অর্ণব আইচ: বড়দিনের আগেই কলকাতার উপকণ্ঠ থেকে উদ্ধার প্রচুর বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার নিউটাউনের সাপুরজির কাছে একটি বাসস্ট্যান্ডে তল্লাশি চালান রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকরা। মহম্মদ জামিল ও মহম্মদ সাকিল নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দু’জন বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এগুলির সাহায্যে কোনও নাশকতার ছক কষা হত কি না, গোয়েন্দা পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।
কয়েকমাস আগে এই নিউটাউনের সাপুরজির কাছেই একটি বহুতল আবাসনের ফ্ল্যাটে সঙ্গীকে নিয়ে লুকিয়ে ছিল পাঞ্জাবের কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল সিং ভুল্লার। ওই ঘটনার পর থেকে সতর্ক ছিলেন রাজ্যের গোয়েন্দারা। সম্প্রতি রাজ্যের এসটিএফের কাছে খবর আসে যে, সাপুরজির উপর দিয়ে ভাঙড়গামী একটি বাস অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে যাবে। সেই সূত্র ধরেই পাথরঘাটায় বাসটিকে থামিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালায়। দুই যাত্রীর কাছ থেকে একটি কার্বাইন, দু’টি ম্যাগাজিন, একটি ম্যাগাজিন-সহ একটি নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার হয়।
[আরও পড়ুন: ফের কলকাতা পুরসভার মেয়র হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম, ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের]
এ ছাড়াও কমলা ও সাদা রঙের মোট ১৩ কিলো পাউডারের মতো গুঁড়ো উদ্ধার হয়। রাসায়নিক পরীক্ষা করে জানা যায়, সেগুলি আরসেনিক সালফাইড ও পটাসিয়াম নাইট্রেট। এই দু’টি রাসায়নিকই বারুদ ও বিস্ফোরক তৈরির কাজে লাগে। ওই অস্ত্র ও বিস্ফোরক বিহারের ভাগলপুর থেকে নিয়ে আসছিল দুই পাচারকারী জামিল ও সাকিল। এই ব্যাপারে বিধাননগর কমিশনারেটের টেকনোসিটি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাঁরা জানায়, বাজি তৈরির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই রাসায়নিক। কিন্তু সঙ্গে অস্ত্র পাওয়ার পর গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, তাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের কোনও দুষ্কৃতীকেই এগুলি সরবরাহ করতে যাচ্ছিল। এই বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক দিয়ে বিস্ফোরক বা বোমা তৈরি হত। কার্বাইনের মতো স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করেন।
সাধারণ দুষ্কৃতীরা এই অস্ত্র ব্যবহার করে না। তাই বছরের শুরু অথবা সাধারণতন্ত্র দিবসে এই অস্ত্র ও বিস্ফোরকের সাহায্য কোনও নাশকতার ছক হত কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। জামিল ও সাকিলের মোবাইলের সূত্র ধরে কয়েকটি নম্বর ও নামের হদিশ মিলেছে। যে ব্যক্তিকে তারা এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র সরবরাহ করত, তার সন্ধানে তল্লাশি চালানো শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।