি কাকুদার খপ্পড়ে পড়ে। চিকিৎসা পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েও স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় ইন্দিরা। তারপরই পরিচয় হয় ভূতপ্রেমী, সিনেমার ভাষায় বলতে গেলে 'ঘোস্ট হান্টার' ভিক্টর ওরফে রীতেশ দেশমুখের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। তারপরই গল্প অন্য মোড় নেয়। সেই গ্রামে অপদস্থ হয়েই প্রতিশোধস্পৃহ হয়ে ওঠে 'কাকুদা'। তাই প্রতি মঙ্গলবার গ্রামের মানুষের সঙ্গে প্রতিশোধ নিতে ফিরে আসে সে। কিছু দৃশ্যে ভৌতিক কর্মকাণ্ডর পাশাপাশি সংলাপও পেটে খিল ধরাবে। ঘোস্ট হান্টারের ভূমিকায় রীতেশের অভিনয় যথাযথ। তবে আলাদা করে মনে ছাপ রাখে না! অন্যদিকে পোক্ত অভিনেতা হিসেবে প্রমাণ রাখলেন সাকিব সালিম। সোনাক্ষীর স্বামীর চরিত্রে কোথাও ভিতু আবার কোথাও বা আবেগপ্রবণ হিসেবে যেখানে যেমন অভিব্যক্তি প্রয়োজন ছিল, সেটা বেশ দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন। দুই বোন গোমতী এবং ইন্দিরার চরিত্রে সোনাক্ষী সিনহাও দারুণ। আরেকটি চরিত্র, যা কিনা সাপোর্টিভ অভিনেতা হিসেবে মন কাড়ল, সেটা হল, সানির বন্ধু কিলবিশের চরিত্রে আসিফ খানের অভিনয়। সিনেমা শেষ হওয়ার পর তাঁর অভিনয় মনে রয়ে যাবে। শেষপাতে উল্লেখ্য, বিঞ্জ ওয়াচ হিসেবে 'কাকুদা' মন্দ নয়। দেখতে বসে একঘেয়ে লাগে না। কোথাও অতিকথন নেই! তবে কাকুদার চরিত্রে স্পেশাল এফেক্ট আরও পোক্ত হলে ভালো লাগত।