সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের চট্টগ্রামে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হল পাঁচজনের। চট্টগ্রামের বাঁশখালি উপজেলায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেতন ও ভাতার দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ সেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে গুলি চালায়। তাতেই অন্তত ৫ শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আরও প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। আজ শনিবার দুপুর ১২টার নাগাদ এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর বাঁশখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সওগাত ফেরদৌস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গুরুতর আহত অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নিহতরা হলেন আহমেদ রেজা (১৮), রনি (২২), শুভ (২৪) এবং মোহম্মদ রাহাত (২২)। জখম আরও কয়েক জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে হাবিবুল্লাহ (১৯) নামের আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বাঁশখালি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিউর রহমান মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) হুমায়ুন কবির বিক্ষোভের ঘটনায় শ্রমিকদের মৃত্যুর খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। এদিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক শীলব্রত বড়ুয়া জানিয়েছেন, বাঁশখালি এলাকা থেকে ১০ থেকে ১২ জন গুলিবিদ্ধ শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাঁর দাবি, বেশ কয়েকজন শ্রমিকের জখম বেশ গুরুতর। তাই মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: দেগঙ্গায় শূন্যে গুলি কেন্দ্রীয় বাহিনীর, স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার স্বয়ং কমিশনের]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরেই বেতন-ভাতার দাবিতে সমস্যা চলছিল ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এদিন সকালে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। তার পরই গুলি চলে।
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ওই কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজন সমাবেশের ডাক দেয়। ওই সমাবেশেও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ক্ষত শুকনোর আগেই ফের পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হল।