স্টাফ রিপোর্টার: বুধবার বিকালে শহরের পাঁচতারা হোটেলে ছিল আইএফএ'র বার্ষিক সাধারণ সভা। কিন্তু তার আগে দুপুরেই হাই কোর্টের একটি রায় ঘিরে আলোড়ন পড়ে যায় রাজ্য ফুটবল সংস্থায়।
বহুদিন ধরেই আইএফএতে নিয়ম হয়ে রয়েছে, যে কোনও নির্বাচনে সভাপতি, সচিব, সহ-সভাপতি, সহ-সচিব বাছাই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে করেন গভর্নিং বডির সদস্যরা। অথচ রাজ্য ফুটবল সংস্থার অধীনে রয়েছে ৩৩৩টি অনুমোদিত ক্লাব। অথচ যে কোনও রকম নির্বাচনে সবার ভোটদানের ক্ষমতা থাকে না। ভোট দিতে পারেন গভর্নিং বডির মুষ্টিমেয় কিছু সদস্য। বহুদিন ধরে আসা এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে চারটি ক্লাব তালতলা একতা সংঘ, জোড়াবাগান, মানিকতলা এবং চাঁদনি স্পোর্টিং হাই কোর্টে মামলা করেছিল মাননীয় বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের এজলাসে। চারটি ক্লাবের তরফে আবেদন করে বলা হয়, ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে যেখানে ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে সব কটি রাজ্য ফুটবল সংস্থার, সেখানে কেন রাজ্য ফুটবল সংস্থার নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না সবকটি অনুমোদিত ক্লাব? একই নিয়ম চালু রয়েছে সিএবি ও বিওএ-তেও। এই ইস্যুতেই মামলা করা হয় হাই কোর্টে। এদিন তারই রায় জানান মহামান্য বিচারপতি। যার চূড়ান্ত কপি দুপক্ষই হাতে পাবে বৃহস্পতিবার। ফলে এদিন সরকারিভাবে কোনও পক্ষই কোনও মন্তব্য করতে পারছে না। তবে এখনও পর্যন্ত চারটি ক্লাবের আবেদন শুনেছেন বিচারপতি। এরপর আইএফএর বক্তব্য শোনা হবে।
অন্যদিকে আর্থিক ঘাটতি কমালো আইএফএ (IFA)। গতবার আইএফএর এই আর্থিক ঘাটতি ছিল ত্রিশ লক্ষ টাকারও বেশি। এবার সেই ঘাটতি কমে হল ১৮ লক্ষ টাকা। যদিও আইএফ সচিব বলছেন, এই অর্থবর্ষে বাইরে আরও কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে তাদের। যদি সেই টাকা চলে আসে তাহলে এই আর্থিক লোকসানের পরিমাণ আরও কমবে। বুধবার আইএফএর বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন না তিন প্রধানের কোনও কর্তাই। যদিও তিন প্রধানের কর্তাদের এই অনুপস্থিতি নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন আইএফএ চেয়ারম্যান, সভাপতি, সচিবরা।
[আরও পড়ুন: ৯ বছরের দাম্পত্যে ইতি, সংসার ভাঙল আরিফিন শুভ ও অর্পিতার]
সংস্থার সচিব অনির্বাণ দত্ত (Anirban Dutta) বলছেন, “দু’দিন আগেই ছিল মোহনবাগান (Mohun Bagan) দিবস, আর বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) দিবস। তাই দু’প্রধানের কর্তাদের ব্যস্ত থাকাটাই স্বাভাবিক। আর মহামেডান সভাপতির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ থাকলেও উনি খুব একটা আসেন না। তবে এ নিয়ে ভাবার কিছু নেই। বাকি সদস্যরা এসেছেন।” তিন প্রধান যে রাজ্য ফুটবল সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় আসবেন না তা আগে থেকে জানায়নি তারা। এদিনের সভায় ক্লাবেরা সৌজন্য টিকিটের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি করলেও রাজ্য ফুটবল সংস্থার সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখন যুবভারতীতে সিট কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সৌজন্য টিকিটের সংখ্যাও আমাদের কমাতে হয়েছে। এটা ক্লাবগুলোকে দেওয়া একটা সম্মান মাত্র।” এবারই প্রথম শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় রাজ্য ফুটবল সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভা। এই সভায় বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব অনুমদিত হয়। গত এক বছরের আইএফএ-র কার্যকলাপ বর্ণনা করা হয় এই সভায়।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে ফের একাধিক দপ্তরে আমলা বদল, শিক্ষাসচিবের পদ থেকে সরলেন মণীশ জৈন]
আইএফএ-র পদাধিকারীরা ছাড়াও সকল ক্লাব ও জেলার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এই সভায়। দার্জিলিং জেলা থেকে এক প্রতিনিধি দল এসেছিলেন। তারা পার্বত্য অঞ্চলের ফুটবল উন্নয়নের জন্য সাহায্য চাইল আইএফএ-র কাছে। এই মুহূর্তে দার্জিলিং সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ১৭টি ফুটবল অ্যাকাডেমি চালু থাকলেও প্রচারের অভাবে ফুটবলাররা উঠে আসছে না বলে দাবি দার্জিলিং ফুটবল কর্তাদের।