ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার থমকে থাকা কাজ শুরু করতে এবার মাঠে নামলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। প্রায় তিনশো জন কর্মী, অধ্যাপকদের নিয়ে রবিবার সকালে শান্তিনিকেতন থানা সংলগ্ন মাঠে চলে আসেন। উপাচার্যের নির্দেশে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু হয়। পাঁচিল তোলার তীব্র প্রতিবাদ জানান আশ্রমিক থেকে নাগরিক সমাজ। এদিকে করোনাবিধি অমান্য করে থানার সামনে জমায়েত করায় শান্তিনিকেতন থানায় উপাচার্যের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়।
পৌষ মেলা মাঠ ঘেরা নিয়ে উত্তপ্ত শান্তিনিকেতন। শনিবার পাঁচিল দেওয়ার কাজ বন্ধ করে দেয় বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি। এর পরেই সক্রিয় হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধেয় অধ্যাপক এবং কর্মীদের মেসেজ পাঠান রেজিস্টার। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে আসার নির্দেশ দেন। সকাল ৯টা নাগাদ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্ব বিশাল মিছিল করে প্রায় তিনশো জন অধ্যাপক, কর্মী শান্তিনিকেতন থানা সংলগ্ন মেলার মাঠে উপস্থিত হয়। শান্তিনিকেতন থানার সামনের রাস্তায় যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশ্বভারতীর বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা চারদিক ঘিরে ফেলে, ব্যাপক নিরাপত্তার ঘোরটোপে ছিলেন উপাচার্য। এর পরে বিদ্যাভবন অঙ্গন থেকে মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার জন্য জেসিবি দিয়ে গর্ত করার কাজ শুরু হয়।
[আরও পড়ুন : গায়ের রং কালো! গৃহবধূকে পিটিয়ে ‘খুন’ করল শ্বশুরবাড়ির লোকজন]
এই খবর পেতেই বোলপুর এবং শান্তিনিকেতনের মানুষ ভিড় জমান মেলার মাঠে। শান্তিনিকেতন বাঁচাও কমিটি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে শৈলেন মিশ্র, আশ্রমিক শুভলক্ষ্মী গোস্বামী উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে এলে উপাচার্য কথা বলতে অস্বীকার করেন। এদিকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, পরিবেশ আদালত মেলার মাঠ ঘেরার নির্দেশ দিয়েছে তাই ঘেরা হচ্ছে। শৈলেন মিশ্র অভিযোগ করেন, “বোলপুরে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ কর্মীদের একটা বড় অংশ করোনা আক্রান্ত। আর সেই থানার সামনে সামাজিক দূরত্ব না মেনে ৩০০ এর বেশি কর্মী, অধ্যাপকদের নিয়ে জমায়েত করেন উপাচার্য।” আশ্রমিক বৃদ্ধা শুভলক্ষী গোস্বামী বলেন, “শান্তিনিকেতনকে পাঁচিল দিয়ে ঘেরার চক্রান্ত চলছে। আমরা তার প্রতিবাদ করছি। প্রয়োজনে আন্দোলন হবে”।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচিল দেওয়ার কাজ সম্পূর্ন করতে শান্তিনিকেতন থানার সামনে মেলার মাঠে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস তৈরি করা হবে। আগামী ২৭ দিনের মধ্যে পাঁচিলের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে। কাজের উপর নজরদারি চালাতে থানা সংলগ্ন রাস্তার ধারে প্রচুর আলো এবং নজরদারি ক্যামেরা লাগানো হবে। ক্যাম্প অফিস থেকে তা নিয়ন্ত্রন করা হবে। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর মুখপাত্র অনির্বান সরকার কোনও মন্তব্য করেননি।
[আরও পড়ুন : করোনা রোগীর সৎকারে খরচ ১১৫০ টাকা! শ্মশান কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তিতে সমালোচনার ঝড়]
The post করোনাবিধি উড়িয়ে পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দিতে ৩০০ জন কর্মী নিয়ে জমায়েত বিশ্বভারতীর উপাচার্যর appeared first on Sangbad Pratidin.