চারুবাক: পঞ্চমীর এই দিনটা মিঠুন চক্রবর্তীর জীবনের মাইলফলক হিসেবে থাকবে বলেই বিশ্বাস। একদিকে দাদাসাহেব সম্মান গ্রহণ, অন্যদিকে 'শাস্ত্রী'(Shastri) সিনেমার মুক্তি। নিজের প্রিয় 'বিট্টু' ওরফে সোহম চক্রবর্তীর প্রযোজনায় এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলার 'মহাগুরু'। আর পর্দায় তাঁর প্রথম 'পদক্ষেপ' শটটি দিয়েই পরিচালক পথিকৃৎ বসু বুঝিয়ে দেন লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্রে মিঠুন এখনও একমেবাদ্বিতীয়ম।
জ্যোতিষী পরিমল শাস্ত্রীর এই চরিত্রে তাঁকে ছাড়া যেন আর কাউকে ভাবা যেত না। হাওড়ার চটকলের শ্রমিক হয়ে খেটে খাওয়া মানুষের যন্ত্রণা দেখেছে পরিমল। আন্দোলনও করেছে। এই সামান্য মানুষ কীভাবে অসামান্য জ্যোতিষী হয়ে উঠল, তা পুজোর প্যান্ডেল দেখার অবসরে সিনেমা হলে গিয়ে দেখে নিতেই পারেন।
শুধু জ্যোতিষের কেরামতি নয়, এই সিনেমায় রয়েছে প্রযোজক-অভিনেতা সোহমের (সৈকত) বিজ্ঞানের কেরামতিও। বলা যায়, জ্যোতিষ বনাম বিজ্ঞান। গল্পের মোড় ঘোরায় মাধবের (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়) চরিত্র। তার পর ঘটনার ঘনঘটা। অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট সৈকত 'ভন্ড জ্যোতিষী' শাস্ত্রীর মুখোশ খুলে দিতে চায়। তবে শাস্ত্রীর সহায় তার ভক্তবৃন্দ। রমেনের (রজতাভ) মতো অসৎ ব্যবসায়ী ভক্তকুলও রয়েছে।
যে যুদ্ধের আভাস পরিচালক দিয়েছিলেন, তাতে যেন তিনি অনেকটাই 'সেফ' খেলেছেন। এছবি মিঠুনেরই। তাঁকে মাথায় রেখেই তৈরি চিত্রনাট্য। আর তিনি একাই একশো। অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই মিঠুন এখনও 'তারকা'। সেরা জাতীয় পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। মঙ্গলবার জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চেই পাবেন দাদাসাহেব ফালকে। আবার এই ছবিতে তিনিই তুরুপের তাস। নায়ক-প্রযোজক সোহম তাঁকে সঙ্গত দিয়েছেন। ছবির অন্যতম প্রযোজক সুরিন্দর ফিল্মসও।
অনেকদিন বাদে মিঠুনের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন দেবশ্রী রায়। সুগিন্নি হিসেবে তাঁকে বেশ লাগল। মাধবের চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় রহস্যের আবরণটি বজায় রেখেছেন। সহ-শ্রমিকের চরিত্রে অনির্বাণ চক্রবর্তী চোখে পড়েন। কৌশিক সেন ও রজতাভ দত্তও বেশ ভালো। সৌরসেনী কেবল নিজের ভূমিকা পালন করেছেন।গান এই ছবিতে আছে বটে, কিন্তু সেগুলো শুধুই মজার কথায় ভরপুর, কাজের কাজে লাগেনি। তবে হ্যাঁ, ছবির যেখানে শেষ, সেখান থেকে সিক্যুয়েল করার অবকাশ রয়েছে। তা কী হবে? আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতেই এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।
সিনেমা - শাস্ত্রী
অভিনয়ে - মিঠুন চক্রবর্তী, সোহম চক্রবর্তী, দেবশ্রী রায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, রজতাভ দত্ত
পরিচালনা - পথিকৃৎ বসু